Header Border

ঢাকা, রবিবার, ১০ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল) ২৫.৬৯°সে
শিরোনাম
চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ, মাংস ও সবজি প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা নিয়ে সেনা প্রধানের সাক্ষাৎ সেনাবাহিনীর এই অভিযানে একজন অপরাধীও যেন বাদ না যায় ! সেনাবাহিনীর এই অভিযানে একজন অপরাধীও যেন বাদ না যায় ! অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও সময় দিতে চায় বিশ্ব সম্প্রদায় ! ফিলিস্তিনকে সমর্থন ও ইসরাইলকে বয়কটের আহ্বান এরদোগানের আজ ঢাকায় সমাবেশ,৯ মহানগরে শোভাযাত্রা;নতুন বার্তা দেবেন তারেক রহমান মোজাম্মেল-শাহরিয়ার-শ্যামল ৭ দিনের রিমান্ডে ডিসি নিয়োগ নিয়ে আজও বিক্ষোভ সচিবালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কাছে ৯টি দফা দাবি জানিয়েছে নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর ট্রাস্ট’।

করোনাকালে ৬ কোটি নতুন দরিদ্রের চোখে-মুখে কেবল হতাশা

সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ করোনা মহামারিতে সরকার ঘোষিত এটি দ্বিতীয় বাজেট। নতুন অর্থবছর ২০২১-২২ এর বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট ১ লাখ ৭ জহাজার ৬১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে অর্থমন্ত্রী। কিন্তু করোনা মহামারিতে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ৩৫ লাখ থেকে সাড়ে ৬ কোটি মানুষ। তাদের জন্যে নতুন এই বাজেটে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন এই জনগোষ্ঠী।

বেসরকারি হিসেবে, করোনাকালে ৩৫ লাখ থেকে সাড়ে ৬ কোটি মানুষ নতুন করে বেকার হয়েছেন। যাদের নিম্নমধ্যবিত্ত বলা হয়, তাদের বেশিরভাগ করোনা মহামারিতে চাকরি অথবা কাজ হারিয়ে, বেতন কমে দরিদ্র অবস্থানে এসে পড়েছেন। তাদের কারো কাছে চেয়ে কিংবা হাত পেতে নেয়ার অভ্যাস নেই। তারা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে অনেকে পরিবার গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন, কেউ বা ছোট-খাটো ব্যবসা শুরু করেছেন, কিংবা পরিবারের সবাই মিলে কাজে নেমেছেন। পাশাপাশি সন্তানের স্কুল বন্ধ হয়েছে, পুষ্টিকর কিংবা ভালো খাবারে টান পড়েছে। চাকরি হারা, বেতন কমে যাওয়া, সঞ্চয় ভেঙ্গে খাওয়া, সেই সব শহরে নিম্ন আয়ের মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়-

মাহবুবা আক্তার ও রাসেল আহমেদের ৫ সদস্যের পরিবার। থাকেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। মাহবুবা আক্তার বলেন, করোনাকালে আমার স্বামী চাকরি চলে গেছে। এখন সঞ্চয় ভেঙ্গে খেতে হচ্ছে। গত এক বছরে কোথায় চাকরি হয়নি তার। এখন বাধ্য হয়ে সঞ্চয় ভাঙ্গিয়ে ছোটখাটো ব্যবসা করার চেষ্টা করছেন। বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ, কিন্তু তাদের স্কুলের বেতন প্রতিমাসে ঠিকই দিতে হচ্ছে। স্কুলের বেতন কিন্তু কমেনি। এছাড়া বাসাভাড়া কমেনি। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়তো গ্রামে চলে যেতে হবে। অথবা সন্তানদের স্কুল বন্ধ করে দিতে হবে। এ বাজেট ধনীদের জন্যে আমাদের জন্যে নয়। তিনি বলেন, আমাদের কথা মাথায় রেখে বাজেট হলে বাড়িভাড়া কমতো, স্কুলের বেতন মওকুফ হতো, নিত্যপণ্যের দাম কমতো।

