Header Border

ঢাকা, রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল) ৩০.৭৭°সে
শিরোনাম

টিকাদান কর্মসূচী অব্যাহত না থাকলে হারাতে হবে রফতানি বাজার

আলমগীর পারভেজ :  টিকাদান কর্মসূচী অব্যাহত না থাকলে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও রফতানির প্রধান বাজারগুলো হারাতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর তাই, প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
গত রোববার ঢাকায় বাজেট পরবর্তী এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা। যৌথভাবে “রিফ্লেকশনস অন দ্য বাজেট ২০২১-২২” শিরোনামের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন এবং রিসার্স অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড)। ইআরএফ-এর সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র‌্যাপিড-এর নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউছুফ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান ও র‌্যাপিড-এর চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক প্যালেন আলোচনায় অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাজেটকে ব্যবসা বান্ধব বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। আমরা ব্যবসা বান্ধব সরকার। ব্যবসায় প্রাধান্য দিতে হবে তা আমরা বুঝি। ব্যবসায়ীদের জন্য আমাদের দরজা খোলা রয়েছে। ভ্যাকসিনেশনে জোর দেয়া জরুরি বলে মনে করছেন প্রধান অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানও। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে সবাই কথা বলছেন। ভ্যাকসিন না নিলে, হার্ড ইমিউনিটি না হলে আমাদের ক্রেতারা এখানে আসবে না। এমন হলে আমরা কোথায় যাবো। আমার মনে হয়, এ বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সরকার এ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে বলে আমি মনে করি।
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশন উত্তরণ পরবর্তী সময়কে মাথায় রেখে বাজেটটি প্রণয়ন হওয়া দরকার ছিল। কয়েক বছর ধরেই আমাদের প্রাইভেট সেক্টরে বিনিয়োগ কম। পেটেন্ট সুবিধা হারালে আমাদের জন্য অনেক কিছুতে চ্যালেঞ্জ আসবে। কর সংক্রান্ত সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা অগ্রিম আয়কর বা এআইটি বাতিলের কথা বলেছিলাম। এটি ব্যবসায়ীদের মূলধন আটকে দেয়। কিন্তু সরকার কিছু পণ্যে ২০ শতাংশ এআইটি দিয়েছে। অনেক পণ্যে এডভান্স ভ্যাট রাখা হচ্ছে। এগুলো থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। ব্যক্তি বিনিয়োগ নিয়ে বিজিএমই সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমার কাছে মনে হয় ২০১৯-২০ সালে তেমন কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বিশেষ করে করেনার সময়ে তো বিনিয়োগই হয়নি। এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গার্মেন্টস খাতে নন কটন ফাইভার আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছেন ফারুক হাসান।
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাজেটটি এমন সময়ে হয়েছে যখন আমাদের সামনে করোনা সংকট থেকে উত্তোরণের চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রণোদনার পাশাপাশি ভ্যাকসিনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া শেষ না হলে ক্রেতারা আসবেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি। ভ্যাকসিন দিতে না পারলে আমাদের সঙ্গে ক্রেতাদেশগুলোর বিমান চলাচলও স্বাভাবিক থাকবে না। ফলে রপ্তানি বাজার হারানোর শঙ্কা রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে টিকাদান সম্পন্ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, আমরা ভ্যাকসিনেশনে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছি। এটি বাড়াতে হবে। ভ্যাকসিনেশনে পিছিয়ে থাকলে রপ্তানিতেও পিছিয়ে যেতে হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাকসিনের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ হাজার কোটি টাকা যথার্থ নয় জানিয়ে এ সংকট মোকাবেলায় থোক বরাদ্দের সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকাও ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন র‌্যাপিড চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনেশন না হলে আমাদেরকে বিভিন্ন দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। ফলে যতদ্রুত সম্ভব মানুষকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
এর আগে, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ড. এম আবু ইউছুফ বলেন, মহামারি মোকাবেলায় চ্যালেঞ্জ, এলডিসি উত্তরণ, এসডিজি গোল অর্জন এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সামনে রেখে বাজেট ঘোষিত হয়েছে। প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে  এই লক্ষ্যগুলো প্রণয়নের দরকার ছিল। তিনি বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ১ শতাংশের মতো। অষ্টম পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনায় এটি ২ শতাংশ করার কথা বলা রয়েছে। ফলে বাজেটে এর বাস্তবায়ন নেই। সিএমএইচসহ ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলের মতো জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল স্থাপন করা দরকার। আর তাই, বাজেটে অতিরিক্ত বরাদ্দ দরকার। স্বাভাবিক সময়ের মতোই ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভুল বার্তা দিচ্ছে কি না তা ভাবা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
প্যানেল আলোচনায় ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষন করার দরকার ছিল স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায়। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে তা হয়নি। বরাদ্দ আগের বছরের মতোই থেকেছে। এখন ভ্যাকসিনিশেনটা মূল চ্যালেঞ্জ। ভ্যাকসিনটা অতি জরুরি দরকার।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

বন্যার্তদের জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে অনুদান পাঠানোর সময় বেড়েছে
মির্জাগঞ্জে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত।
অনেক দাবির চাপে অন্তর্বর্তী সরকার;যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস
কোন দিকে যাচ্ছে এই বন্যা পরিস্থিতি, এর জন্য দায়ী কে?
সাত ব্যাংকেই ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ সালমান এফ রহমানের
ছাত্র-জনতার দখলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর

আরও খবর