*সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ‘লকডাউন’ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২৯ এপ্রিল থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ তা কার্যকর থাকবে। এই সময় অফিস-আদালত ও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে শপিংমল রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। হোটেল-রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে আগের নিয়ম বহাল থাকবে। বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে আগের যে সিদ্ধান্ত ছিল, সেটাই থাকবে। গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে চলমান বিধি-নিষেধ বা ‘লকডাউন’ আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন হতে পারে।
তিনি আরও জানান, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধে চলমান বিধি-নিষেধ আরো এক সপ্তাহ বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসময় দোকান-পাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত চালু থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, করোনা সংক্রমণে মৃত্যু বাড়ার কারণে ২৯ এপ্রিল থেকে আগামী ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত নতুন করে বিধি-নিষেধ দেয়া হবে।
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হলে অফিস-আদালত, গণপরিবহন এবং দোকানপাট ও শপিংমলমল বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক নির্দেশনায় ২৫ এপ্রিল থেকে দোকানপাট এবং শপিংমল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা পর্যন্ত লকডাউন ছিল। তবে গণপরিবহন, মার্কেট খোলা রেখে এই লকডাউন ছিল অনেকটাই অকার্যকর। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন, দোকানপাট এবং মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে লকডাউন দেয়া হয়।
গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতষ্ঠান বন্ধ এবং ২৬ মার্চ থেকে সব অফিস-আদালতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই সময়ে গণপরিবহনও বন্ধ রাখা হয়েছিল। ৬৬ দিন পর সাধারণ ছুটি শেষ হলেও একবছর গড়িয়ে এখনও বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছে। সব কিছু খোলা থাকার পরেও এভাবে বিধিনিষেধ বৃদ্ধি করে কি লাভ হবে, জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘’ভারতে করোনাভাইরাসের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা আরও কিছুদিন বিধিনিষেধ বহাল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই পরামর্শ আমলে নিয়ে সরকার আরও এক সপ্তাহ বিধিনিষেধ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশে চলাচলে বিধিনিষেধ থাকার পরেও রোববার থেকে শপিংমল খুলে দেয়া হয়েছে, অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল চালু করা হয়েছে। শুধুমাত্র গণপরিবহন, দূরপাল্লার যানবাহন ও নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে গত বছরের মার্চের ৮ তারিখে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিলো স্বাস্থ্য বিভাগ।
এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর বেশ কিছুদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা কমতে কমতে এক পর্যায়ে তিনশোর ঘরে নেমে এসেছিল।
বাংলাদেশে গত ১০ দিনের মধ্যে অন্তত পাঁচদিন প্রতিদিন একশো জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, মোট মৃত্যু ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার রোগী শনাক্ত হচ্ছে, এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট শনাক্ত হলেন ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬২৮ জন।