শ্যামলী -৩ নম্বর সড়কের একজন সিকিউরিটি গার্ড হায়দার আলী বলেন, আগে আমার খাবার খরচ রেখে বাকি টাকা গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতাম। সেখানে মা-বাবা, বড় ও এক সন্তান আছে। যা টাকা পাঠাতাম, তা দিয়ে সংসার মোটামুটি চলতো। ছেলের স্কুলের খরচ চলতো। কিন্তু এখন আমার খাবার খরচ বাবদ টাকায় বেশি লাগে। যে কারণে বাড়িতে কম টাকা পাঠাতে হয়। আর যে টাকা গ্রামে পরিবারের কাছে পাঠাই, তা দিয়েও তাদের চলে না। কারণ গ্রামেও সবকিছুর দাম বেড়েছে। ছেলের স্কুলে বেতন না দেওয়ার কারণে নাম কাটা গেছে, আবার স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করাতে পারবো কি-না জানি না। আমার বেতন আগের চেয়ে করোনাকালে ২ হাজার টাকা কমেছে।

একজন মুদি দোকানদার আজহার মিয়া বলেন, সামান্য আলু, চাল, পেয়াজের দামই বেশি। যা খেয়ে গরীব বাঁচে, তারা সেসব কিনতে পারছে না। এই দোকানী বলেন, আমার দোকানের বিস্কুট, চিপস চানাচুর যেভাবে কাস্টমার কিনতো, এখন সেভাবে তা বিক্রি হয় না। যে পরিবারটি একবারে ১০ কেজি চাল কিনতো, তারা এখন ভেঙ্গে ভেঙ্গে ৫ কেজি করে কেনে। কম দামের চালগুলো কেনে। এই দোকানী বলেন, আমি নিজেও বাসাভাড়া দোকান ভাড়া দিয়ে চলি। এখন কোন মাসে এই টাকা দোকান থেকে আসে, কখনো আসে না। বাজারে আম-লিচু উঠেছে, কিন্তু সন্তানদের কিনে খাওয়াতে পারি না। আমাদের জন্যে বাজেটে কি থাকে? সেটা আমরা জানি না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এ সরকার বড় লোকের, তারা বাজেট নিয়ে ভাবুক।

সিঙ্গেল মাদার রিয়া আফরোজ বলেন, করোনাকালে আমার ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের স্কুল বন্ধ গয়ে গেছে। কারণ আমার আমি কুলায় উঠতে পারছি না। ঘরভাড়া বেশি, খাওয়া খরচ বেশি। এরমধ্যে বার বার চাকরি চলে যায়। জমানো টাকা ভাঙ্গিয়ে চলছি। আমাদের জন্যে সরকারের কোন বরাদ্দ নাই। তাহলে এই বাজেট দিয়ে আমাদের কি হবে! আমরা জানি, কাজ করলে খেয়ে পড়ে বাচতে পারবো, আর কাজ না থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।

২০২১-২২ অর্থ বছরে সামাজিক নিরাপত্তাখাতে সরকার প্রতিবছর বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়ে চলছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে অর্থমন্ত্রী। যা মোট বাজেটের ১৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং জিডিপির ৩ দশমিক ১১ শতাংশ। ভাতার আওতা বেড়েছে, দরিদ্র প্রবীণ, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির। গত অর্থবছরে ১১২ উপজেলায় বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী দরিদ্র প্রবীণ ব্যক্তিকে শতভাগ ‘বয়স্ক ভাতার’ আওতায় আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫০ উপজেলায় সম্প্রসারণ করে ৮ লাখ জন নতুন উপকারভোগী যোগ হবে নতুন অর্থবছরে। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত ১৫০ উপজেলায় ৪ লাখ ২৫ হাজার জন নতুন উপকারভোগী যোগ হবে। সর্বশেষ প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ অনুযায়ী অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার জনে বৃদ্ধি পাবে। ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরে এ বাবদ ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে।

সময় সংবাদ লাইভ।

 

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ, মাংস ও সবজি
সাত ব্যাংকেই ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ সালমান এফ রহমানের
কর ও ভ্যাটের চাপ আরও বাড়বে
চাহিদা অনুযায়ী অর্থ দিতে পারছে না ব্যাংক
দুবাইয়ে গোপন সম্পদের পাহাড়, তালিকায় ৩৯৪ বাংলাদেশি
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়াল সরকার

আরও খবর