Header Border

ঢাকা, রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল) ৩০.৭৭°সে
শিরোনাম

ধেয়ে আসছে সিত্রাং, মোংলা-পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

সময় সংবাদ রিপোর্ট : আবহাওয়া বিভাগ বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। সিত্রাং নামের এই ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মঙ্গলবার ভোরবেলা বাংলাদেশের খেপুপাড়া অঞ্চল দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করবে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, এটি যে বাংলাদেশ দিয়েই অতিক্রম করবে এটা নিশ্চিত, কারণ এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ বাংলাদেশর উপকূলে চলে এসেছে।তবে এটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুর রহমান রোববার বলেছিলেন, এটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হতে পারে।

কিন্তু আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, সিত্রাং এখন একটি ‘সাইক্লোনিক স্টর্ম’ অবস্থায় আছে, মঙ্গলবার ভোরবেলা নাগাদ এটি ‘সিভিয়ার সাইক্লোন’ বা তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

এরইমধ্যে বাংলাদেশের মংলা ও পায়রা বন্দরে সিগন্যাল বাড়িয়ে ৭ নম্বর করা হয়েছে। আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে চলছে ৬ নম্বর সংকেত।

বঙ্গোপসাগরের একটি নিম্নচাপ রোববার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়। আগেই ঠিক করে রাখা একটি তালিকা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টির নাম হয় সিত্রাং।

রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকার সাগর এখন উত্তাল রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা এবং ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেই সাথে ভারি থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলো উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে এনামুর রহমান রোববার বলেছিলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানলে দেশের উপকূলের ৭৩০ কিলোমিটার এলাকায় এর প্রভাব থাকবে। কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় এর প্রভাব পড়তে পারে।

কীভাবে নামকরণ হয় ঘূর্ণিঝড়ের
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা আঞ্চলিক কমিটি একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে। যেমন ভারত মহাসাগরের ঝড়গুলোর নামকরণ করে এই সংস্থার আটটি দেশ।

দেশগুলো হচ্ছে :- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান, যাদের প্যানেলকে বলা হয় WMO/ESCAP।

একসময় ঝড়গুলোকে নানা নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হতো।

ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো।

এ কারণে ২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়।

সে সময় আটটি দেশ মিলে মোট ৬৪টি নাম প্রস্তাব করে। সেই তালিকায় থাকা একটি নামই সিত্রাং। এর আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ করা হতো।

ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বলা হলেও আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় হারিকেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বলা হয় টাইফুন।

কিভাবে ঝড় তৈরি হয়?
সমুদ্রের উষ্ণ পানির কারণে বায়ু উত্তপ্ত হঠাৎ করে এসব ঝড়ের তৈরি হয়।

তখন তুলনামূলক উষ্ণ বাতাস হালকা হয়ে যাওয়ার কারণে ওপরে উঠে যায়, আর ওপরের বাসা ঠাণ্ডা বাতাস নিচে নেমে আসে। এসে নিচের বায়ুমণ্ডলের বায়ুর চাপ কমে যায়। তখন আশপাশের এলাকার বাতাসে তারতম্য তৈরি হয়।

সেখানকার বাতাসের চাপ সমান করতে আশপাশের এলাকা থেকে প্রবল বেগে বাতাস ছুটে আসে। আর এ কারণেই তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড়ের।

এর ফলে প্রবল বাতাস ও স্রোতের তৈরি হয়। যখন এসব এই বাতাসের ভেসে ঝড়টি ভূমিতে চলে আসে, তখন বন্যা, ভূমিধ্বস বা জলোচ্ছ্বাসের তৈরি করে।
সূত্র : বিবিসি

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

বন্যার্তদের জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে অনুদান পাঠানোর সময় বেড়েছে
মির্জাগঞ্জে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত।
অনেক দাবির চাপে অন্তর্বর্তী সরকার;যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস
কোন দিকে যাচ্ছে এই বন্যা পরিস্থিতি, এর জন্য দায়ী কে?
সাত ব্যাংকেই ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ সালমান এফ রহমানের
ছাত্র-জনতার দখলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর

আরও খবর