Header Border

ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ৩৬.৯৬°সে

ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছি -প্রধানমন্ত্রী

সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্টঃ  গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ১১ ও ২১ স্কোয়াড্রনকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  বলেছেন,  জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছি। তাই আমাদের লক্ষ্য আর্থ-সামাজিক উন্নতি করা।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ১১ ও ২১ স্কোয়াড্রনকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলেন। যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে হবে। বাংলাদেশের অবস্থা যেন আরও দৃঢ় হয় আমরা সেই লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস যদিও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিকভাবে স্থবির করে দিয়েছে। তারপরেও আমরা আমাদের সীমিত শক্তি নিয়ে অর্থনীতির গতিকে সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি দেশকে এগিয়ে নিতে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করেছি। পাশাপাশি আমরা অবকাঠামো উন্নয়নে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ। এই বদ্বীপের মানুষের উপযুক্ত বসবাসের জন্য আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘২০৫১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দিয়েছি। তারই ভিত্তিতে বর্তমানে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। পর্যায়ক্রমে প্রেক্ষিত পরিকল্পনার মাধ্যমে অবকাঠামোর উন্নয়ন করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমানবাহিনী তার মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি সব সময় জাতি গঠনের কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। বর্তমানে করোনাভাইরাস সারাবিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। সেই সময়ে বিমানবাহিনী যথেষ্ট দায়িত্ব পালন করেছে। করোনাভাইরাসজনিত সৃষ্ট পরিবেশে বিমানবাহিনী হেলিকপ্টার যোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে করোনা আক্রান্ত অনেক রোগীকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, অনেকের জীবন রক্ষা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বিমানবাহিনীর এই কার্যক্রম বর্তমানেও কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। তারা পরিবহন বিমানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী ও যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বিমানবাহিনী।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘লেবাননের সংগঠিত ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও পরিবহন বিভাগ থেকে মানবিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। এবং ওখানে অনেক বাংলাদেশের লোককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। অন্যান্য দেশে যখন কোনো দুর্যোগ দেখা দিয়েছে, আমরা যখন সেখানে রিলিফ সামগ্রী পাঠিয়েছি বা চিকিৎসার জন্য ডাক্তার পাঠিয়েছি বিমানবাহিনী সেক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে।’ এ সময় বিমানবাহিনী জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষায় আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী
দেশেই যুদ্ধবিমান তৈরির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা আকাক্সক্ষা আছে, বাংলাদেশেই আমরা আমাদের যুদ্ধবিমান তৈরি করতে পারবো। সেজন্য এর ওপর গবেষণা করা এবং নিজেরা যাতে আকাশসীমা রক্ষা করতে পারি সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু করেছে।  বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারও নির্মাণ হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দেশেই যুদ্ধবিমান তৈরির জন্য এর ওপর গবেষণা করা যাবে। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। ইনশআল্লাহ আমরা এ ব্যাপারে সাফল্য অর্জন করবো বলে বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন,  ‘কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে উৎকর্ষ আনতে বিমান বাহিনী অ্যাকাডেমির জন্য এই ঘাঁটিতে নির্মাণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’। মহাকাশ গবেষণা, দেশের বিমান বাহিনী এবং বেসামরিক বিমানকে দ্রুত এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে আমরা প্রতিষ্ঠা করছি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। যেটা লালমনিরহাটে হবে। এসব কার্যক্রম বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।’
বিমান সেনাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১১ স্কোয়াড্রনকে বৈমানিকদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানে এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে দেশের আকাশসীমা প্রতিরক্ষায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আজ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক ‘জাতীয় পতাকা’ প্রদান করা হলো। এই সম্মান ও গৌরব অর্জন করায় আমি ১১ স্কোয়াড্রন এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। কর্মদক্ষতা, পেশাদারিত্ব এবং দেশসেবার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেলেন, তার মর্যাদা রক্ষার জন্য এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ও আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যখন দায়িত্ব পালন করেন, আমি মনে করি সব সময় যেকোনও ত্যাগ স্বীকারে আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।’
তিনি বলেন, ২১ স্কোয়াড্রন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সম্মুখ সারির নিবেদিত আক্রমণাত্মক স্কোয়াড্রন। এই স্কোয়াড্রন এফটি-৬ এবং এ-৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এই স্কোয়াড্রন আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলের সর্বোচ্চ শেষ সীমানায় পর্যবেক্ষণ মিশন পরিচালনা করে, যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
বিমান বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছেন সম্মান ও মর্যাদা। এটা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

তাপদাহে হিট অ্যালার্টের মেয়াদ আরও বাড়াল আবহাওয়া অফিস
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়াল সরকার
উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা
সব বিরোধী দলের উপজেলা নির্বাচন বর্জন
৯৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ আবেদন শুরু, যেভাবে করবেন আবেদন
৯৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ আবেদন শুরু, যেভাবে করবেন আবেদন

আরও খবর