সময় সংবাদ রিপোর্ট : রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর। বাণিজ্যিকভাবে চালুর আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন রুটিন পরিচালনার জন্য সম্প্রতি ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। তার আগে এককালীন এক হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে চেয়েছে কোম্পানিটি। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতাধীন এ কোম্পানির অধীনে চলবে মেট্রোরেল।এর আগে অর্থ বিভাগের মাধ্যমে তিন দফায় ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে মেট্রোরেল পরিচালনার কোম্পানিটি। এর মধ্যে প্রায় ২৩ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। ‘ইকুইটি’ হিসেবে এই টাকা ডিএমটিসিএলের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, অফিস ব্যবস্থাপনা, প্রশিক্ষণ, গাড়ি ক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি খাতে ব্যয় হয়ে থাকে।২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি টাকা, ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ১০ কোটি টাকা, ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর ১০ কোটি টাকা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। নতুন প্রস্তাব করা ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে মূল বেতন ১২ কোটি, ভাতা ৮ কোটি, সরবরাহ ও সেবা ৫ কোটি এবং সম্পদ সংগ্রহ ও ক্রয় বাবদ ১০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
তারা আরও বলেছে, কেবল যাত্রীর ভাড়ার টাকায় মেট্রোরেল পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বহন সম্ভব নয়। বাণিজ্যিকভাবে স্থান ভাড়ার মাধ্যমে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ মেটানোর চেষ্টা করা হবে। তাই নির্মাণ করতে হবে ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) হাব ও স্টেশন প্লাজা। তদুপরি মেট্রোরেল চালু হলে লোকসান কমানো সম্ভব নয়। তাই এককালীন এক হাজার কোটি টাকা চেয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। ডিএম টিসি এলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএএন ছিদ্দিক মন্ত্রণালয়কে জানান, মেট্রোরেল পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন রুটিন খরচ চাওয়া হয়েছে। এটি ব্যয় করা হবে পেইডআপ ক্যাপিটালের মাধ্যমে। আর এককালীন এক হাজার কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে ভর্তুকি বা অনুদান হিসেবে। কারণ মেট্রোরেল চালু হলেই শুরুতে অপারেশনাল খরচ বহন সহজ হবে না।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেট্রোরেল পরিচালনায় ভাড়ার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা ৪০ পয়সা প্রস্তাব করা হলেও জনগণের ‘সুবিধার্থে’ ভাড়ার হার পুনর্নির্ধারণের কাজ চলছে। তবে যাত্রীদের টিকিটের মূল্যের ওপর নির্ভরশীল না থেকে বিপণিবিতান করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বহনের সুবিধার্থে গড়ে তোলা হবে ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) হাব। এরই ধারাবাহিকতায় এমআরটি ৬-এর উত্তরা সেন্টার স্টেশনসংলগ্ন জমিতে নির্মাণ করা হবে টিওডি হাব। তাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে ২৮.৬১৭ একর ভূমি বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে এ জন্য ‘লে-আউট প্ল্যান’ প্রস্তুতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম টিওডি হাব।এ ছাড়াও বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট মোড ব্যবহার করে যাত্রীদের মেট্রোরেল স্টেশনে আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় ক্রমান্বয়ে থাকবে স্টেশন প্লাজা। প্রাথমিকভাবে উত্তরা, আগারগাঁও, ফার্মগেট ও কমলাপুর মেট্রোরেল স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় থাকবে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি স্টেশনের কনকোর্স লেভেল-জি’তে বাণিজ্যিক স্থান রাখা হবে। টিওডি হাব সরকারি অর্থায়ন, পিপিপি বা অন্য কোনো উৎসের ভিত্তিতে করা হতে পারে।