Header Border

ঢাকা, শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ৩৬.৯৬°সে

করোনার টিকা তৈরির কাজ চলছে তিন পদ্ধতিতে

সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট :করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ও মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৭১ হাজার ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভাইরাসটিকে রুখতে বর্তমানে দেশে দেশে চলছে গবেষণা। কোভিড ১৯-এর বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা ও ওষুধ আবিষ্কারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।

কিন্তু কী পদ্ধতিতে চলছে এই টিকা তৈরির চেষ্টা বা কবে আসবে সেই বহু কাক্সিক্ষত প্রতিষেধকটি এ নিয়ে কৌতূহল আছে সাধারণ মানুষের মনে। যার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।

advertisement

এক খবরে তারা জানিয়েছে, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে আলাদা তিন পদ্ধতি অনুসরণ করে টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। কেউ ইনঅ্যাক্টিভ ভ্যাকসিন, কেউ লাইভ ভ্যাকসিন আবার কেউ চেষ্টা করছে ডিএনএ ভ্যাকসিন তৈরির।

লাইভ ভ্যাকসিন হলো অনেকটা বিষ দিয়ে বিষক্ষয় পদ্ধতি। এটি তৈরির ক্ষেত্রে মূলত রোগের জন্য দায়ী ভাইরাসকেই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সেগুলো শরীরের ক্ষতি করতে পারে না, অর্থাৎ সেগুলোর রোগসৃষ্টির ক্ষমতা শূন্য থাকে। কিন্তু এগুলো মানবদেহের কোষের ভেতর বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম। ফলে ভাইরাসের বংশবিস্তার শুরু হলে মানবদেহে প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং অ্যান্টিবডি তৈরির মাধ্যমে ভাইরাস ধ্বংস করে।

advertisement

এভাবেই মানুষের শরীরে বিশেষ ওই রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হয় এবং পরবর্তীতে ওই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে শরীরে থাকা অ্যান্টিবডি সহজেই সেগুলোকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করে ফেলতে সক্ষম হয়। এই পদ্ধতি ব্যবহার করেই গুটিবসন্তের টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া আফ্রিকার দেশেগুলোয় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া ইবোলার বিরুদ্ধেও প্রথম অনুমোদন পাওয়া টিকাও একই পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে।

দ্বিতীয় পদ্ধতি ইনঅ্যাক্টিভ ভ্যাকসিনে সুনির্দিষ্ট ভাইরাল প্রোটিন বা নিষ্ক্রিয় ভাইরাস থাকে। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এগুলোকে হত্যা করবে। যেহেতু শরীরে নিষ্ক্রিয় বা মৃত ভাইরাস প্রবেশ করানো হয় তাই সেগুলো বংশবিস্তার করতে পারে না। কিন্তু রোগের বিস্তার ঘটাতে না পারলেও অনুপ্রবেশকারী হিসেবে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সেগুলোকে চিহ্নিত করে এবং সেগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে। ইনফ্লুয়েঞ্জা, পোলিও, হুপিংকাশি, হেপাটাইটিস বি ও ধনুষ্টংকারের টিকায় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।

তৃতীয় পদ্ধতি হলো জিনভিত্তিক ভ্যাকসিন। এটি অনেকটা ইনঅ্যাক্টিভ ভ্যাকসিনের মতো। তবে বাড়তি সুবিধা হচ্ছে, ওষুধ কোম্পানিগুলো ইনঅ্যাক্টিভ ভ্যাকসিনের চেয়ে জিনভিত্তিক ভ্যাকসিন দ্রুত উৎপদান করতে পারে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকা আবিষ্কার হলে দ্রুততম সময়ে সারাবিশ্বে তা ছড়িয়ে দিতে কোটি কোটি ডোজ উৎপাদন করতে হবে।

জিনভিত্তিক ভ্যাকসিন করোনা ভাইাসের ডিএনএ বা আরএনএ থেকে একদম সঠিক তথ্য নিয়ে তৈরি করা যাবে। এই টিকা শরীরে প্রবেশের পর সেটা নির্বিষ ভাইরাল প্রোটিন তৈরি করবে এবং মানবদেহের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা সেগুলোকে নির্মূল করতে অ্যান্টিবডি তৈরি করবে।

এই তিন পদ্ধতি ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা নিজেদের মতো করে কোভিড ১৯-এর টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। গবেষণাগারে পরীক্ষা এমনকি মানবদেহে পরীক্ষা পর্যন্ত শুরু করেছেন কেউ কেউ। কিন্তু তার পরও এখনো ঢের সময় প্রয়োজন। মানবদেহে পরীক্ষার পর প্রথমেই সেটা নিরাপদ কিনা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা দেখতে হবে।

তার পর দেখতে হবে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে কিনা এবং সেটা ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা। এসব প্রশ্নের উত্তর মিললে তবেই বলা হবে যে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কার করা গেছে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২১ সালের আগে করোনা ভাইরাসের টিকা বাজারে আসার সম্ভাবনা নেই।

অবশ্য যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা টিকাটি গত এপ্রিলের শেষ দিকে মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়েছে। যার ফলাফল জানা যাবে আসছে মধ্য জুনে। তবে এর মধ্যেই অক্সফোর্ড এটা সফলভাবে কার্যকর ধরে নিয়ে উৎপাদনে যেতে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিও করে ফেলেছে।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া এমনকি ভারতেও চলছে টিকা নিয়ে গবেষণার কাজ। ইতালির একটি প্রতিষ্ঠান তো প্রথম কার্যকর টিকা আবিষ্কারের ঘোষণাও দিয়েছে। তবে এগুলোর কোনোটিই এখনো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি পায়নি।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

ইরানি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাবে ইসরাইল !
‘পৃথিবীর কোনো শক্তিই আমাদের বিরত রাখতে পারবে না’-নেতানিয়াহু
বাংলাদেশী নাবিকদের হত্যার হুমকির জলদস্যুদের
রমজানে গাজায় ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশ
ওষুধের দামে নাভিশ্বাস
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে যে আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী

আরও খবর