Header Border

ঢাকা, শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ২৮.৯৬°সে

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরিঘাটে ঘরমুখি মানুষের ঢল

*সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ঢল নেমেছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার নৌপথে। কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না যাত্রীদের বাড়ি যাওয়া।

রোববার (৯ মে) বিজিবি চেকপোস্ট সত্ত্বেও উপেক্ষা করে দক্ষীণবঙ্গগামী হাজার হাজার মানুষ ঘাটে আসছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ভিড় আরও বাড়ছে।

আজ শিমুলিয়া ঘাটে কয়েক হাজার যাত্রীকে ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে সীমিত আকারে তিনটি ফেরি জরুরি ভিত্তিতে আসা যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে।

এদিন সকাল আটটায় কুঞ্জলতা ও সাড়ে দশটায় ফেরি শাহপরাণ নামের দুটি ফেরি শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আর শিমুলিয়া থেকে সকাল আটটায় ফরিদপুর নামের একটি ছোট ফেরি সকাল সাড়ে নয়টায় বাংলাবাজার ঘাটে এসে পৌঁছায়। এতে কমপক্ষে দেড় হাজার যাত্রী ছিল।

ভোর থেকে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় বিজিবি মোতায়েন করা হয় শিমুলিয়া ঘাট এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে। বিজিবি সদর দপ্তর পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দিনের বেলায় ফেরি বন্ধ। শুধু জরুরি পরিষেবার কিছু যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। সেই ফেরিতেই লোকজন স্রোতের মতো উঠে যাচ্ছে।

মাওয়া নৌ-পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ জেএম সিরাজুল কবির সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, ভোররাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ। ফেরি বন্ধের নির্দেশনার পরও প্রচুর যাত্রী শিমুলিয়া ঘাটে আসছে। ফেরিতে উঠতে না পেরে অনেকে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ইঞ্জিন চালিত ছোট ছোট ট্রলারে করে পদ্মা পার হওয়ার চেষ্টা করে। জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স জড়ো হওয়ায় সকাল পৌনে ১০টার দিকে ফেরি শাহপরান ছেড়ে যায়।

বিআইডব্লিউটিসি বলছে, ঈদ উপলক্ষে গত শুক্রবার থেকে এই নৌপথে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। এতে বাধ্য হয়ে গতকাল শনিবার দুপুরের পর থেকে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপার করতে হয়।

করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যেও মানুষ নাড়ির টানে বাড়ি ছুটছেন, কোনো বাধাই মানছেন না। বহরের ১৬ ফেরির মধ্যে জরুরি পরিষেবায় ২-৩ টি ফেরি চলাচল করছে।

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রী রনি বলেন, ‘একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ঢাকা এসেছিলাম। মধ্যরাত হয়ে গেলো এখনো ঢাকায় প্রবেশ করতে পারেনি। ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকলেও ফেরিতে উঠতে পারছি না।’

আনারস ব্যবসায়ী আদনান বলেন, ‘রাত ১২টায় ট্রাক ঘাটে নিয়ে আসছি। ফেরি ঘাটে আছে, কিন্তু আমাদের ওঠানো হচ্ছে না। আনারস ট্রাকেই পচে যাচ্ছে। ঢাকায় না যেতে পারলে তিন লাখ টাকার সব আনারস নষ্ট হয়ে যাবে।’

এদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে রোববার সকাল থেকে সাধারণ পরিবহনবাহী ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপও কম দেখা গেছে। তবে দুটি ফেরি দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী যান পারাপার করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে যাত্রীদের তেমন কোনো চাপ নেই। গত ২ দিনে দৌলতদিয়া ঘাটে ঈদে ঘরমুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় থাকলেও রোববার সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঘাট এলাকাতে তেমন যাত্রী ও যানবাহন দেখা যায়নি। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সব কয়টি ফেরি চলাচল শুরু করায় চাপ কমতে শুরু করেছে এ ফেরি ঘাটে।

এদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে সন্ধ্যার পর থেকে লাশবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীরাও ফেরি পার হচ্ছেন। নদী পারাপার অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় ভোগান্তি কমতে শুরু করেছে পণ্যবাহী ট্রাকের চালকদের। তবে এখনও ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে শতাধিক যানবাহন। শৌচাগার ও খাবার হোটেলের অভাবে নারী ও শিশু যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে বেশি।

হাসিব নামে একজন বলেন, ‘পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় এখনও শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করা যায় মধ্য রাতের মধ্যেই সব যানবাহন পারাপার করতে পারবো এবং ঘাট এলাকা ফাঁকা হয়ে যাবে।’

পাটুরিয়ায় যাত্রী পারাপারের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। ভোগান্তি এড়াতে যাত্রীদের পাটুরিয়ায় না আসার পরামর্শ দেন তিনি।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে সারাদিন ঘাট এলাকায় প্রায় ৩০০ পণ্যবাহী ট্রাক আটকে থাকে। সন্ধ্যার পার ফেরি চলাচল শুরু করায় গাড়ির চাপ অনেকাংশে কমে গেছে। এখন যাত্রীর কোনো ভিড় নেই ঘাটে।

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের আসা ঠেকাতে এরই মধ্যে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। জেলার মোট তিনটি জায়গায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানিয়েছে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে ১৬টি ফেরি দিয়ে লাশবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হচ্ছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জের প্রবেশপথ বারোবাড়ীয়া ও শিবালয়ের টেপরা এবং হেমায়েতপুর-সিংগাইর আঞ্চলিক সড়কের ধল্লা এলাকায় বিজিবির তিন প্লাটুন সদস্য দায়িত্ব পালন করছে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
থাইল্যান্ড গেলেন প্রধানমন্ত্রী
তাপদাহে হিট অ্যালার্টের মেয়াদ আরও বাড়াল আবহাওয়া অফিস
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়াল সরকার
উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা
সব বিরোধী দলের উপজেলা নির্বাচন বর্জন

আরও খবর