সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্টঃ করোনাভাইরাস নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে গোটা বিশ্ব। সংক্রমণ শুরু প্রায় এক বছর পর টিকার দেখা মিলেছে। তবে করোনার টিকা এখনও গণহারে বাজারে আসেনি। এর মধ্যে ভাইরাসটির নতুন ধরন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট গতকাল রোববার এক খবরে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ইতিমধ্যে ৩০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়েছে। করোনার উৎপত্তিস্থল চীনেও পাওয়া গেছে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস। করোনার নতুন ধরন সবশেষ শনাক্ত হয়েছে ভিয়েতনামে। শনিবার (০২ জানুয়ারি) দেশটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরা এক নারীর দেহে নতুন ধরনের ভাইরাসটি শনাক্ত করেছে ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
১. যুক্তরাষ্ট্র, ২. যুক্তরাজ্য, ৩. তুরস্ক, ৪. অস্ট্রেলিয়া, ৫. বেলজিয়াম, ৬. ব্রাজিল, ৭. কানাডা, ৮. চিলি, ৯. চীন, ১০. ডেনমার্ক, ১১. ফিনল্যান্ড, ১২. ফ্রান্স, ১৩. জার্মানি, ১৪. আইল্যান্ড, ১৫. আইসল্যান্ড, ১৬. ভারত, ১৭. আয়ারল্যান্ড, ১৮. ইসরায়েল, ১৯. ইটালি, ২০. জাপান, ২১. জর্ডান, ২২. লেবানন, ২৩. মালটা, ২৪. নেদারল্যান্ড, ২৫. নরওয়ে, ২৬. পাকিস্তান, ২৭. পর্তুগাল, ২৮. সিঙ্গাপুর, ২৯. দক্ষিণ কোরিয়া, ৩০. স্পেন, ৩১. সুইডেন, ৩২, সুইজারল্যান্ড ৩৩. সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ৩৪. তাইওয়ান।
এদিকে, ব্রিটেনে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন ধরনের সঙ্গে মিল আছে এমন জিনোমের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান এবং শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) জিনোমিক গবেষণাগার ল্যাবে জিনোমের উপস্থিতি ধরা পড়ে।
বিসিএসআইআর জানায়, গত নভেম্বরের শুরুতে বিসিএসআইআর করোনাভাইরাসের পাঁচটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে। তাতে পাওয়া মিউটেশনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের মিল রয়েছে।
এ নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বিসিএসআইআর। ভাইরাসটি বহনকারীদের পরিচয় এবং ঠিকানা জানার চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। গত ২৩ ডিসেম্বর বিকেলেও ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন রেফারেল সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিসিএসআইআর।
এ বিষয়ে বিসিএসআইআরের জীবতাত্ত্বিক গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘নভেম্বরের শুরুতে দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের মিউটেশন পাওয়া গিয়েছিল। পাঁচটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করার সময় নতুন এই মিউটেশন আমাদের নজরে আসে। আন্তর্জাতিকভাবে যেখানে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য জমা দেওয়া হয়, সেখানে দেখেছি যে রাশিয়া এবং পেরুতে এর আগে একই ধরনের মিউটেশন দেখা গেছে। তবে ওই দেশ দুটিতে শুধু একজন করে ব্যক্তির নমুনায় এই মিউটেশন পরিলক্ষিত হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে আমাদের অনেক পরে গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে এ ধরনের মিউটেশন ধরা পড়েছে। যুক্তরাজ্যে প্রাপ্ত নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসে একটি মিউটেশন ঘটেছে স্পাইক প্রোটিনে, যাকে বলা হচ্ছে পি-৬৮১ এইচ মিউটেশন। বাংলাদেশে প্রাপ্ত মিউটেশনটি হলো পি-৬৮১-আর।
গণমাধ্যমে সেলিম খান আরও বলেন, যুক্তরাজ্য আর বাংলাদেশের মিউটেশনের পজিশন এক। সেটাই শঙ্কার বিষয়। এ জন্য এখন আমাদের জিনোম সিকোয়েন্সিয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভাইরাসটির বৈশিষ্ট্য আরও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে বলেও তিনি আশা করেন।