সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্টঃ তীব্র যানজটে নগরবাসীর চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। গতকাল বুধবার দিনব্যাপী বিভিন্ন সড়কে দেখা দেয় যানজট। কোথায় থেমে থেমে চলে যানবাহন। ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতে লেগে যায় এক থেকে দেড় ঘন্টা। এছাড়া একদিকে গরম অন্যদিকে তীব্র যানজটে অসহনীয় অবস্থা তৈরী হয়।
জানা গেছে, ঢাকার পথে বের হলেই যানজট নামের ভোগান্তি যেন নিয়মিত হয়ে গেছে। গতকালও রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কে যানজট দেখা গেছে। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর দ্বিতীয় দিনে তীব্র যানজটের কবলে পড়েন রাজধানীবাসী।
গত রোববার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা পর থেকে রাজধানীতে যানজটের চিত্র ছিল লক্ষণীয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে। বিশেষ করে রাজধানীর যেসব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি, সেসব এলাকার আশপাশে যানজট বেশি দেখা গেছে।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে যানজটের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। এছাড়া স্কুল-কলেজ সংলগ্ন ভেতরের রাস্তাগুলোতেও অতিরিক্ত রিকশা ও প্রাইভেটকারের উপস্থিতি যানজট ও জটলা সৃষ্টি করেছে।
গুলিস্তান থেকে কাজলা, ধোলাইপাড় এলাকায় সংযোগ সড়কে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার। বেশিরভাগ গাড়ি ফ্লাইওভার দিয়েই যাতায়াত করে। তারপরও যাত্রাবাড়ী মোড়ে দেখা গেছে তীব্র যানজট। রাজধানীর উত্তরা থেকে আসা রাইদা বাসের চালক আহমদ হোসেনের সঙ্গে কথা হয় সায়েদাবাদ ওভারব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়। তিনি বলেন, বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গাড়িগুলো ধীরগতিতে চলছে, মাঝেমধ্যে থেমে থাকছে। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত আসতেই অনেক সময় লেগে গেছে। প্রতিটি সড়কে প্রাইভেটকারের সংখ্যা অনেক বেশি। এছাড়া স্কুল-কলেজ সংলগ্ন এলাকায় রিকশায় যাত্রীদের ওঠা-নামা বেশি দেখা গেছে। আর অফিস টাইম হওয়ায় প্রতিটি বাসে অফিসগামী মানুষের পাশাপাশি শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের বাড়তি চাপ রয়েছে। তারা বিভিন্ন স্থানে বাস থেকে নামছেন, ফলে যানবাহনে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে।
মিরপুর থেকে আগারগাঁও, মহাখালী হয়ে গুলশান-১ নম্বর পর্যন্ত এসেছে আলিফ বাস। বাসটির সহকারী (হেলপার) মো. ফরিদ মিয়া বলেন, যতটুকু রাস্তা এসেছি এ রাস্তায় একবারের জন্য গাড়ি গতিতে চালিয়ে আসতে পারিনি। পুরো রাস্তাতেই যানজট লেগে আছে। খুব ধীরগতিতে আসতে হয়েছে। প্রতিটি সড়কে প্রাইভেটকারের সংখ্যা বেশি। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা প্রাইভেটেকারের পাশাপাশি রিকশায় চলাচল করছে, তাই যানজট দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি বাসেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আছে, তারা বিভিন্ন স্টপেজসহ স্কুল-কলেজের আশপাশে নামছে। আগের চেয়ে স্টপেজগুলোতে বেশি বেশি যাত্রী ওঠানো, নামানোর কারণেও ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোডে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ার করা চালক তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সড়কে যানজট বেশি দেখা যাচ্ছে। আসলে রাজধানীর প্রায় সব পরিবারেই একজন করে শিক্ষার্থী আছে, তারা সবাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বের হয়েছে, অনেকের সঙ্গে অভিভাবকরাও আছে, যে কারণে সড়কে প্রাইভেটকার, রিকশার সংখ্যা বেড়েছে। অন্যদিক প্রতিটি গণপরিবহনেও শিক্ষার্থীরা উঠছে, স্কুল-কলেজ সংলগ্ন বিভিন্ন স্টপেজে নামে যাচ্ছে, তাই গাড়ি থামিয়ে তাদের নামাতে হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে রাজধানীতে আজও তীব্র যানজট সকাল থেকেই।
গত ১৯ আগস্ট থেকে রাজধানীতে শতভাগ গণপরিবহন চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই যানজট সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। এর সঙ্গে ৫৪৩ দিন পর স্কুল-কলেজ খুলেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরার অপেক্ষা শেষ হয়েছে শিক্ষার্থীদের। যে কারণে সড়কে অতিরিক্ত প্রাইভেটকার, রিকশা চলাচল করছে। গণপরিবহনেও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টপেজ থেকে উঠছে-নামছে ফলে গণপরিবহনে ধীরগতি থেকেও যানজটের সৃষ্টি হয়েছে সড়কে। ফলে যারাই ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদের পড়তে হয়েছে যানজট নামের ভোগান্তিতে।