*সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ রাজশাহী, দিনাজপুর, পিরোজপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, মেহেরপুর, নওগাঁ ও সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতের পৃৃথক ঘটনায় গতকাল সোমবার ১৭ জনের নিহত হওয়র খবর জানিয়েছেন স্থানীয় প্রতিনিধিরা। এত আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আমাদের রাজশাহী অফিস জানিয়েছে, রাজশাহীতে বজ্রপাতে ৪ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছে আরো কয়েকজন। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর চক কাপাশিয়ায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মুক্তা (৩৫), আলেয়া (৬৫), সোহান (৮), পরশ (৮)। তারা একই গ্রামের বাসিন্দা। আহতরা হলেন- জীবন (৫) ও ভুট্ট (২০)। তারা রামেকে ভর্তি আছেন। স্থানীয় এক ডিসপেনসারির দোকানি বুলেট জানান, ‘ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে গ্রামের অনেকে আম কুড়াতে গিয়েছিল। তবে একটি স্থানে বজ্রপাতে ৪ জন মারা গেছে। আহত দুজনকে আমার এখানে আনা হয়েছিল। আমি তাদের রামেক হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিই। কিছু লোক তাদেরকে মোটরসাইকেলে রামেকে নিয়ে যায়।’ কাটাখালী থানার পুলিশ জানায়, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। চারজন ঘটনাস্থলে মারা গেছে এবং দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ সংবাদদাতা জানিয়েছেন, দিনাজপুর হাকিমপুরে বজ্রপাতে দুই সহোদর বোনের মত্যু ঘটেছে। সোমবার বাদ আছর বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে হাকিমপুর উপজেলার লোহাচড়া গ্রামে।
জানা যায় ৭ জুন, সোমবার বিকেলে লোহাচড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে মহাসিনা খাতুন (১২)ও আশরাফা খাতুন (১০) নিজ গ্রাম লোহাচড়া গ্রামে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতের কবলে পড়ে তাদের মৃত্যু ঘটে। হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ গাদ্দাফি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সাবেক মেম্বার আমজাদ হোসেন জানান, আজ বিকেলে ঝড় বৃষ্টিতে মফিজের দুই মেয়ে বাড়ির পাশে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যায়। বিষয়টি হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ গাদ্দাফি বলেন আজ বিকেলে বজ্রপাতের কবলে পড়া শিশু দুইটি হাসপাতালে নিয়ে আসার পুর্বেই মারা গেছে।
সংবাদদাতা জানিয়েছেন, স্বরূপকাঠিতে বজ্রপাতে স্বামী -স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন: আবুল কালাম (৫৫) ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০)। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মাদারীপুর সংবাদদাতা জানান, জেলার শিবচরে বজ্রপাতে রাকিব শেখ (১৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত রাকিব দোতারা এলাকার মোল্লাকান্দী গ্রামের জহির উদ্দিন শেখের ছেলে।
ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, চরভদ্রাসনে গতকাল সোমবার বিকেল ৪টার দিকে ক্ষেতে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে সিয়াম প্রামাণিক (১৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সিয়াম সদর ইউনিয়নের বালিয়া ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা সৌদী প্রবাসী শামসু মণ্ডলের একমাত্র ছেলে।
মেহেরপুর সংবাদদাতা জানিয়েছেন, মুজিবনগরে বজ্রপাতে উকিল (৩৪) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত উকিল উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের সোনাপুর মাঝপাড়া গ্রামের মৃত তেঁতুল হোসেনের ছোট ছেলে।
নওগাঁ সংবাদদাতা জানিয়েছেন, জেলার সাপাহারে বজ্রপাতে হোসেন আলী (১৪) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জাম পাড়তে গিয়ে এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে। হোসেন আলী সাপাহার উপজেলার সাহাবাজপুর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।
সিরাজগঞ্জের আব্দুস সামাদ খান জানান, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও বেলকুচি উপজেলায় রবিবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পৃথক বজ্রপাতে ৫ জন নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন,শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের চর আঙ্গারু গ্রামের আমানত মোল্লার ছেলে মো: আব্দুল্লাহ ওরফে জুয়েল রানা(২৬),নরিনা ইউনিয়নের বাতিয়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিন ভোলার ছেলে আলহাজ আলী বাবুর্চি(৬০),উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের আগদিঘল গ্রামের শাহেদ আলীর ছেলে ফরিদুল ইসলাম(১৬),সলঙ্গা ইউনিয়নের আঙ্গারু গ্রামের মোহাম¥দ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৫) ও বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চর সমেষপুর গ্রামের লাইলি বেগম(৪৫)।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আবুল কালাম জানান,এ দিন বিকেলে বাড়ির পাশের জমিতে ধান কাটার সময় জুয়েল রানা বজ্রপাতে নিহত হয়। নরিনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক ও আলতাফ হোসেন জানান,আলহাজ তার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বাড়ির পাশের মাঠে ধান শুকানোর কাজ করছিলেন। এ সময় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে তারা দৌড়ে বাড়ির কাছে আসলে হঠাৎ বজ্রপাতে আলহাজ বাবুর্চি ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল প্রামানিক জানান, আগদিঘল গ্রামের মাঠে ধান কাটার সময় নবম শ্রেণির ছাত্র ফরিদুল ইসলাম বজ্রপাতে নিহত হয়। সলঙ্গা থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী বলেন,উল্লাপাড়া উপজেলার বাঙ্গালা ইউনিয়নের ধরইল বিলে হাঁস পালনের সময় রফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক রাখাল বজ্রপাতে নিহত হয়। তিনি উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের আঙ্গারু গ্রামের মোহাম¥দ আলীর ছেলে।
বেলকুচি থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চর সমেষপুর গ্রামের লাইলি বেগম মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হন। এ সব ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।