*সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃ বন্যায় প্লাবিত হওয়া দেশে ১৫ জেলার মধ্যে ১১ জেলার পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ১০টি নদ-নদীর পানি ২২টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে আগামী ২৪ ঘণ্টার বন্যার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, বর্তমানে দেশের ১৫ জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর। আক্রান্ত এসব জেলার মধ্যে আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরীয়তপুরের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
এছাড়া দেশের ১০টি নদীর পানি ২২টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে দুধকুমার, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা, ঘাঘট, তুরাগ, পদ্মা, আত্রাই ও ধলেশ্বরী। ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল আছে। অপরদিকে যমুনা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা ও পদ্মা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতলে হ্রাস পাচ্ছে যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
সিরাজগঞ্জ : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে ক্রমেই বাড়ছে নদ-নদীর পানি। যমুনা, ইছামতি, করতোয়া, ফুলজোড় ও বড়ালের পানি বাড়ায় নিম্নাঞ্চলের ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে। এছাড়া নিচু এলাকার বাড়িঘরেও পানি প্রবেশ শুরু করেছে। এতে জেলার পাঁচ উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নে এক লাখের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট ও ব্রিজ ভেঙে যাতায়াতে বেড়েছে দুর্ভোগ। এ অবস্থায় বানভাসি মানুষের এখন একমাত্র ভরসা নৌকাই।
শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল লতিফ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলায় যমুনা নদীর সবগুলো পয়েন্টে বেড়ে পানি বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ নদ-নদী চলনবিল, ইছামতি, করতোয়া, ফুলজোড়, বড়াল ও হুড়াসাগরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার নদী তীরবর্তী নিমাঞ্চল ও চরাঞ্চলসহ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে হাজারো পরিবার।
দীর্ঘদিন ধরে বসতবাড়ির পানি না নামায় চরাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষ নৌকায় এবং উঁচু স্থানে বসবাস করছেন। জ্বালানির অভাবে রান্না করা খাবার, শিশুখাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের সংকটে ভুগছেন তারা। একই সঙ্গে নদী তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙনের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে মানুষ। এরই মধ্যে নদী ভাঙনে অনেক পরিবারের ঘর-বাড়ি, বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যার কারণে অনেক পরিবার ক্ষেতের ফসল ও গবাদি পশুসহ সহায়-সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, বাড়িতে পানি ওঠার খবর আমরা পাইনি। তবে চরাঞ্চলের প্রায় এক লাখেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সাড়ে পাঁচশ’ টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা মজুত রয়েছে। এছাড়া উপজেলাগুলোতে মোট ১২৫ টন চাল মজুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ বলেন, পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলের সাত হাজার ৬২ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। এসব ফসলের মধ্যে রোপা আমন, বোনা আমন, আগাম সবজি, আখ বীজতলা ও বাদাম রয়েছে। পানি নেমে গেলে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যাবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী জাকির হোসেন বলেন, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে নদীর অভ্যন্তরীণ নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। আরও দুই-একদিন পানি বাড়তে পারে বলে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ জানান, ইতোমধ্যে জেলায় পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সাড়ে পাঁচশ’ টন চাল ও নগদ আড়াই লাখ টাকা মজুত রয়েছে। এছাড়া উপজেলাগুলোতে মোট ১২৫ টন চাল মজুত রাখা হয়েছে। তবে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে তালিকা করে বন্যার্তদের মাঝে দ্রুত ত্রাণ বণ্টনের উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বেলকুচি সংবাদদাতা: যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার চরাঞ্চলের ২৮টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যুমনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলসহ সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অপরদিকে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ডুবে গেছে এসব অঞ্চলের শত শত একর ফসলি জমি।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
বন্যা পূর্ভাবাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি আরও বাড়তে পারে। তবে পানি বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার অনেক স্থানেই বন্যার জন্য খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর ভাঙ্গন কবলিত জায়গাতে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে ভাঙ্গন রোধ করার জন্য।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, বন্যা কবলিত উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বরাত দিয়ে জানান, সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় ২৮টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রামের কমপক্ষে সাড়ে ৩ হাজার পরিবারের ১৮ হাজার লোকজন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, ৪১২টি বাড়িঘর আংশিক ও পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যার্তদের ১৩৯টি আশ্রায় কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। ৫টি উপজেলায় ১২৫ টন ক্ষয়রাতি চাল এবং ৫ লাখ নগদ টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে।
