সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে করোনা সংক্রমণের কারনে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অনার্স প্রথম বর্ষ ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অনার্স জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা গুলোই খারাপ ছিল। মাত্র দুই মাসে ক্যাম্পাস, নিজ ডিপার্টমেন্ট , শিক্ষকদের চিনে উঠেছে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান।অনলাইন ক্লাসের কথা বলা হলেও সকল শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের আওতায় আনা সম্ভব হয় নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সকল শিক্ষার্থীর কাছে স্মার্ট ফোন থাকলেও ফোন গুলোতে সব অ্যাপ সাপোর্ট করে না অথবা ডিভাইস সংগ্রহ করলে তাতে নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত জটিলতা থাকে।করোনার কারনে টিউশন হারিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে চলে গিয়েছে অনেকে এরকম নানা ধরনের বিড়ম্বনার স্বীকার শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ হোম ইকোনোমিক্স এর ক্লোথিং এ্যান্ড টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী আদিবা তাসনিম বলেন,
আসলে ইন্টারমিডিয়েট এর পর প্রত্যেক শিক্ষার্থীই হাজারো সপ্ন নিয়ে ভর্তি হয় বিভিন্ন ইউনির্ভাসিটিতে।এই সময় টা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে একটা শিক্ষার্থীর জীবনে তা নিশ্চয়ই আমাদের কারো অজানা নয়!কতশত সপ্ন সামনে আগানোর!একটা গুছানো ক্যারিয়ারের!একটা সুন্দর ভবিষ্যতের!
সবকিছুই এখন অনিশ্চিত অদূর!পরিস্থিতির জন্য কেউ দায়ী নয় এটা যেমন সত্য,শুরুতেই সপ্নশিখড় উপরে ফেলার বাস্তবতা এর থেকেও ভয়ানক সত্য!একজন অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে টানা দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়, সেটা খুব ভালোভাবে অনুভব করছি।করোনার মহামারী তে সংগঠিত দেশের অর্থনীতির বিপর্যয় উতরিয়ে উঠতে পারলেও স্নাতকমুখী শিক্ষার্থীদের
সপ্ন বিপর্যয়ের ঘাটতিপূরন প্রায় অসম্ভব।
যাদের হাতেই দেশ গঠনের কঠিন দায়িত্ব বিদ্যমান, তাদেরই এখন হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে।
আর এর জন্য যতটা মানসিক ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে এটা প্রত্যেকটা সপ্নধারী শিক্ষার্থীর সপ্নগুলোকে আরও দূরে ঠেলে দিচ্ছে।
সবদিক দিয়ে নিজের অনিশ্চিত ক্যারিয়ারের ডিপ্রেশন কাটিয়ে ওঠা সত্যিই আমার জন্যও এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
খুব তারাতারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার একটা সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা হলে বেচে যেত আমার মত হাজারো শিক্ষার্থীর সপ্ন,মুক্তি পেত ডিপ্রেশন থেকে হাজারো জীবন।
সরকারী বাঙলা কলেজের অনার্স ২০১৯-২০শিক্ষাবর্ষের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী তাআ’উয তাসমিয়াহ্ বলেন
একই ক্লাসে একাধিক বছর অধ্যায়নরত আছি। পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বলতে কিছু থাকছে না এবং মেধা চর্চায় দেখা দিয়েছে নিম্নগামীতা।
একই ক্লাসে একাধিক বছর থাকার কারনে দেখা যাবে যে পরবর্তীতে আমাদের চাকরির বয়স থাকবে না।আর আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের আছি, তারা করোনার জন্য কোনো জব ও করতে পারছি না।আর বিশেষ করে আমাদের কিছুদিন পরে পরিক্ষা হবে হবে এ ভয়ে ক্যারিয়ারের জন্য কিছু করা হয়ে উঠছে না।
মানসিক ডিপ্রেশনে তো আমরা প্রায় শিক্ষার্থী ভুগছি।
কি করবো?আমাদের ভবিষ্যত কি? এখন না হচ্ছে পড়াশোনা, না হচ্ছে কোনো চাকরি করা। বাসায় থেকে দেখা যায় বাজে দিকে আকৃষ্ট হচ্ছি বেশি।
সর্বপরি বলতে গেলে, করোনার জন্য আমরা শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যাই ভুগছি। আমাদের পড়াশোনা, ক্যারিয়ার,মন- মানসিকতার সব কিছুরই দিন দিন অবনতি হচ্ছে। দিন দিন ডিপ্রেশন বেড়ে যাচ্ছে। এ থেকে দ্রুতই মুক্তি চাই।
কবি নজরুল সরকারী কলেজর ১৯-২০ সেশনের প্রানিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো.রাসেল সিকদার বলেন,ক্লাস শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই কিছু বুঝে ওঠার আগে করোনা সংক্রমণের জন্য দীর্ঘ ছুটি পার করছি। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান বলে অনার্স শেষ করার আগেই বেকারত্ব চেপে বসেছে।একদিকে পড়াশোনাও হচ্ছে না আবার অন্যদিকে মানসিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে কারন সময় তো আর থেমে থাকছে না।বয়স বাড়ার সাথে সাথে পরিবারের প্রত্যাশাও বাড়ছে।
সরকারি বিএম কলেজের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো.কাওসার মল্লিক বলেন করোনা মহামারী সময় আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে লেখাপড়া থেকে পিছনে থাকতে হচ্ছে।নিয়মিত লেখাপড়া না করার কারনে মনোযোগ নিয়ে যাচ্ছে হতাশায়।
আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, সময় সংবাদ লাইভ।