সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃআওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হয়েছে নেতৃত্বে। দলের সক্রিয় ভূমিকার কারণে লাইমলাইটে উঠে এসেছেন পাঁচ নেতা। এর বাইরে রয়েছেন আরও কয়েকজন। দলের সভানেত্রীর আস্থা নিয়েই তাঁরা এই করোনাকালে কাজ করছেন নিরলসভাবে। মন্ত্রিসভায় ঠাঁই না পেলেও সাংগঠনিকভাবে নিজের অবস্থান এর মধ্যেই প্রশংসিত করেছেন দলের নেতা-কর্মীদের কাছে। অনেকেই বলছেন, পঞ্চপান্ডবের উত্থান হয়েছে আওয়ামী লীগে।
জানা গেছে, আলোচিত পাঁচ নেতা হলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। এর বাইরে সাংগঠনিক কাজে প্রশংসিত অবস্থানে আছেন সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায়ে এই নেতারা গত দুই বছরে বলিষ্ঠ অবস্থান নিয়েছেন। এর মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, বাহাউদ্দিন নাছিম সংসদ সদস্য নন। মাহবুব- উল আলম হানিফ দুবার ও মির্জা আজম ছয়বার সংসদ সদস্য হিসেবে নিজের এলাকায় শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ চেয়ারম্যান হিসেবে সারা দেশে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাংগঠনিক পরিচিতি রয়েছে। ২০০৯ সালে তিনি এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক এবং বর্তমানে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে করোনাকালেও কাজ করছেন নিরলসভাবে। একইভাবে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান এখন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চারবারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ছিলেন। দলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়ে তিনি সংযোগ বাড়িয়েছেন সারা দেশের নেতা-কর্মীর সঙ্গে। হানিফের বড় গুণ রাতবিরাতে নেতা-কর্মীদের টেলিফোন ধরা এবং তাদের কথা শোনা। তিনি এখন কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি। পাশাপাশি যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম স্বেচ্ছাসেবক লীগের একক নেতা হিসেবে সারা দেশের কর্মীদের কাছে আলাদা অবস্থানে রয়েছেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর এপিএস ছিলেন।
দলের সাংগঠনিক ও এখন যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মিসংযোগ ও স্পষ্ট কথা বলে তিনি এখন আলোচিত। এর বাইরে ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে বলা হয় সাংগঠনিক ম্যাজিকম্যান। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯১ সালে তরুণ বয়সে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তারপর আর কোনো দিন পরাজিত হননি।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক হুইপ মির্জা আজম সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। নানক-আজম জুটি সারা বাংলাদেশে বিশাল সাংগঠনিক শক্তি তৈরিতে ভূমিকা রেখেছিল আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে। করোনাকালে নিজের জেলা জামালপুর ছাড়াও ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক কাজে তিনি সক্রিয়। তার সাম্প্রতিক কিছু বক্তৃতা-বিবৃতি নেতা-কর্মীদের প্রশংসা অর্জন করেছে। এর বাইরে সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন রাজশাহী বিভাগে করোনাকালেও পরিশ্রম করছেন রাতদিন।
অন্যদিকে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব নিয়েই চলে এসেছেন লাইমলাইটে। তার সাংগঠনিক কাঠামো প্রশংসিত। আলোচিত নেতাদের মধ্যে বেশির ভাগই সরকারি পদে না থাকলেও তাদের সাংগঠনিক কাজ কর্মিমহলে আলোচিত।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের গত কাউন্সিলের পরে সাংগঠনিক কাজে নির্ভরশীল নেতাদের অনেক বেশি দায়িত্ব দিচ্ছেন। তিনি তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে করোনাকালেও দলকে শক্তিশালী রাখতে কাজ করছেন। নেতারাও শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী সংগঠন শক্তিশালী করতে সময় দেন কর্মীদের। আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে এ মুহুর্তে কর্মীদের সময় না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি অনেকে জনবিচ্ছিন্ন এলাকা থেকে। আবার অনেকে ব্যস্ত দলের ভিতরে অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং সৃষ্টিতে। বর্তমান বাস্তবতায় এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সময় সংবাদ লাইভ।