সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট : বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি নড়াইলের দাদাবাবু (জামাই) প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে নড়াইলে শোক কর্মসূচির সাথে সাথে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বুধবার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এছাড়া সদর উপজেলার তুলারাম ইউনিয়নে প্রণবপত্নী শুভ্রা মুখার্জির মামাবাড়ির রাধা গোবিন্দ মন্দির চত্বরে প্রণব মুখার্জির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, শোক বইতে স্বাক্ষর, সংক্ষিপ্ত স্মরণসভা ও আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
অপরদিকে সদর উপজেলার ভদ্রবিলায় প্রয়াত শুভ্রা মুখার্জির বাবার বাড়িতেও প্রণব মুখার্জির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সংক্ষিপ্ত স্মরণসভা ও আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় তুলারামপুরে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহম্মদ জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম, তুলারামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বুলবুল হোসেন, শুভ্রা মুখার্জি ফাউন্ডেশনের পরিচালক অয়ন কুমার ঘোষ, শুভ্রার মামাতো ভাই কার্তিক ঘোষ, বিশ্বনাথ ঘোষসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, নড়াইল সদরের ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ভদ্রবিলা গ্রামের অমরেন্দ্র ঘোষের মেয়ে শুভ্রা ঘোষ। তারা ৪ ভাই ৪ বোন। ১৯৪৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এ বাড়িতেই জন্মেছিলেন। তার মায়ের নাম মিরা রানী ঘোষ। একই উপজেলার তুলারামপুর গ্রামে শুভ্রার নানাবাড়ি। ১৯৫৫ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে যান। শুভ্রার ভাইবোনেরা কালক্রমে ভারতে চলে গেলেও অমরেন্দ্র ঘোষের অপর সন্তান শুভ্রার ছোট ভাই কানাইলাল ঘোষ পৈতৃক ভিটায় প্রদীপ জ্বালাচ্ছেন।
১৯৫৭ সালের ১৩ জুলাই মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রণব মুখার্জির সাথে শুভ্রার বিয়ে হয়। বর্তমানে অভিজিৎ মুখার্জি ও সুরজিৎ মুখার্জি নামে দুই ছেলে এবং শর্মিষ্ঠা মুখার্জি নামে এক মেয়ে রয়েছে তাদের।
৪০ বছর পরে ১৯৯৫ সালে শেকড়ের সন্ধানে মেয়ে শর্মিষ্ঠাকে নিয়ে শুভ্রা মুখার্জি বেড়াতে এসেছিলেন নড়াইলে। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে এসে স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জিকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে বেড়াতে আসেন। ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট ভারতের আর্মি হসপিটাল (রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল) হাসপাতালে শুভ্রা মুখার্জি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। এদিকে প্রণব মুখার্জি দিল্লির আর্মি হাসপাতাল রিসার্চ অ্যান্ড রেফারালে সোমবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি করোনা আক্রান্তসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন।
শুভ্রা মুখার্জির নামে তার মামাবাড়ি চাঁচড়ায় একটি মন্দির ও একটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়। ভারত সরকারের অর্থায়নে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে ভারত-মৈত্রী ছাত্রী হোস্টেল নির্মিত হয়েছে।