*সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ স্বামী আবদুল বাকেরকে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশে দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) রিয়াদ হোসেন।’ মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে জেলা শহরের একটি পত্রিকার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন পিআইও অফিসের সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আবদুল বাকেরের স্ত্রী শারমিন আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শারমিন আক্তার বলেন, পিআইও রিয়াদ কমলনগরে দায়িত্ব পাওয়ার পর একদিন বাকেরের সঙ্গে দেখা করতে কার্যালয়ে যাই। কার্যালয়ের পেছনে সরকারি কোয়ার্টারে থাকি আমরা। ওই দিন দেখার পর থেকে পিআইও বিভিন্ন সময়ে আমাকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় আমার স্বামীকে সদর উপজেলা কার্যালয়ে বদলি করা হয়। ১১ মাস পর ফের আমার স্বামী কমলনগরে যোগ দেন। কিন্তু পিআইও তাকে কাজ বুঝিয়ে দেননি। সোমবার ১৭ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে পিআইও রিয়াদ আমার স্বামীসহ চার জনকে পুলিশের সহযোগিতায় থানায় আটকে রাখেন। সন্ধ্যায় বাসায় এসে পিআইও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে রিয়াদ আমাকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। মূলত কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মিথ্যা অভিযোগে আমার স্বামীকে থানায় আটকে রেখেছেন পিআইও।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, থানা থেকে বাকেরসহ চার জনকে পিআইও ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু বাকেরের স্ত্রী শারমিন বলেছেন, আমার স্বামীকে খুঁজে পাচ্ছি না।
জানা গেছে, রিয়াদ রামগতি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তিনি কমলনগর উপজেলার শূন্যপদে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন।
বাকের কমলনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর। তার সঙ্গে একই কার্যালয়ে কর্মরত মেহেদি হাসান ও আলমগীরসহ চার জনকে পুলিশে দেন পিআইও। তার কার্যালয় থেকে ১৭ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ তুলে তাদের পুলিশে দেওয়া হয়। তবে একজন প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয়ে নগদ ১৭ লাখ টাকা কীভাবে এলো এবং তা কোন খাতের এসব বিষয় নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার ও ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ, জুন ক্লোজিং উপলক্ষে নেওয়া ঘুষের টাকা উধাও হয়েছে।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, পিআইও নিজেই সোমবার রাতে তার চার কর্মচারীকে থানায় নিয়ে এসেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে পিআইও তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন। কার্যালয় থেকে কিছু টাকা চুরির হওয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন চার কর্মচারীকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিনি। তবে কত টাকা তা জানাননি। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগও দেননি পিআইও।
শারমিন আক্তার বলেন, সারা রাত আমার স্বামী থানায় ছিল। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত তার খোঁজ পাইনি। এখন কোথায় আছে জানি না।
জানতে চাইলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাসেল ইকবাল বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাকে জানায়নি। তবে আমি অন্য মাধ্যমে শুনেছি।
এ ব্যাপারে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি পিআইও কার্যালয়ের নিজস্ব ব্যাপার। শুনেছি চার জনকে পুলিশে দিয়েছেন পিআইও। তবে কি কারণে দিয়েছেন, আমি বিস্তারিত জানি না। পিআইও আমাকে এ ব্যাপারে কিছু জানাননি।
এ ব্যাপারে জানতে পিআইও রিয়াদ হোসেনের দুটি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি। এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া মেলেনি। ঘটনার পর থেকে সাংবাদিকদের ফোন ধরছেন না তিনি।