আলমগীর পারভেজ: ১৪৪২ হিজরির শেষ জুমাবার আজ। এই দিনকে কেন্দ্র করে আজকের জুমাতুল বিদায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মানবজাতিকে করোনা থেকে মুক্তির প্রত্যাশা জানিয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে।একইসঙ্গে খুতবায় সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে ও জাকাত আদায়ের আহ্বান করা হয়েছে।
রমজানের শেষ জুমা আদায় করতে শুক্রবার দুপুর ১২টার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মসজিদগুলোতে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। নামাজ শুরুর আগেই সব মসজিদ কানায় কানায় ভরে যায়। মসজিদে ঠাঁই না পেয়ে অনেকে রাস্তায় জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ আদায় করেন। কিছু কিছু মসজিদে সামাজিক দূরত্ব মানা হলেও লোক সমাগম বেশি হওয়ায় অনেক মসজিদে মানা হয়নি সেই দূরত্ব। তবে অধিকাংশ মুসল্লির মুখে মাস্ক ছিল। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ সব মসজিদেই ঈদের নামাজের আগেই ফিতরার টাকা পরিশোধের আহ্বান জানানো হয়।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আজ নামাজে ইমামতি করেন মুফতি মিজানুর রহমান। নামাজ শেষে মোনাজাতে বসে তিনি বলেন, ‘সারা মানবজাতি আজ করোনা মহামারির কবলে। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে একমাত্র আল্লাহ আমাদেরকে বাঁচাতে পারেন। তিনি যদি আমাদেরকে না বাঁচান, তাহলে আমাদের বাঁচানোর মতো কেউ নেই। আমরা তোমার (আল্লাহ) দরবারে হাত তুলেছি মাওলা। তুমি আমাদের ক্ষমা করে দাও। করোনা থেকে রক্ষা কর। এভবে চলতে থাকলে আমরা সবাই একে একে মারা যাব। তুমিই তোমার বান্দাদের রক্ষা কর।’
মুফতি মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘পবিত্র রমজানে আমরা তোমার দরবারে হাত তুলেছি। তুমি সারা বিশ্বের সব মানুষকে ক্ষমা করে দাও। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করছি মাবুদ। তুমি আমাদের মতো পাপী বান্দাদের ক্ষমা করে দাও।’
বিশেষ এই দিনে মুফতি মিজানুর রহমানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফরিয়াদ জানানো মুসল্লিরা বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আসতে শুরু করেন। জুমাতুল বিদার ফরজ নামাজ চলাকালেও অনেকে মসজিদে নামাজের জন্য আসেন। এত বেশি মানুষ আজ উপস্থিত হয়েছিল যে, বিশাল মসজিদের ভেতরেও জায়গা হয়নি সবার। ফলে মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হয়েছে অনেককে।
জুমার যখন ফরজ নামাজ পড়ানো হচ্ছিল, তখন বাইরে প্রচণ্ড রোদ। কড়া রোদ উপেক্ষা করে বায়তুল মোকাররমের মসজিদের সিঁড়িতে ও নিচে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। মসজিদের বাইরের অংশে গরম কংক্রিটের ঢালাইয়ের ওপর দাঁড়িয়েও মানুষ নামাজ পড়েছেন।