Header Border

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ৪২.৫৮°সে

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরে জড়িত মাদরাসার দুই শিক্ষক ও ছাত্র গ্রেফতার

সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্টঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন মাদ্রাসার শিক্ষক ও দুজন ছাত্র। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবী-গ্রেফতার দুই মাদরাসাছাত্র জানিয়েছেন-ইসলামি বক্তা হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছেন।
এদিকে নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশে কোনো রকম অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেব না। এ ছাড়া ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও কার্যকলাপের কারণে মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরী গংদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে গতকাল রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন কনেছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মুহিদ উদ্দীন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
গ্রেফতার চারজন হলেন- কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক ও জেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে মো. আল আমিন (২৭), শিক্ষক ও পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকার আজিজুল মণ্ডলের ছেলে মো. ইফসুফ আলী (২৬) এবং একই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্র ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিংপুর গ্রামের সমসের মৃধার ছেলে মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠন (১৯) ও জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকার মো. সামছুল আলমের ছেলে মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)।
সংবাদ সম্মেলনে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি বলেন, স্পর্শকাতর এই ঘটনা ঘটার পর সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশের সব ইউনিটকে কাজে লাগানো হয়। ২৩ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ হামলায় অংশ নেয়া দুইজন এবং তাদের মদদ দেয়া দুই শিক্ষককে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। এ সময় তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, দেশের বিরুদ্ধে এবং দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদের ওপর যে বা যারা আঘাত হানবে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ ঘটনার পেছনে কারা আছে, কারা ইন্ধন দিয়েছে, নেপথ্যে কেউ জড়িত রয়েছে কি-না পুলিশ সেসব বিষয়ও খতিয়ে দেখছে।
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা জানান, সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে পুলিশ জানায়, অভিযান পরিচালনাকালে কুষ্টিয়া মডেল থানার অধীন জুগিয়া পশ্চিমপাড়া মাদরাসা ইবনে মাসউদের (রা.) এর ছাত্র আব্দুল্লাহ (১৫) এবং আব্দুর রহমানকে (১৭) আটকপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ ও ভিডিও ফুটেজ দেখালে তারা তথ্য দেয় যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাঙচুরকারী দুইজনকে তারা জানে। তারা একই মাদরাসার হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আবু বক্কর ওরফে মিঠুন এবং একই মাদরাসার ছাত্র সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদকে তাদের নিজ নিজ গ্রাম থেকে গতকাল  গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ফয়জুল করিমের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানান।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শনিবার রাত ২টা ৫ মিনিটের সময় যখন মাদরাসার সবাই ঘুমিয়ে পড়েন, তখন তারা দুজনে গোপনে মাদরাসা থেকে বের হয়ে পায়ে হেঁটে শাহীন কাউন্সিলরের বাসার সামনে দিয়ে কানাবিল মোড় পার হন। এরপর কমলাপুর হয়ে মজমপুর রেললাইন ধরে ফজলুল উলুম মাদরাসার পাশ দিয়ে পাঁচ রাস্তার মোড়ে ভাস্কর্যের কাছে আসেন। তারপর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত বাঁশের মই দিয়ে ওপরে উঠে নাহিদুল ইসলামের ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে আবু বকর মিঠুন ও সবুজ ইসলাম দুজন মিলে রাত ২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ২টা ১৩ মিনিট পর্যন্তু নির্মাণাধীন ভাস্কর্যটির বিভিন্ন জায়গায় হাতুড়ি দিয়ে জোরে আঘাত করেন। ভাস্কর্যটির ক্ষতিসাধন করে পুনরায় পায়ে হেঁটে মাদরাসায় গিয়ে সঙ্গোপনে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে মাদরাসার শিক্ষক আল আমিন ও ইউসুফ আলীকে তারা ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিষয়টি জানালে দুজনই তাদেরকে মাদরাসা থেকে দ্রুত পালিয়ে যেতে বলেন। পরে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হেফাজতে ইসলামের নেতাদের নাম উল্লেখ না করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, কোনো রকম অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেব না। যদি কেউ মনে করেন, তারাই অনেক শক্তিশালী হয়ে গেছেন, এটা তাদের ভুল ধারণা। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করতে দেয়া হবে না বলে হেফাজতের নেতারা হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক তিনি তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন। আমি ও আমরা যারা শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত আছি, আমরা এটুকু বলতে পারি- কোনো ধরনের অরাজকতা বাংলাদেশে করতে দেব না। অরাজকতা বলেন, ভাঙচুর বলেন, কোনো রকম অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেব না। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ মনে করেন, তারাই অনেক শক্তিশালী হয়ে গেছেন, এটা তাদের ধারণার ভুল। তিনি বলেন, আমি গতকাল ফেসবুকে দেখেছি একটা ছোট ছেলে বলছে যে, মুক্তিযুদ্ধে কত শহীদ হয়েছে, তার চেয়ে বেশি রক্ত হেফাজতের তারা দিয়েছে। এই যে মিথ্যাচার, এই যে বিভ্রান্তি অল্প বয়সের ছেলের মাথার মধ্যে দিচ্ছে এটা তারা জেনেশুনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দিচ্ছে।’
