সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট:গতকয়েক বছর ধরে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কমছে। এ বছর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম। কিন্তু চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের দাম অনেক বেশি। অর্থাৎ কোরবানিদাতা ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ন্যায্য দাম না পেলেও ঠিকই লাভবান হচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা।
২০১৩ সালে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ২০১৪ সালে কমিয়ে গরুর চামড়া ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পরপর দুই বছর প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ২০ থেকে ২৫ টাকায় নির্ধারণ করে দেওয়া ছিল। তবে ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে টানা তিনবছর প্রতি বর্গফুট গরু চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
২০১৭ সালে ছাগলের প্রতিবর্গফুট চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকায় নির্ধারণ করা হলেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তা আরও কমিয়ে ১৮ থেকে ২০ টাকা করা হয়। সর্বশেষ গত ২৬ জুলাই ২০২০ সালের কোরবানি ঈদের জন্য প্রতিবর্গফুট গরুর চামড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ছাগলের ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ গত সাত বছরে গরুর চামড়া দাম কমেছে ৫৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। একই সময়ে ছাগলের চামড়ার দাম কমেছে ৭৪ শতাংশ। ২০১৩ সালে ছাগলের চামড়া যে দামে পাওয়া যেত, ২০২০ সালে এসে গরুর চামড়া তার চেয়েও কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের দাম প্রতিবছরই বাড়ছে। চামড়ার জুতা, ব্যাগ, বেল্ট সবকিছুরই দাম বেশি। রফিক নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি এপেক্সের এক জোড়া স্যান্ডেল কিনতে গিয়ে দেখেন দাম এক হাজার সাতশ টাকা। আরেক ব্র্যান্ড বাটারও একই অবস্থা।
সানজিদা নামে এক নারী সময় সংবাদ লাইভকে জানান চামড়ার একটি ব্যাগ কিনতে গতবছরের চেয়ে ৪০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনেছেন। একই মানের একটি ব্যাগ গত বছর যে দামে কিনেছিলেন তিনি গেল ফেব্রুয়ারিতে বাড়তি দামেই তেমন একটি ব্যাগ কিনেছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা আর আগের মতো নেই। পাশাপাশি ট্যানারিগুলোতে আগের বছরের চামড়া বিশাল অংশ অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এসব কারণে চামড়ার দাম কমে যাচ্ছে। আর চামড়াজাত পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’
কাঁচা চামড়া রপ্তানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাঁচা চামড়া রপ্তানি করা সহজ নয়। কারণ এটা একটা প্রক্রিয়ার বিষয়। রপ্তানি করতে হলেও কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’