সময় সংবাদ রিপোর্ট:আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে ড. কামাল হোসেন এই ঘোষণা দেন। এ সময় নির্বাচনের বর্তমান তফসিল বাতিল করে ১ মাস পিছিয়ে দিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণারও দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল বলেন, ‘সংবিধানকে কেন্দ্র করে এই ঐক্য গঠন করা হয়েছে। সংবিধানের যে মৌলিক বিষয়গুলো আছে, সংবিধানের যে মূল্যবোধ আছে সেটাকে কেন্দ্র করেই এই ঐক্য গঠন করা হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হলো জনগণ এই দেশে ক্ষমতার মালিক যেটা সংবিধানে বলা আছে। সেই জনগণের মালিকানাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই ঐক্য গড়ে উঠেছে। আমরা আশা করি, এই ঐক্যবদ্ধ শক্তি নির্বাচনে জয়লাভ করে জনগণের আস্থা অর্জন করে তাদের মালিকানাকে কায়েম করবে।’ এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই অন্যতম নেতা বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনকে অনেক মূল্য দিচ্ছেন। তাই আপনারা যেভাবে নেমে পড়েছেন সারা দেশেই এভাবে নেমে পড়ে আপনাদের জনগণকে সচেতন করতে হবে। ঐক্যের মূল্যটা আপনারা অবশ্যই তাদের বোঝাতে পারবেন। কারণ আমরা দেখেছি, অতীতে জাতীয় ঐক্য গড়ার ব্যাপারে সাংবাদিকদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।’ অর্থপূর্ণ একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সবাই অবদান রাখবে বলে আশা করেন ড. কামাল। পরে দুপুর সোয়া ১টায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য পাঠ করেন জোটের মুখপাত্র, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অত্যাবশকীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এর নূন্যতম শর্ত এখনো পর্যন্ত পূরণ হয়নি’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরও বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে, যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।’ মুখপাত্র বলেন, ‘নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. শামসুল হুদাসহ দেশের প্রায় সকল দল ও জনগণের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সরকার ও নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত বাতিল করেনি। এরকম একটা পরিস্থিতিতে একটা অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হওয়া প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন। কিন্তু এরকম ভীষণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ ‘একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য যে ৭ দফা দাবি আমরা এর মধ্যে দিয়েছি সেই দাবি থেকে আমরা সরে আসছি না’ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর সাথে যুক্ত হয়েছে নির্বাচনের তফসিল পিছিয়ে দেওয়ার দাবি। আমরা নির্বাচনের বর্তমান তফসিল বাতিল করে ১ মাস পিছিয়ে দিয়ে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি করছি। সেক্ষেত্রেও বর্তমান সংসদের মেয়াদকালেই নির্বাচন করা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, দশম সংসদ নির্বাচনের পর দেশে গণতন্ত্রের যে গভীর সংকট তৈরি হয়েছে, সেই সংকট দূর করতে আমাদের ঘোষিত ১১ দফা লক্ষ্যের ভিত্তিতে একটা সুখী, সুন্দর, আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে দেশের জনগণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পাশে থাকবে।’ প্রতীকের বিষয়ে পরে জানানো হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।