সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট:করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে রপ্তানি নেই, অন্যদিকে উৎপাদন নেই। শ্রমিকের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। ব্যাংক ঋণের টাকাও ঠিকমতো পাচ্ছেন না। এ পরিস্থিতিতে রমজানের ঈদ কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষ ঠেকাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বসেন মালিকপক্ষ, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে যারা পুরো বোনাস দিতে পারবেন, তারা পুরোটাই দেবেন। আর যারা একসঙ্গে পুরোটা দিতে না পারবেন, তারা অর্ধেকটা দেবে। বাকি অর্ধেক আগামী ছয় মাসে সমন্বয় করে পরিশোধ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছ।
এর আগে ১৪ মে শ্রম মন্ত্রণালয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। কিন্তু ওই বৈঠকে বোনাসের ব্যাপারে ঐকমত্য না হয় বৈঠক শেষে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, সংসদ সদস্য ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সংসদ সদস্য ও সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য ও বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান, বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক।
এ ছাড়া শ্রমিক পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রবি, শ্রমিক নেতা নাজমা আক্তার প্রমুখ।
সূত্র জানায়, গতকালের বৈঠকের প্রধান এজেন্ডা ছিল শ্রমিকদের ঈদ বোনাস। মালিকরা কীভাবে ঈদ বোনাস দেবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
জানা গেছে, করোনার প্রভাবে রপ্তানিমুখী পোশাক খাতে অর্ডার বাতিল ও স্থগিত হয়ে যায়। কাজ না থাকায় অনেক মালিক সরকারি সাধারণ ছুটিতে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে। এর পর মার্চের বেতনের দাবিতে ছুটি চলাকালীনই শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে শ্রম ভবনে দফায় দফায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। গত ৪ মে অনুষ্ঠিত সে বৈঠকে এপ্রিল মাসে ৬৫ শতাংশ বেতনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদস্য ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব মালিকের পক্ষে পুরো বোনাস দেওয়া সম্ভব নয়, তাই যাদের সক্ষমতা আছে, তারা পুরো বোনাস দেবেন আর যাদের সমস্যা রয়েছে, তারা গত বছরের যে পরিমাণ বোনাস দিয়েছে, তার ন্যূনতম ৫০ শতাংশ দেবেন। বাকি অংশ আগামী ছয় মাসে সমন্বয় করে পরিশোধ করবেন।
জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি আমরা সবাই অবহিত। তাই আমরাও একমত পোষণ করেছি। শ্রমিক নেতা নাজমা আক্তার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউই ভালো নেই। শিল্পের দিকটিও বিবেচনা করতে হবে। সে হিসাবে আমরা এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।