ডেইলি নিউজ রিপোর্ট॥ নারীমুক্তির প্রধান বাধা যদি হয় পুরুষ, তবে পথপ্রদর্শকও পুরুষ বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জিনাত আরা। শনিবার সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ফারজানা ইসলাম, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ। দক্ষিণ বাংলা নারী আইনজীবী পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিচারপতি জিনাত আরা বলেন, জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীর সমান অধিকারের বিষয়টি সংবিধানের ১৯ এবং ২৮ অনুচ্ছেদে নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবিধানের ২৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না এবং ২৯(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করিবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনে নারী সুরক্ষার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে এবং নারী নিরাপত্তায় বিশেষ বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নারীরা এখনও পরিবারে, কর্মস্থলে, পরিবহনে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। নারী দিবস উদযাপন করে এসব অবস্থার উন্নতি করা না গেলেও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নারী নির্যাতন অনেক কমেছে। নারীর নিরাপদ কর্ম পরিবেশ কর্ম ঘণ্টা মজুরি ইত্যাদি বিষয়ে নিশ্চিত করা গেছে অনেক ক্ষেত্রেই। সারা বিশ্বে নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে এ দিবসটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে।
বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশে আজ সর্বত্র নারীর জয়-জয়কার শুরু হয়েছে। শিক্ষা-দীক্ষায়, সাহসিকতায়, খেলাধুলায় সৃষ্টিশীল কাজে বাংলাদেশের নারীরা আজ সামনের কাতারে। আমাদের নারীরা আজ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, শিক্ষা, সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে উচ্চপদে সমাসীন।
নারীর ক্ষমতায়নে সর্বাগ্রে পুরুষ সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে বিচারপতি জিনাত আরা বলেন, আমরা সবাই যে যার অবস্থান থেকে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করি। নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির পথ সুগম হলেই শুধু এ দিবস তার স্বার্থকতা খুঁজে পাবে।