সময় সংবাদ রিপোর্ট : পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলংকা। ১৫তম আসরের ফাইনালে ২৩ রানে জয় পায় লংকানরা। এ নিয়ে ষষ্ঠবার এশিয়া কাপের শিরোপা জিতল শ্রীলংকা। সর্বোচ্চ ৭ বার জিতেছে ভারত। তবে টুর্নামেন্টে ফেভারিট হয়েও ফাইনালে এসে হার দেখল পাকিস্তান।
অথচ শ্রীলংকার টুর্নামেন্টে শুরুটা হয়েছিল খুবই বাজে। গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে শুরু করেছিল। তবে এরপরই তারা ঘুরে দাঁড়ায়। একে একে বাংলাদেশ (গ্রুপ পর্ব), ভারত, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে (সুপার ফোর) হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। আর ফাইনালের মঞ্চে দাপট দেখিয়েই শিরোপা ঘরে তোলে দলটি।
রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুদল। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ম্যাচটি শুরু হয়। যেখানে ভানুকা রাজাপাকসের ফিফটিতে ভর করে প্রথমে ব্যাট করা লংকানরা নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান করে। জবাব ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শেষ বলে ১৪৭ রানে থামে পাকিস্তান।
১৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় চতুর্থ ওভারেই বাবর আজম ও ফখর জামানকে হারায় পাকিস্তান। পুরো টুর্নামেন্টে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর প্রমোদ মদুশানের দ্বিতীয় বলে ক্যাচ দেন। পরের বলেই ফখরকে বোল্ড করে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা জাগান মদুশান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে শুরুর চাপ সামাল দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদ। এই জুটি ৫৯ বলে ৭১ রান তোলেন। তবে প্রমোদ মদুশানের বলে ইফতিখার বিদায়ে নিলে চাপে পড়ে পাকিস্তান। এই ব্যাটার ৩১ বলে ৩২ করেন। এরপর চামিকা করুনারত্নে বলে দ্রুতই বিদায় নেন মোহাম্মদ নওয়াজ।
দলীয় ১৭ ও নিজের চতুর্থ ওভারে শ্রীলংকাকে ম্যাচে পুরোপুরি ফেরান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। এই ওভারেই তিনি ভয়ঙ্কর তিন ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান, আসিফ আলী ও খুশদিল শাহকে আউট করেন। রিজওয়ান ৪৯ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫৫ করে বিদায় নেন।
শেষ দিকে পাকিস্তান দ্রুত উইকেট হারালে সহজ জয়ই তুলে নেয় শ্রীলংকা। লংকান বোলারদের মধ্যে প্রমোদ মদুশান সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট পান। হাসারাঙ্গা ৩ উইকেট তুলে নেন।
টস হেরে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নামা শ্রীলংকার প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নেন নাসিম শাহ। ওভারের তৃতীয় বলে কুসল মেন্ডিসকে বোল্ড করেন এই পাকিস্তানি গতি তারকা। এরপর লংকান শিবিরে জোড়া আঘাত করেন হারিস রউফ। ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কাকে ৮ রানে ফেরানোর পর দানুশকা গুনাথিলাকাকে বোল্ড করেন এই ডানহাতি।
পাওয়ার প্লের পর স্পিন আক্রমণ আনেন বাবর আজম। সফলতাও পায় পাকিস্তান। ভালো খেলতে থাকা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ইফতিখার আহমেদের বলে তাকেই ক্যাচ দেন। ২১ বলে ৪টি চারে ২৮ করেন ধনাঞ্জয়া। এরপর আরেক স্পিনার শাদাব খান বোল্ড করেন শ্রীলংকান অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলংকা। ভানুকা রাজাপাকসে ও হাসারাঙ্গা ডি সিলভা ৩৬ বলে ৫৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন রউফ। হাসারাঙ্গাকে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচ বানান তিনি। এই ব্যাটার ২১ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৬ করেন।
শ্রীলংকা সপ্তম উইকেটে ফের ঝড় তোলে। এবার রাজাপাকসে চামিকা করুনারত্নের সঙ্গে ৩১ বলে অপরাজিত ৫৪ রানের জুটি গড়েন। দুর্দান্ত ব্যাট করা রাজাপাকসে ৪৫ বলে ৬টি চার ও ৩টি চক্কায় ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন। এটি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। করুনারত্নে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন।
পাকিস্তান বোলারদের মধ্যে ৩টি উইকেট পান রউফ। এছাড়া একটি করে উইকেট দখল করেন নাসিম, শাদাব ও ইফতিখার।