সময় সংবাদ রিপোর্ট:২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ওয়ান-ইলেভেন থেকেই কারাবাসী। এতে আপিল বিভাগের আদেশ অনুকূলে না এলে নির্বাচন করতে পারছেন না তিনি। সে ক্ষেত্রে বাবরের নির্বাচনী এলাকা নেত্রকোনা-৪ আসনে (মোহনগঞ্জ-মদন-খালিয়াজুড়ী) এবার বিএনপির টিকিট পাচ্ছেন তার স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী। দলের হাইকমান্ডের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে এরই মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে সরাসরি মাঠে নেমে পড়েছেন এই নারী।
নেত্রকোনা বিএনপির নেতারা বলছেন বাবর যে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না, সেটা নিশ্চিত ধরেই বিকল্প প্রার্থী হিসেবে তার স্ত্রীকে রাখা হয়েছিল। দলীয় হাইকমান্ড
থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে গত মাসে দেশে ফিরে তিনি মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করেন। এ মুহূর্তে তিনি এলাকার শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার জামিন করাতে উচ্চ আদালতে দৌড়াদৌড়ি করছেন। জামিন মিললেই তাদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকায় ফিরবেন শ্রাবণী জামান।
জেলা বিএনপির সভাপতি আশরাফউদ্দিন খান বলেন, ‘সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর ছাড়া ওই আসনে ভালো কোনো প্রার্থী নেই। বিকল্প হিসেবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার স্ত্রীর কথাই ভাবছেন। তবে দলীয় প্রতীক পেলেই সবকিছু স্পষ্ট হবে।’
জেলা বিএনপির তথ্যমতে, স্বামীর গ্রেপ্তারের পর তিন সন্তানকে দেখাশোনার জন্য মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেন শ্রাবণী। সেখানে থেকে জিয়া পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। বাবরের ঘনিষ্ঠ স্বজনদের কেউ রাজনীতিতে নেই। ফলে অনভিজ্ঞ হয়েও এলাকার জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন শ্রাবণী জামান। প্রতিদানে বাবরের নিজ এলাকা মদন উপজেলা বিএনপির সদস্য পদও পান।
১৯৯১ সালে বিএনপির প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লুৎফুজ্জামান বাবর। তবে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলের খাদ্যমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের কাছে হেরে যান। ২০০১ সালে বিএনপির হয়ে দ্বিতীয়বার সংসদে যান তিনি। তার ভাই রাজিউর রহমান ছিলেন জিয়াউর রহমানের এপিএস। সে সুবাদে জিয়া পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক আর হাওয়া ভবন ঘনিষ্ঠতায় জোট আমলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হন লুৎফুজ্জামান বাবর।
মামলা জটিলতায় ২০০৮ সালে বিএনপির মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েন। নির্বাচনের দুদিন আগে আদালতের রায় বাবরের পক্ষে আসে। তখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে পান ৯১ হাজার ৯৮৪ ভোট পান। প্রয়াত মন্ত্রী আব্দুল মোমেনের স্ত্রী রেবেকা মমিন নৌকা প্রতীকে তার চেয়ে মাত্র ১৬ হাজার ৭৩১ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ আতাউল হক ৪ হাজারেরও কম ভোট পেয়ে জামানত হারান।
মদন উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, ‘নেত্রকোনায় একসময় রাজনীতি ছিল না। লুৎফুজ্জামান বাবরই নতুন ধারার রাজনীতি শিখিয়েছেন। তার আনুগত্যে আমরা তার স্ত্রীকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মাথায় রেখেছি।’ একই কথা বলেন খালিয়াজুড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রউফ স্বাধীন।