Header Border

ঢাকা, রবিবার, ১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল) ২৪.৫৪°সে
শিরোনাম

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তিসহ নানা বাণিজ্য

*সময় সংবাদ লাইভ রির্পোটঃআতিকুর রহমান খান”। একসাথে পদবী ব্যবহার করেন দুটো। তার একটা প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অপরটি উপ-সহকারী প্রকৌশলী। পদ দুটোও আবার বৈধ নয়। প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ পদ সৃজন করে বহাল তবিয়তে ২০০৪ সাল থেকে। ক্ষমতার দাপটে এখন শত কোটি টাকার মালিক। আর মালিক হয়েছেন ভর্তি বাণিজ্যের মাধ্যমে। এই বাণিজ্য সম্ভব হয়েছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভর্তি বাণিজ্যের খবর বেশ ক‘বছর ধরেই আলোচনায়। কিন্তু প্রভাবশালীদের দাপটে সব আলোচনাই তলিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের নজরও এড়িয়েছে। এখন তৃতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদাধারী এই কর্মকর্তার প্রায় একশ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনেদেনের তথ্য পেয়ে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাই দুদকের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মকর্তার বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
জানা গেছে, আতিকুর রহমান খান প্রতিষ্ঠানটিতে ২০০৪ সালে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগ দেন। পাশাপাশি ২০১৫ সাল থেকে আতিক খান প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। এমপিওভুক্ত উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কোনো পদ নেই। অভিযোগ, অবৈধভাবে এই পদ সৃষ্টি করে ওই পদেও নিয়োগ নেন আতিক।
মতিঝিল আইডিয়ালে চাকরি নেয়ার পর আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে আতিকের। তার নাম এখন কোটিপতিদের তালিকায়। ঢাকায় একাধিক বাড়ি-ফ্ল্যাটের মালিক তিনি; ব্যবহার করেন দামি গাড়ি।
দুদক বলছে, দেশের ১৫টি ব্যাংকে আতিকুর রহমানের ৯৭টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব ব্যাংকে ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ১১০ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৯২ টাকা লেনদেন হয়েছে।
সামান্য বেতনের চাকরি করে আতিকের বিশাল অর্থ-সম্পদ অর্জনের বিষয়টি নজরে এসেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগেরও। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে তারা।
যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহীন আরা বেগম বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে সবকিছু বেরিয়ে আসবে।’
আতিকের অঢেল সম্পদের তদন্তে নেমেছে দুদক। তার বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে রোববার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে আবেদন করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের সহকারি পরিচালক মাহবুবুল আলম। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানকালে আতিক যাতে বিদেশে যেতে না পারেন সেজন্য আদালত তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে জানান দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।
আতিককে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অবৈধ ভর্তিসহ সব বাণিজ্যের হোতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে দুদকের অভিযোগে। এতে বলা হয়েছে, তিনটি ক্যাম্পাসের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর ড্রেস (পোশাক), ক্যান্টিন, লাইব্রেরি সবই বেনামে তার নিয়ন্ত্রণে। এমনকি স্কুলের সামনে ফুটপাতে শতাধিক দোকান বসিয়েও তিনি আয় করেন মোটা অঙ্কের টাকা। এ ছাড়া, প্রতিষ্ঠানে যত ধরনের কেনাকাটা, উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ হয় তার সবই করেন আতিক। দরপত্রেও অংশ নেয় নামে-বেনামে তারই প্রতিষ্ঠান। সেখানে চলে বড় ধরনের লুটপাট।
অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১২ বছরে প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বেশির ভাগ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং কর্মচারী নিয়োগে দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। এর বেশির ভাগই হয়েছে আতিকের মাধ্যমে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সকল শাখাকেই জিম্মি করে রেখেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট একজন কমকর্তা জানান, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও ভর্তি বাণিজ্য সিন্ডিকেটের পুরোটাই তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন। প্রতি বছর অবৈধভাবে ও অর্থের বিনিময়ে ভর্তি করিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন তিনি। ঢাকায় তার একাধিক বাড়ি-গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত করে রেখেছেন তিনি। আর এসবের সত্যতা এখন দুদকের তদন্তে বের হয়ে আসছে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা ছাত্রদলের
২০তম বিসিএস ফোরামের নতুন কমিটি : আহ্বায়ক জিয়াউদ্দিন,সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ্ আরেফ
আব্দুল্লাহ আরেফের অভিযানে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ক্যাশিয়ার রুহুল আমিন আটক!
অভ্যুত্থানের ৪ মাস পেরোতেই ঐক্যে ফাটলের সুর
হঠাৎ উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল, বিপাকে ক্রেতারা
চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ, মাংস ও সবজি

আরও খবর