এনায়েতপুর আরকান্দির চর গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, যমুনা নদীর মাঝে চরে বসবাস করি আমরা। বন্যার পানিতে আসার সাথে সাথে মাঠে থাকা সকল ফসল তলিয়ে গেছে। এবার পানি বৃদ্ধির ফলে ভুট্টা, মাসকালাই আর বাদমের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো কোন ত্রান সহায়তা আমাদের এলাকাতে আসেনি।
শাহজাদপুর হাট পাচিল গ্রামের ইদ্দিস প্রামানিক বলেন, পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের এই অঞ্চলে ব্যাপক হারে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। গত ৭দিনের নদী ভাঙ্গনের অত্র এলাকার বাড়িঘরের সাথে ৪টি মসজিদ ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন আর আমাদের নামাজ পড়ার মতো কোন ঘর নেই। আমরা এখন ঘর বাড়ী অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে আশপাশের ৬/৭ গ্রামের মানুষ আতংকে রয়েছে।
গাইবান্ধা সংবাদদাতা: ব্রহ্মপুত্র-ঘাঘটসহ জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছেই। সেই সাথে নতুন করে বন্যায় প্লাবিত এলাকা। ফুলছড়িতে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধির পর রাস্তাঘাট তলিয়ে ঢুকে পড়ছে মানুষের বাড়ি-ঘরে। আমনের বীজতলা ও ফসল ডুবে যাওয়ায় শঙ্কিত চর-দ্বীপচরের কৃষক। এদিকে বানভাসীদের সহায়তার প্রস্তুতি নিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।
সরেজমিন উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্রের পাড় উপচে চলাচলের রাস্তাটাও ডুবে গেছে বানের জলে। এ এলাকার মতো ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে থাকা ফুলছড়ি উপজেলার ৬ ইউনিয়নের একই দৃশ্য। তিনদিন ধরে পানিবন্দি ফুলছড়ি উপজেলার চর-দ্বীপচর ও নদের তীরবর্তী মানুষ। এরইমধ্যে মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। কোন কোন এলাকায় চরাঞ্চলের গরীব-দুখীর আশ্রয়স্থলে আঘাত হানছে বানের জল। এ উপজেলায় ভাঙনের মুখে পড়েছে চারটি গ্রাম। অন্যদিকে আমনের চারা ও বীজতলা ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত বর্গাচাষী ও কৃষক।
ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান দোলন বলেন, বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার লোকজনের জন্য সরকারিভাবে ২০ মেট্রিকটন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যেগুলো ইতোমধ্যে বিতরণ শুরু হয়েছে।
এদিকে বানভাসীদের দুর্ভোগ লাঘবের সুখবর দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে আগামী শনিবার থেকে কমতে শুরু করবে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি।
বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জামালপুর সংবাদদাতা: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জামালপুরে গত ২৪ ঘন্টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ ও পানি মাপক গেইজ পাঠক আব্দুল মান্নান। এদিকে জেলার ৭টি উপজেলার কমপক্ষে ৩৫টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলার ত্রান ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মো, নায়েব আলী জানান, জেলার ৭টি উপজেলায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে জেল্ াকৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. সাখাওয়াত ইকরাম তিনি বলেন, বন্যার পানিতে জেলার ৩৬শ’ ২৩ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
নাগরপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : কয়েক দিনের টানা অতি বৃষ্টি এবং উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দেখা দিয়েছে বন্যা। এই বন্যার ফলে মানুষ যেমন পানিবন্দি হচ্ছে সেই সঙ্গে ডুবে যাচ্ছে কৃষকের রোপন করা ধানের ফসলি জমি ও বীজ তলা। অসময়ে হঠাৎ বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান লাগানো হয়েছে। করা হয়েছে ব্যাপক বীজতলাও। চলতি গত আগস্ট মাসের শুরুতেই মাঝে মধ্যেই বৃষ্টিপাতের কারণে বিল ও নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেসব এলাকা পানিতে টইটুম্বুর। অপর দিকে যমুনার পানি বৃদ্ধিও ফলে ধলেশ্বরী নদীর পানি বাড়ে যাওয়ায় নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ, ভারড়া, দপ্তিয়র, মামুদনগর ও মোকনা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কৃষকের স্বপ্ন সদ্য রোপণকৃত রোপা-আমন ধান সহ তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। সেই সাথে উত্তরাঞ্চলের নদের পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকার ফলে কৃষক হতাশ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মতিন বিশ্বাস জানান, অসময়ে চলতি বন্যায় প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে ৪৯, বি আর ১১, ৮৭ জাতসহ বিভিন্ন জাতে উচ্চ ফলনশীল জাতে ধানের চারা নিমজ্জিত হয়েছে। টানা বৃষ্টি আর বন্যার কারণে কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বন্যার পর ক্ষতি নিরূপণ করে তালিকা তৈরি করা হবে। সেই হিসেবে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে যদি বন্যার পানি দিন দিন বাড়তে থাকে তাহলে কৃষিতে ব্যপক ক্ষতি হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, যদি নদীর পানি অব্যহতভাবে বাড়তে থাকে তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঠপর্যায়ে গিয়ে তালিকা করা হবে। সরকারি কৃষি প্রনোদনার সহায়তা এলে বন্যায় কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে উপজেলা কৃষি অফিস তাদের সর্বদাই পাশে থাকবে।