ডেইলি নিউজ ডেস্ক রিপোর্ট॥ পাকিস্তানের হাতে আটক নিজেদের বিমানবাহিনীর পাইলটকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল ভারত। তবে সেই দুশ্চিন্তা থেকে ভারত আপাতত মুক্তি পেল। কারণ শুক্রবার সেই পাইলটকে ফিরিয়ে দিচ্ছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বুধবার সকালে আকাশে লড়াই করে ভারতের দুটি বিমান গুলি করে ভূপাতিত করে তারা। এর একটি পড়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে, অন্যটি পড়ে ভারতীয় অংশে। যে বিমানটি পাকিস্তানের সীমানার মধ্যে ভূপাতিত হয় সেটার পাইলটকে আটক করে তারা। আটকের নাম অভিনন্দন বর্তমান। তিনি বিমানটির উইং কমান্ডার। বাড়ি চেন্নাইয়ে বলে খবর প্রকাশ করে বিবিসি।
যেভাবে ধরা হয় ভারতীয় পাইলটকে: পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বাসিন্দা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ রাজ্জাক চৌধুরী পাইলটকে কিভাবে ধরা হয় তার বর্ণনা দেন।
বুধবার সকালে দুটি যুদ্ধবিমানের লড়াইয়ের শব্দ শোনেন তিনি। একসময় তিনি দেখেন দুটি বিমানেই আগুন লেগে গিয়েছে। এর মধ্যে একটি বিমান দ্রুত নিচে নামতে থাকে। পরে সেটি রাজ্জাকের বাড়ির কিছু দূরে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। এ সময় তিনি প্যারাসুট নিয়ে একজনকে নামতে দেখেন। নিচে নেমে আসলে পাইলটটি দ্রুত একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। এ সময় তাকে ধরার জন্য স্থানীয় কয়েকজন তরুণ ছুটে যান।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ওই পাইলটের কাছে তখন পিস্তল ছিল। তিনি পিস্তলটি দিয়ে শূন্যে কয়েকটি গুলি করেন। এতে করে তরুণরা পাথর হাতে তুলে নেন। পাইলটকে অস্ত্র ফেলে দিতে বলেন তারা। কিন্তু তিনি তা করেননি। এসময় তারা পাইলটের পায়ে আঘাত করেন। উপায় না পেয়ে পাইলট তাকে মেরে না ফেলার আহ্বান জানান। এ সময় পাকিস্তানের সেনারা চলে আসে। পাইলটকে আটক করে তাদের হেফাজতে নিয়ে যায়। পরে তাকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে তুলে ভিমবার এলাকায় সেনা ক্যাম্পে নেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) দুইটি ভারতীয় যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে। পাইলটের রক্তমাখা ছবি প্রকাশ হলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। এদিকে প্রথম ভিডিওতে ওই পাইলটকে চোখ বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়। পরবর্তীতে আরেকটি ভিডিও আপলোড করা হয়, যেখানে তাকে চোখ খোলা অবস্থায় একটি কাপে চা পান করতে দেখা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, পাকিস্তানের এক সেনা কর্মকর্তা ভারতের পাইলটকে তার বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে পাইলট বলেন, তার বাড়ি দক্ষিণ ভারতে। তার নাম অভিনন্দন বর্তমান।
এবার পাকিস্তানের ওই সেনা কর্মকর্তা জানতে চান তিনি বিবাহিত কিনা। উত্তরে পাইলট বলেন, বিবাহিত। তবে যখন তাকে প্রশ্ন করা হয় ‘আপনার মিশন কি ছিল?’, তখন এর থেকে বেশি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান ওই পাইলট।
ভিডিওতে ভারতীয় পাইলট বলেন, পাকিস্তানি সেনারা আমাকে বিমান বিধ্বস্তের স্থান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এরপর তারা আমাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। আমি পাকিস্তানি সেনাদের ব্যবহারে মুগ্ধ। ভারতেরও উচিত এমন পথ অনুসরণ করা।
যিনি ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করেন: পাকিস্তানের স্কোয়াড্রন লিডার হাসান সিদ্দিকী গুলি করে ভারতের ওই যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করেন। তিনি করাচীর পাইলট। সফলভাবে অভিযান পরিচালনা করায় পাকিস্তানে তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন।