সময় সংবাদ রিপোর্ট : প্রায় তিন বছর যাবত কাজ চলমান রেখেও মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং কাজ শেষ করতে পারেনি বাকেরগঞ্জ এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।তাই চাঞ্চল্যকর এই বিষয়টি এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে বেশ কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।কখনো ভাঙ্গা ইট বিছানো,বালু ফেলানো,রোলার করানো ইত্যাদি করেই প্রায় তিন বছর কাটিয়ে দিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।এখন পর্যন্ত কার্পেটিং এর কাজ শেষ করতে পারেনি। বর্তমানেও কাজ স্থগিত আছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত ১৩নং পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ভরপাশা রঘুনাথপুর গ্রামে।চাকরখালি বাজার থেকে মৃধাপাড়ার সাথে সংযুক্ত ভরপাশা গ্রামের ওই রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার,কিন্তু আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের একমাত্র এই সংযোগ রাস্তাটি ব্যবহার করে প্রায় চার-পাঁচ গ্রামের মানুষ.কৃষি পণ্যের সরবরাহ এবং কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল ও মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত এই রাস্তাটি ১০ বছর যাবত ব্যবহারের প্রায় অনুপযোগী ছিল,স্থানীয় কতিপয় স্ব-উদ্যোগী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার দ্বারা এলজিইডির আগারগাঁও প্রধান কার্যালয় থেকে রাস্তাটির আইডি নাম্বার ও স্কিম পাস করা হয় এবং পরবর্তীতে বাকেরগঞ্জ এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ওপেন টেন্ডার আহ্বান করা হয়।টেন্ডার প্রাপ্ত মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি না করিয়ে তারা দুই তিন হাত বদল করে সাব কন্ট্র্যাকে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বশির আহমেদের ব্যক্তিগত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজটি শুরু করা হয়,কিন্তু তার প্রতিষ্ঠানের অনভিজ্ঞ ও অপ্রূতুল শ্রমিকের মাধ্যমে কাজটি কচ্ছপ গতিতে আগানো হয়। এক সপ্তাহ কাজ করানোর পরে প্রায় ৪-৫ মাস যাবত আবার কাজ বন্ধ রাখা হয়। অর্থাৎ তাদের খেয়াল খুশি মতো রাস্তার কাজ পরিচালনা করে।
স্থানীয় জনগণ ও ছাত্র-ছাত্রীদের হাঁটাচলায় অত্যাধিক ব্যাঘাত হওয়াতে তারা বারবার বাকেরগঞ্জ এলজিডি এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বারবার যোগাযোগ করে। কিন্তু বাকেরগঞ্জ এলজিইডি এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ আগিয়ে নেওয়ার জন্য গরিমশি করে। ভাঙ্গা ইট রাস্তায় বিছিয়ে রাখার ধরুন গাড়ি তো দূরের কথা মানুষ স্বাভাবিকভাবে হেঁটে যেতে পারছেনা।
বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী চেয়ারম্যান বশির আহমেদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি বারবারই দ্রুত সময়ের মধ্য কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়ে এসেছেন কিন্তু ফলাফল শূন্য। তিনি বারবারই কাজ শুরু করার ৪-৫ দিনের মাথায় কাজ বন্ধ রেখে সাধারণ মানুষকে বরং উল্টো সমস্যায় ফেলেছেন। কারণ ভাঙ্গা ইট বিছানো রাস্তা দিয়ে হাঁটা অনেক কষ্টের এবং দূরহ ব্যাপার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিল্ড কর্মী হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমরা যতটুকু করেছি এলজিইডি থেকে তার’ই বিল পাইনি এখন আমরা কাজ কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব।
এ বিষয়টি জানার জন্য ১৩ নং পাদ্রিসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বারবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বরং এলাকার একাধিক সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায় ইউনিয়ন পরিষদের ওই চেয়ারম্যান মাত্র দুইবার নির্বাচনকালীন সময়ে ওই ভোট চাইতে এসেছিলেন এবং ব্যবসায়ী কাজে ওয়ার্ড সংলগ্ন গরুর বাজারে আসা-যাওয়া করেন। এছাড়া ইউনিয়নের ওই ওয়ার্ডের উন্নয়নকল্পে তাকে কখনোই দেখা যায়নি।এই রাস্তাটি বাদেও রাস্তার দুই পাশে দুটি লোহার ব্রিজ প্রায় এক দশক ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে,কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কখনোই সেগুলো নিয়ে কোন উদ্যোগ নেয়নি বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষের ভিতরে আরেকটি গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ছে,সেটি হল রাস্তাটি অসমাপ্ত রেখে এর সম্পূর্ণ বিল উঠিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ভাগ বাটোয়ারা করে ইতিমধ্যেই খেয়ে ফেলেছেন। তাই ঊর্ধ্বতম কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর দাবি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে রাস্তাটি দ্রুত সময়ের ভিতরে কারপিটিং এর কাজ শেষ করে চলাচলের উপযোগী করে তুলুক নয়তোবা বিষয়টি নিয়ে বাকেরগঞ্জ এলজিইডি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি সহ আরো কিছু কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ।