*সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ তুরাগ নদীতে গতকাল শনিবার বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঢাকার গাবতলীর আমিনবাজার এলাকায় তুরাগ নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ১১০ ফুট গভীর থেকে ধরলা-৪ ক্রেন বোট দিয়ে বেলা তিনটার দিকে তোলে। এদিকে এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ফজলুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের ঢাকা বিভাগের পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বাল্কহেডটি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত বাল্কহেডটি চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। ফায়ার সার্ভিস ঢাকা সদর দপ্তরের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা বলেন, নিখোঁজ চারশিশু ও একজন নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিস্তারিত পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। নৌবাহিনীসহ ফায়ার সার্ভিসের একাধিক দল নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করছে। ফজলুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আমিনবাজারের কেবলারচর ঘাট থেকে একটি ট্রলার নদীর অপর প্রান্তে দ্বীপনগর ঘাটে যাচ্ছিল। ট্রলারটিতে ১৮ জন যাত্রী ছিল। মাঝনদীতে যাওয়ার পর উত্তর দিক থেকে একটি খালি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে সেটি ডুবে যায়। ১৮ যাত্রীর মধ্যে ১০ জন সাঁতরে পাড়ে উঠলেও নারী ও শিশুসহ ৮ জন নিখোঁজ হয়। সকাল ৯টার দিকে সাভার ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানানো হয়। দুপুর ১২টার দিকে দুই শিশু ও এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আরেকটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নৌপুলিশের পুলিশ সুপার ফরিদুল ইসলাম বলেন, সম্ভবত আরও ৪/৫জন নিখোঁজ আছে। এর আগে দুপুরে তিনটি লাশ উদ্ধারের খবর দিয়েছিলেন তিনি। এদের মধ্যে একজন ত্রিশোর্ধ্ব এক নারী এবং ৫ থেকে ৭ বছর বয়সের দুটি শিশু। ওই নারীর নাম শিউলী বেগম এবং দুই শিশুর মধ্যে একজনের নাম ইমরান, অন্যজনের নাম আরমান বলে প্রথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান ফরিদুল ইসলাম। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম এর আগে বলেছিলেন, সকালে ট্রলারটি ডুবে গেলেও ফায়ার সার্ভিস পৌনে ৯টার দিকে খবর পায়। তারপরই নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ শুরু করে ডুবুরিরা। নৌ পুলিশের আমিনবাজার থানার ওসি আলমগীর শেখ জানান, বালুবাহী খালি ট্রলারটিতে চড়ে কয়েকজন নদীর এপার থেকে ওপার যাওয়ার সময় ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা ১০ জনকে উদ্ধার করা হয় জানিয়ে তিনি সকালে বলেছিলেন, এখনও সাত-আটজন নিখোঁজ রয়েছেন। কোস্টগার্ড সদরদপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট খন্দকার মুনিফ তকি জানিয়েছেন, তুরাগ নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের উদ্ধারকাজে গতি বাড়াতে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছে কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল।