সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট: প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসছে মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। তবে আগামীকাল মঙ্গলবার ঝড়টির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে এর ভয়বহতা সম্পর্কে ধারণা করা যাবে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ অনুসারে ঘূর্ণিঝড়টি ১২ কিংবা ১৩ মে নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ থেকে বরিশাল পর্যন্ত যে কোনো এলাকা অতিক্রম করতে পারে।
‘আম্ফান’-এর উৎপত্তিস্থল ও গতিপথ নিয়ে আবহাওয়াবিদদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও সেটি যে যথেষ্ট শক্তিশালী এবং পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূল আঘাত হানবে, তা নিয়ে সবাই একমত। তবে ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে দুটো পর্যবেক্ষণ রয়েছে। প্রথম পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আঘাত হানতে পারে। অপর পর্যবেক্ষণে উড়িষ্যায় আঘাত হানার কথা বলা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ অবশ্য ৫ মের পর গতিপথ কোনদিকে পরিবর্তন করে সেদিকেই চেয়ে আছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা।
প্রথম পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের বেশ কিছু এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। সেটি দেশের উপকূলীয় পটুয়াখালী, বরিশাল, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীতে ক্যাটাগরি-৪ মাত্রার শক্তি নিয়ে আঘাত করতে পারে। মধ্য বঙ্গোপসাগরে এসে শক্তি সঞ্চয় করতে পারে এবং যতই উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হবে ততই শক্তি অর্জন করতে থাকবে। এটি উড়িষ্যা উপকূলের কাছাকাছিও সর্বোচ্চ শক্তি অর্জন করতে পারে- এমন পর্যবেক্ষণও রয়েছে।
অন্যদিকে আরেকটি পর্যবেক্ষণ বলছে, আন্দামান দীপপুঞ্জের কাছে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড়টি খুব দ্রুত শক্তি বাড়িয়ে উত্তর পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ভারতের পূর্ব উপককূল ঘেঁষে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। পরে সেটি পশ্চিমবঙ্গে ক্যাটাগরি-৪ মাত্রার শক্তি নিয়ে আঘাত হানতে পারে। আবার এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধি করতে করতে মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে যেতে পারে। বুধবারের মধ্যে পরিণত হতে পারে স্পষ্ট ঘূর্ণিঝড়ে। এর পর সামান্য কিছুটা পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর দিকে বেঁকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে (ক্যাটাগরি-৩ প্লাস) পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ নামকরণ করেছে থাইল্যান্ড। ২০১৯ সালের ঘূর্ণিঝড় তালিকার শেষ নাম এটি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে গতকাল বৃষ্টি ঝড়েছে চট্টগ্রামসহ দক্ষিণাঞ্চলে। আগামী দুই দিন এ বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে জানা যায়। তবে এ মৌসুমে পাহাড় ধসের শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বজ্রসহ বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া থাকবে দুদিন। এটি মৌসুমি বৃষ্টি। অন্যদিকে আগামী ৫ মে (আগামীকাল) ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার পর এটি কোন পথ থেকে কীভাবে অতিক্রম করবে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।’