Header Border

ঢাকা, বুধবার, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ২৬.৯৬°সে

ফের হ্যাট্রিক মমতার

সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের আশা ভঙ্গ করে তৃতীয় বার মসনদ নিশ্চিত করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গে দলটি ২১৫টি কেন্দ্রে চূড়ান্ত বিজয়ের পথে। প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি ৭৫টি কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে। আর বাম জোট মাত্র একটি কেন্দ্রে এগিয়ে।

তৃণমূল প্রায় ৫০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বিজেপি পেয়েছে ৩৬ শতাংশ। কংগ্রেস আড়াই ও সিপিএম সাড়ে চার শতাংশ ভোট পেয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে এবার আট দফায় ভোট হয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতাদের পাশাপাশি গোটা সংঘ পরিবার অনেকটাই নিশ্চিত ছিল জয় নিয়ে। অনেক হিসাব-নিকাশ, অনেক পরিকল্পনা সত্বেও কাঙ্ক্ষিত ফলের কাছাকাছিও যেতে পারেনি পদ্মের ফুল।

রবিবার সকাল আটটা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। গণনাকৃত ভোটের প্রায় ৫০ শতাংশ পেয়েছে তৃণমূল। অতীতে আর কোনো নির্বাচনেই এত ভোট পাওয়ার রেকর্ড নেই দলটির।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৪৪.৯১ শতাংশ ভোট পেয়ে ২৯৪ আসনের মধ্যে ২১১টিতে জিতেছিল তৃণমূল। তার আগে ২০১১ সালের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৩৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে ১৮৪টি আসন পেয়েছিল।

বিজেপি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রদত্ত ভোটের ৪০ দশমিক ৩ শতংশ ভোট পেলেও এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তাদের ভোট কমে গেছে।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভা নির্বাচনের হাইভোল্টেজ কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। এই আসনে নির্বাচন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার এক সময়ের সহযোগী শুভেন্দু অধিকারী। সবার নজর ছিল এই আসনে কে জিতবেন। সকাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের এই কেন্দ্রে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। এগিয়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় তিনি জিতেছেন। কিন্তু সন্ধ্যার পর হিসাব বদলে যায়। নির্বাচন কমিশন বিজেপির প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে বিজয়ী ঘোষণা করে।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, নন্দীগ্রামে জিতেছেন শুভেন্দু অধিকারীই। নন্দীগ্রামে এক লাখ নয় হাজার ৬৭৩ ভোট পেয়েছেন শুভেন্দু, আর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক লাখ সাত হাজার ৯৩৭ ভোট পেয়েছেন বলে খবরে বলা হয়।

ফল উল্টানোর পেছনে নির্বাচন কমিশনের কারচুপি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, ‘কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। গণনায় কারচুপি করা হয়েছে। জয়ী ঘোষণা করার পরও ফল বদলানো হয়েছে। সেই কারচুপি কী, আমি খুঁজে বের করব। আদালতে যাব। তিনি আরও বলেন, ‘নন্দীগ্রামের মানুষের রায় মাথা পেতে নিলাম। ভালোই হলো, আমাকে রোজ ওত দূরে যেতে হবে না।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে নির্বাচন কমিশনের ব্যাপক সমালোচনা করেন মমতা। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিজেপি বিরোধী দলগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে সুপ্রিম কোর্টে যাবার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বাম দুর্গে ভরাডুবি

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ২৯২ আসনে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস জোট মাত্র একটি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

এই ফলাফল দেখে বোঝা কঠিন, ১৯৭৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ শাসন করেছে বামফ্রন্ট জোট। ১৯৭৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ১০টি বিধানসভা নির্বাচনে ২০১১ পর্যন্ত বামফ্রন্ট কখনো ৪০ শতাংশের কম ভোট পায়নি। অথচ এখন তাদের ভোটের সংখ্যা শতাংশে খুবই নগণ্য।

১৯৭৭ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সাতটি নির্বাচনে বামফ্রন্ট ২৯৪ আসনের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় কমবেশি ২০০ আসন পেয়েছে। ১৯৮৭ সালে সর্বোচ্চ ২৫১টি পেয়েছিল। ২০১১ থেকে তাদের বিপর্যয়ের শুরু ৬২ আসন পাওয়া দিয়ে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে পায় ৩২টি।

মোদির ধন্যবাদ

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরও রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন,‘বাংলার ভাই, বোনেদের ধন্যবাদ। ওরা আমাদের দলকে আশীর্বাদ করেছেন। রাজ্যে বিজেপি-র শক্তি বৃদ্ধির কথা মনে করিয়ে দিয়ে মোদি লেখেন, ‘এর আগে বাংলায় আমাদের খুব সামান্য উপস্থিতি ছিল। এবার সেটা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।’

বাংলার মানুষের জন্য তারা কাজ করবেন জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘বিজেপি রাজ্যবাসীর সেবা করে যাবে।’ দলের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষে তিনি লেখেন, ‘নির্বাচনে সবাই যেভাবে একজোট হয়ে লড়েছেন, তার জন্য দলের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

সময় সংবাদ লাইভ।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

ইরানি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাবে ইসরাইল !
‘পৃথিবীর কোনো শক্তিই আমাদের বিরত রাখতে পারবে না’-নেতানিয়াহু
বাংলাদেশী নাবিকদের হত্যার হুমকির জলদস্যুদের
রমজানে গাজায় ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশ
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে যে আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী
বার্মা থেকে মিয়ানমার : যেভাবে সঙ্কটের শুরু, এখন যা ঘটছে

আরও খবর