স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের ওই ঘটনার (লংমার্চ করে ঢাকা অবরোধ) পর আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিলাম, কয়জন শহীদ হয়েছেন, কোন মাদরাসার, কোন বাড়ির তা যেন আমাদের এসে জানায়, আমরা কিন্তু সেই লিস্ট এখনও পাইনি। এটাই হলো বাস্তবতা।’ হেফাজতের কিছু নেতার উসকানিমূলক বক্তব্য এই প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে। হেফাজতের শীর্ষ নেতারা হুকুমের আসামী হবেন কিনা- একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘হেফাজতের নেতা হবেন কিনা, কে হবেন সেটা তদন্তের ব্যাপার, তদন্তে যার নাম বেরিয়ে আসবে তার নামেই মামলা হবে, এটা স্পষ্ট। উসকানিদাতা হিসেবে একজনের নাম আসছে বলেছেন, তিনি কে- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি তো বলেছি তদন্তের পর আপনাদের বিস্তারিত জানাব।
সরকার এখন দোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়টি রিভিউ করবে কিনা- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার রিভিউ করবে কিনা এটা সরকারের বিষয়। আমাদের বিষয় হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেব। বঙ্গবন্ধু হলেন জাতির পিতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তার স্মৃতি ধরে রাখা হবে না, এটা তো বাংলাদেশের কোনো মানুষই মেনে নিতে পারবে না। আপনি যদি ফিরে তাকান মুসলিম সভ্যতার যুগে- আলবেরুনি বলেন, ইবনে বতুতা বলেন, তাদের ভাস্কর্য তো বিভিন্ন জায়গায় শোভা পাচ্ছে। সেগুলো তো কেউ ভাঙছে না। আমরা সেখানে কথা বলছি। ভাস্কর্য মানে পূজা নয়। তাকে ধরে রাখা, তার যে অবদান দেশের প্রতি জাতির প্রতি, সেটাকে হৃদয়ে গেঁথে রাখা। আমরা তো অনেক ইসলামিক দেশে ভাস্কর্য দেখেছি। মুদ্রার মধ্যে সৌদির বাদশাহের ছবি রয়েছে, কায়েদে আজমের ছবি রয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের ছবি রয়েছে। ওটা আমরা পকেটে নিয়ে ঘুরছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানে একটা ভাস্কর্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম সাক্ষী হয়ে থাকবে, সেখানে আমরা ধ্বংস করতে যাচ্ছি। এটা হলো মনমানসিকতার ব্যাপার। আমরা তো এটার পূজা করছি না। স্মৃতিটাকে ধরে রাখতে চাচ্ছি। দেশে আরও বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য রয়েছে, সেগুলোর নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা নেয়া হবে- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এগুলো যারা ভাঙবে তারা তো নিশ্চয়ই না জেনে মুর্খতার পরিচয় দেবে। নিরাপত্তা আমরা অবশ্যই দেখব। সরকার কি হেফাজতের বিষয়ে নমনীয়- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কারও প্রতি নমনীয় নই। যেটাই আমাদের সামনে আসছে সেটাই আমরা দেখছি। আমরা জনগণকে নিয়েই চলি, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই কাজ করি। কাজেই জনগণ যেটা চায় সেটাই প্রতিফলিত হবে, সরকার সেটাই করবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও কার্যকলাপের কারণে মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরী গংদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর এ আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৩ নভেম্বর খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে না দাঁড়ালে তিনি আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটাবেন এবং ওই ভাস্কর্য ছুড়ে ফেলবেন। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী গত ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক মাহফিলে বলেছেন, কোনও ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হবে। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য গত কয়েকদিন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়ে আসছে। তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের রেশ ধরে তাদের অনুসারীরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান স্বীকৃত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন ভাস্কর্য গত ৪ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে ভাস্কর্যের ডান হাত ও পুরো মুখমণ্ডলের অংশবিশেষ ভেঙে ফেলেছে।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান স্বীকৃত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হানা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল। মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরীদের প্রত্যক্ষ মদতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হেনেছে দুর্বৃত্তরা। যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং তাদের এরূপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং কার্যকলাপ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিরাগ ও ঘৃণা সৃষ্টির অশুভ অভিপ্রায়ে করা হয়েছে।  তাই উক্ত আবেদনে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৯৬ ধারার বিধান মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আমলে নেওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে সরকার কর্তৃক অনুমোদনের প্রয়োজন থাকায় মাওলানা মামুনুল হক গংয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার জন্য আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদের অনুকূলে অনুমোদন প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসন সভা কক্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিরাপত্তাজনিত বিষয় নিয়ে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. ফরহাদ হোসেন ও গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইলসামকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সভায় পুলিশ, র‌্যাব, এনএসআই এবং জেলার শীর্ষ রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাতের কোনও এক সময় ভাস্কর্যের মুখ ও হাতের অংশ ভেঙে ফেলে তারা। ২০০৩ সালে শহরে সৌন্দর্য বর্ধনের অংশ হিসেবে এখানে জাতীয় ফুল শাপলার একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করে কুষ্টিয়া পৌরসভা। এরপর থেকে এটি শাপলা চত্বর হিসেবে পরিচিত। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সম্প্রতি শাপলার ভাস্কর্য ভেঙে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ শুরু করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

এ বছর বেশি শীত অনুভূত হওয়ার কারণ কী ?
শাহজালালে ৮ কেজি স্বর্ণসহ এয়ারক্রাফট মেকানিক আটক
‘অনৈতিক’ প্রস্তাবের অভিযোগ নায়িকার, আব্দুল্লাহ জহির বাবুর অস্বীকার
অনেক পরিচালক আমাকে হোটেল-রেস্টুরেন্টে ডাকে : জেবা
আফগানিস্তানের বিপক্ষে কঠিন সময় আসছে: পাপন
হিরো আলম ঈদের পর দুটি সিনেমা মুক্তি পাবে বলে জানা গেছে।

আরও খবর