সময় সংবাদ রিপোর্ট: ১৯ ফেব্রয়ারী শনিবার সকাল ১১ ঘটিকায় রাজধানীর নড়াই নদীসহ চারটি খালের সীমানা পিলার স্থাপন করার দাবিতে মানববন্ধন ও খাল পরিদর্শন কর্মসূচী পালন করেছে নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন নোঙর বাংলাদেশ।
রজধানীর খিলগাঁও এলাকার ত্রিমোহনী গুদারাঘাট সেঁতুর উপর এই মানববন্ধন শেষে নদী দখল-দূষণ এবং ৪টি খাল পরিদর্শন করেছে নোঙর বাংলাদেশ এর নড়াই ইউনিট।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুমন শামস বলেন, এক সময় ঢাকার চারপাশের প্রধান চারটি নদী এ শহরে ৪৭টি খালের সাথে সংযুক্ত ছিল। সূত্রাপুর-লোহারপুল হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী, মোহাম্মদপুরের বছিলা হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী, উত্তরার আবদুল্লাহপুর ও উত্তরখান হয়ে তুরাগ নদ, খিলক্ষেত-ডুমনি হয়ে বালু নদী ও মানিকনগর হয়ে শীতলক্ষ্যা নদী।
বালু নদীে সাথে সংযুক্ত রাজধানীর নড়াই নদীর শাখা সূতিভোলা খাল (আফতাবনগর), জীরানী, গজারিয়া এবং দেব দোলাই খালের সীমানা পিলার না থাকার কারণে খালগুলো অবৈধ দখল-দূষণে এখন মৃত প্রায়
মানববন্ধন শেষে ত্রিমোহনী এলাকার জীরানী খাল, গজারিয়া খাল, দেব দোলাই খাল ও সূতিভোলা খালের (আফতাবনগর) বর্তমান চিত্র সরেজমিনে পরিদর্শনে উঠের আসে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ, খাল এবং নদী দখলের চিত্র।
নড়াই নদী সংযোগ খাল অনুসন্ধানে দেখা যায় এ এলাকায় মোট ৯ টি অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
১. ‘জুগ্গা খাল’ শুধুমাত্র এই খালটি সম্পূর্ণ ভরাট ও দখল হয়ে গেছে এবং তার অস্তিত্ব বিলীন, কারণ ইস্টার্ন হাউসিং বনশ্রী প্রকল্প করতে গিয়ে খাল টি দখল করে বড় বড় অট্টালিকা এবং প্রশস্ত রাস্তা করে রেখেছে। এক সময় এখানে যে একটি খাল ছিল তা বুঝার কোন উপায় নাই। খালটি মেরাদিয়া বাজারের পাশ দিয়ে সোজা মাদারটেক হয়ে জিরানী খালের সাথে সংযুক্ত ছিল।
২. ‘জিরানী খাল’ নড়াই নদী ত্রিমোহনী মুখ থেকে সোজা দক্ষিণ দিকে নন্দীপাড়া , মান্ডা, যাত্রাবাড়ী ধোলাইপাড় হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর সাথে সংযোগ ছিল, বর্তমানে খালটি দুই পাশ দিয়ে দখল-দূষণ জর্জরিত।
৩. দেব দুলাইখাল: নরাই নদী ত্রিমুনি মুখ সোজা পূর্বদিকে হয়ে বালু নদীর সাথে সংযোগ হয়েছে, খালটির বর্তমান চিত্র আশেপাশের বাড়িঘরের পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা এই খালের উপর ও দূষণে জর্জরিত এবং দুদিক থেকে দখল করে খালের সীমানা সরু হয়ে গেছে।
৪. গজারিয়া খাল: নরাই নদী দাসেরকান্দি এরিয়ার উত্তর দিকে খালটি প্রবাহমান আছে, বর্তমান অবস্থা সীমানা পিলার না থাকায় আশেপাশের দখল-বাণিজ্যে জর্জরিত, তবে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট হওয়ার কারণে পানি পরিশোধিত হয় ফলে স্বচ্ছ পানির অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
৫. ‘তাঁরা গাইরা খাল’: নড়াই নদীর দাসেরকান্দি এরিয়ার উত্তর দিক দিয়ে প্রবাহিত ছিল, বর্তমানে দখল বাণিজ্যে খালটি অস্তিত্ব মৃতপ্রায়, শুধুমাত্র খাল মুখটি দৃশ্যমান।
৬. ‘নাসিরাবাদ স্কুল খাল’: নাসিরাবাদ এরিয়ায় দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত ছিল, বর্তমানে দখল হয়ে খালটি এখন মৃত, তবে খাল মুখটি দৃশ্যমান।
৭. ‘বাবুর জায়গা খাল’: শুধুমাত্র খাল মুখটি দৃশ্যমান, দখল-বাণিজ্যে খালটি বর্তমানে মৃত। নড়াইল নদীর উত্তর দিক দিয়ে প্রবাহিত ছিল।
৮. ‘বটতলা খাল’: নড়াই নদী সংযোগ মুখটি দৃশ্যমান, বাকি অংশের অস্তিত্ব বিলীন দখল-বাণিজ্যে কারণে, খালটি মৃত।
৯. ‘সুতি ভোলা খাল-২’ (আফতাবনগর): নড়াই নদীর বনশ্রী এফ ব্লকের উল্টা দিকে গুদারাঘাট নামে পরিচিত, খালটি আফতাবনগরের মধ্য দিয়ে স্বদেশ প্রপার্টিজ হাউজিং প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে বালু নদীর সঙ্গে সংযোগ হয়েছে, খালটি অস্তিত্ব দৃশ্যমান কিন্তু সীমানা পিলার না থাকায় হাউসিং প্রকল্প গুলি দখল-বাণিজ্যে জর্জরিত, আশেপাশের সমস্ত পয়োনিষ্কাশন ময়লা-আবর্জনার পানি এই খালের মধ্যে পরে প্রতিনিয়ত, কিছু কিছু জায়গায় খালের অবস্থান ময়লা নালায় পরিণত হয়েছে।
পাশাপাশি বেগম সুফিয়া খানম ফাউন্ডেশন এর পক্ষে নড়াই নদীর মাঝিদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন সংগঠনের সদস্যরা।
এ সময় উপস্তিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জনাব ফজলে সানি, নড়াই ইউনিটের আহবায়ক মো. ওমর ফারুক, সদস্য সচিব রিপন শামস, ইউনিট সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, মো. লোকমান হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম আমিন, শাজাহান চৌধুরী, মো. ইকরামুল হাসান, আশিকুজ্জামান, মো. আবুল বাশার, জসিমউদ্দন ইউসুফ, এস এম ওয়াজিউল্লাহ, মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, সরকার সজীব, বাহারুল ইসলাম টিটু, আহসান হাবিব দিনারসহ আরো অনেকে।