Header Border

ঢাকা, শনিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল) ২৪.৫২°সে
শিরোনাম
প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা নিয়ে সেনা প্রধানের সাক্ষাৎ সেনাবাহিনীর এই অভিযানে একজন অপরাধীও যেন বাদ না যায় ! সেনাবাহিনীর এই অভিযানে একজন অপরাধীও যেন বাদ না যায় ! অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও সময় দিতে চায় বিশ্ব সম্প্রদায় ! ফিলিস্তিনকে সমর্থন ও ইসরাইলকে বয়কটের আহ্বান এরদোগানের আজ ঢাকায় সমাবেশ,৯ মহানগরে শোভাযাত্রা;নতুন বার্তা দেবেন তারেক রহমান মোজাম্মেল-শাহরিয়ার-শ্যামল ৭ দিনের রিমান্ডে ডিসি নিয়োগ নিয়ে আজও বিক্ষোভ সচিবালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কাছে ৯টি দফা দাবি জানিয়েছে নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর ট্রাস্ট’। ভারত পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে প্রভুত্বের রাজনীতি করেছে: মির্জা ফখরুল

সেনাবাহিনীর এই অভিযানে একজন অপরাধীও যেন বাদ না যায় !

সম্পাদকীয় কলামঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা আগামী ৬০ দিনের জন্য সারাদেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

এতে আরও বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেটরা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধ বিষয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি ছাড়া গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা সেনাবাহিনীর ছিল না৷ কিন্তু এখন তারা যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। কারণ ফৌজদারি কার্যবিধির ৬৫ ধারার অধীনে তারা তাদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে৷

গেল সরকারের আমলে রাজনীতিক, আমলা, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশায় থাকা কিছু সুযোগসন্ধানী দুর্নীতিবাজ অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সাধারণ জনতার দাবি ওঠে, অপকর্মে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।  মন্ত্রণালয় ও জেলাভিত্তিক টাস্কফোর্স গঠন করে বর্তমানে দুর্নীতিবিরোধী এই অভিযানের ছক করা হয়েছে। আরও জানা যায়, ১-১১ এর সরকারের আদলে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যৌথ বাহিনীর একাধিক অফিস করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। এরপরই আত্মগোপনে চলে যান সাবেক মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগপন্থি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। বেগতিক অবস্থা টের পেয়ে সরকার পতনের আগে ও পরে দেশ ছাড়ার সুযোগও নিয়েছেন অনেকেই। তবে বেশির ভাগ মন্ত্রী-এমপি, সুবিধাভোগী আমলা ও ব্যবসায়ী দেশ ছাড়তে পারেননি। এখন পলাতকদের ধরতেও অভিযানের ছক চূড়ান্ত করা হয়েছে।

দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও কালোটাকা উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর এ অভিযানের উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য। আমরা মনে করি, এ অভিযানের মাধ্যমে দলমতনির্বিশেষে সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সবার কাছে বার্তা পৌঁছায়, অপরাধ করলে কেউ পার পাবে না।দেখার বিষয়, দুর্নীতিবিরোধী এ অভিযান সফল হয় কি না। আগের অভিযানগুলোয় দুর্নীতিবাজরা যেমন ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে গেছে, এবার তারা সেই সুযোগ পাবে কি না।

গেল সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট দুর্নীতিবাজরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশে তো অগাধ সম্পদের মালিক বনে গেছে। অনেকে আবার পরিবারকে বিভিন্ন দেশে স্থায়ীও করিয়েছেন। মালয়েশিয়া, ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইউএই ইত্যাদি দেশে কয়েক হাজার বাংলাদেশি বাড়ি-ফ্ল্যাট এবং বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা লগ্নি করেছেন। ইতঃপূর্বে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুর্নীতিবাজদের এসব অপকর্মের তথ্য উঠে এসেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের মধ্য দিয়ে দেশে লুটপাটের যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তা রাষ্ট্রের মূল ভিত দুর্বল করে দিয়েছে। দেশে দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপক বিস্তার এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঘাটতির কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা প্রতিরোধে গেল সরকারের আমলে কার্যকর ও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দূরে থাক, বরং সমর্থন জোগাতে দেখা গেছে। এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব দুষ্কর্মকারীকে আইনের আওতায় এনে অবৈধ অর্থসম্পদ উদ্ধারে সফল হবে, এটাই প্রত্যাশা।

শুরু হওয়া এই অভিযানে কীভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হবে এবং এর ফলাফল কী হতে পারে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে কৌতূহল এবং নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। এবারের অভিযান ২০০৭ সালের মতো করে চালানো হবে নাকি নতুনত্ব কিছু থাকবে, সেই প্রশ্নও আছে কারও কারও।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কোস্টগার্ড এবং র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‍্যাবও এই অভিযানে অংশগ্রহণ করবে। সব বাহিনী একসঙ্গে সমন্বয় করে সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে দেশব্যাপী স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবে। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও এর সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা। বিশেষ করে, সম্প্রতি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রসমূহের মালিকদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্সধারীদের মধ্যে অনেকেই নির্ধারিত সময়ে তাদের অস্ত্র জমা দেননি। গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল যে, ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যারা বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন, তাদের অস্ত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু অনেকেই এই নির্দেশ পালন করেননি। পুলিশ জানিয়েছে, তাদেরকে এই অভিযানে গ্রেফতার করা হবে। এছাড়া, যারা অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে সাম্প্রতিক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তাদেরও ধরার জন্য বিশেষ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এলাকাভিত্তিক এই তালিকা ধরে অভিযান পরিচালিত হবে, যেখানে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনাগুলো এখনো মানুষের মনে বিরাজ করছে। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে যেসব ব্যক্তিরা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছেন, তাদের শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে বলে আভাস মিলেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম জানান,মঙ্গলবার সব বৈধ এবং অবৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। রাত ১২টা থেকে শুরু হবে যৌথ বাহিনীর অভিযান। মূলত অবৈধ অস্ত্র এবং মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, মাদক সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি এবং মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী বাহিনীসমূহের প্রাথমিক লক্ষ্য হবে অবৈধ অস্ত্র এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যৌথ বাহিনীর এই অভিজান দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নতুন দিক নির্দেশনা তৈরি করবে। বর্তমান সময়ে দেশে যে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে, তা নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনীর এই অভিযানের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।

এই অভিযান কতটা সফল হবে এবং এর প্রভাব দেশের স্থিতিশীলতায় কতটা ইতিবাচক হবে, তা আগামী কিছুদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হবে। সাধারণ জনগণ এখন চেয়ে আছে যে, এই যৌথ বাহিনীর অভিযান দেশের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।সাধারণ জনগণের চাওয়া সেনাবাহিনীর  এ অভিযানে একজন অপরাধীও যেন বাদ না যায় !

মোঃ জয়নুল আবেদীন
সম্পাদক-সময় সংবাদ Live

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা নিয়ে সেনা প্রধানের সাক্ষাৎ
সেনাবাহিনীর এই অভিযানে একজন অপরাধীও যেন বাদ না যায় !
অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও সময় দিতে চায় বিশ্ব সম্প্রদায় !
ফিলিস্তিনকে সমর্থন ও ইসরাইলকে বয়কটের আহ্বান এরদোগানের
আজ ঢাকায় সমাবেশ,৯ মহানগরে শোভাযাত্রা;নতুন বার্তা দেবেন তারেক রহমান
মোজাম্মেল-শাহরিয়ার-শ্যামল ৭ দিনের রিমান্ডে

আরও খবর