সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট ঃ লকডাউনের ঘোষণা আসার পর রাজধানীর বাস এবং লঞ্চ টার্মিনালে বাড়ি ফেরা মানুষের উপচে-পড়া ভিড় দেখা গেছে। টিকিট কাউন্টারগুলো যাত্রীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। কোথাও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শনিবার দুপুরে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা আসার পর থেকে নগরীর প্রতিটি বাস কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। ভিড় বাড়তে থাকে লঞ্চটার্মিনালেও। বাস এবং লঞ্চ টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারে দেখা গেছে উপচে-পড়া ভিড়। গাবতলি কাউন্টারে মানুষের ভিড় শামাল দিতে পারছিলেন না কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা।
টার্মিনালের পুর্বাশা পরিবহনের কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা নাইমুল ইসলাম সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, গাবতলির প্রতিটি কাউন্টারে প্রচণ্ড ভিড়। মানুষকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের কাউন্টারেও দীর্ঘ লাইন। সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, লকডাউনের ঘোষণা আসার পরপরই মানুষ টিকিটের জন্য ফোন করতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পরেই কাউন্টারে এসে ভিড় করতে থাকে। অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কারণে আসন দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
একই অবস্থা সায়দাবাদ টার্মিনালেও। জানতে চাইলে হানিফ পরিবহনের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা ইকবাল সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, আমাদের কাউন্টারে কোনও অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয় না। এরপরও অন্যদিনের চেয়ে এখন যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি। বাস আসার আগেই সব আসন বিক্রি হয়ে যায়। যেখানে অন্য সময় কিছু আসন ফাঁকাও যেতো।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এক নেতা সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, লকডাউনের কথা শুনে অনেকেই বাড়ি যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। যে কারণে অন্য সময়ের চেয়ে কাউন্টারে ভিড় ভাড়ার খবর শুনতে পাচ্ছি।
যাত্রীরা জানান, আগামী সোমবার থেকে লকডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। তাই এখন বাড়ি না গেলে রাজধানীতে আটকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগেভাগে বাড়ি চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
খবর পাওয়া গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস, সিএনজি, রিকশায় মহাখালী বাস টার্মিনালে যাচ্ছেন ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুরসহ উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। নির্ধারিত ভাড়া দিয়ে টিকিট কেটে নিজ গন্তব্যে বাসে উঠছেন তারা। এর মধ্যে এনা পরিবহনের কাউন্টারের সামনে বেশি ভিড় দেখা যায়।
মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় একটি মেসে থাকেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া জামাল উদ্দিন। লকডাউন ঘোষণার পরপরই ব্যাগ গুছিয়ে তিনি মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে চলে আসেন। যাবেন ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে। জামাল উদ্দিন সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, তিনি দুটি টিউশনি করে ঢাকা শহরে নিজের খরচ চালান। কিন্তু লকডাউনে সেই টিউশনিতে যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই আগেভাগে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন তিনি।
এদিকে লকডাউনের খবরে লঞ্চঘাটেও বাড়ি ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়ের খবর পাওয়া গেছে। যাত্রীরা বলছেন, লকডাউন শুরু হলে বিপাকে পড়বেন তারা। একারণে আগেই ঢাকা ছাড়ছেন। সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে গতকাল হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা গেছে। তাদের অনেকেই নিম্ন এবং নিম্ন মধ্য আয়ের মানুষ। তাদের আশংকা, জীবিকা নিয়ে বিপদে পড়বেন। এমনকি তখন বাড়িতেও ফিরতে সমস্যা হবে।