সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট ঃ বই মেলার দ্বিতীয়দিন শুক্রবার ছিল ছুটির দিন। উদ্বোধনের দিন সবাই মনে করেছিল দ্বিতীয় দিন শুক্রবার হয়তো জমে ওঠবে বই মেলা। কিন্তু না শিশু প্রহর না থাকায় তেমন জমেনি বই মেলা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন বই মেলা জমতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। তবে শিশু প্রহর থাকলে প্রেক্ষাপট ভিন্ন হতো। এদিন সকাল ১১টা থেকে খুলে যায় বই মেলার দুয়ার। পুরোপুরি গুছিয়ে উঠতে না পারলেও স্টল বা প্যাভেলিয়ন নিজেদের সাধ্য মতোই সাজিয়ে বসে বইয়ের পসরা। তবে মেলায় পাঠক-দর্শক ছিল হাতেগোনা। প্রকাশকরা বলছেন, মেলা হবে কি হবে না, সেটি নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত থাকাতেই এবার কাজ গুছিয়ে উঠতে একটু সময় লাগছে। তবে খুব অল্প সময়েই সমস্ত কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। আর শুরুর দিকে কম হলেও পাঠকরা আসছেন, বই দেখছেন।
মেলা প্রাঙ্গণে অন্বেষা, নালন্দা, অন্য, জার্নিম্যান বুকস, তাম্রলিপি, পাঞ্জেরি, পার্লসহ বিভিন্ন বড় বড় প্রকাশনীও এখনো পুরোপুরি গুছিয়ে উঠতে পারেনি তাদের প্যাভেলিয়ন। স্টলের ক্ষেত্রেও অবস্থা প্রায় একই। তবে প্রকাশকরা গুছিয়ে উঠতে না পারলেও থেমে নেই পাঠক-দর্শকরা। তারা আসছেন এবং নিজের মতো করেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন মেলাজুড়ে। কিন্তু তাদের সংখ্যা খুবই নগন্য। বরং দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেলা প্রায় ফাঁকা ছিল।
দর্শনার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন করোনার কারণে কোথাও তেমন বড় কোনো উৎসব নেই। তাই বইমেলা শুরু হওয়ায় এবং ছুটির দিন থাকায় চলে আসা। যতোটা পারি ঘুরে দেখবো, যদিও মেলা এখনো গুছিয়ে ওঠেনি। তবুও যতটুকু আছে, সেটাও কম নয়। অন্যবছর ছুটির দিনের সকাল বেলা শিশু প্রহর ঘোষণা করা হলেও এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে রাখা হয়নি শিশু প্রহরের আয়োজন। তবে শিশু চত্বরকে সাজানো হয়েছে শিশুদের উপযোগী করেই। আর ছুটির দিনের সকালে সেখানে শিশুদের উপস্থিতিও দেখা গেছে মোটামুটি ভালো।
এদিকে ছুটির দিন হওয়ায় ব্যস্ততা বেড়ে যায় প্রকাশকদেরও। সবাই প্রত্যাশা করছেন ছুটির দিনে একটু বেশিই লোক সমাগম হবে। তাইতো স্টলে সাজিয়ে রাখছেন নতুন নতুন বই। তবে ছুটির দিনের প্রথম প্রহর আলসেমিতেই কেটেছে সকলের। নিজেদের মধ্যে গল্প গুজব করেই সময় পার করেছেন বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মীরা। ছুটির দিন হিসেবে শুক্রবার মেলা চলে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এর মধ্যে দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিরতি থাকে। এদিকে গতকাল অমর একুশে বইমেলা ২০২১ দ্বিতীয় দিন শুক্রবার নতুন বই এসেছে ৫৫টি।
করোনার বিরূপ পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ নিয়েই বইয়ের পসরা সাজিয়ে হাজির হয়েছেন প্রকাশকরা। তবে উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও সবাই পুরোপুরি তৈরি হতে পারেননি। চিরচেনা বইমেলার প্রাণ জাগানিয়া অবয়বের অপেক্ষা করছেন প্রকাশক, লেখক, পাঠক তথা সংশ্লিষ্ট সবাই। পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন যাবতীয় আয়োজন ও তৎপরতা। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে যারা এবার অংশ নিচ্ছেন, তাদের একটু সময় লাগছে বলে মনে করেন প্রকাশকরা।
কর্তৃপক্ষ এবারের মেলায় স্বাস্থবিধি পালনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। মাস্ক পরিধান ছাড়া মেলায় প্রবেশ করা যাবে না। মানতে হবে সামাজিক দূরত্বও।
গতকাল বিকেল ৪:০০টা বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুভাষ সিংহ রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আরমা দত্ত এমপি এবং নাসির উদ্দীন ইউসুফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন রঞ্জনা বিশ্বাস, আশরাফ জুয়েল এবং মঈনুল হাসান।
আজ শনিবার অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিন। মেলা চলবে সকাল ১১:০০টা থেকে রাত ৯:০০টা পর্যন্ত। বিকেল ৪:০০টা বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আবুল মোমেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আবুল কাশেম এবং আবদুল মান্নান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম।