সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট: করোনার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে সংক্রমণ অনুযায়ী রেড-গ্রিন জোন ম্যাপিং করার পরামর্শ দিয়েছেন এক বিশেষজ্ঞ। সারাদেশে একযোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খুলে গ্রিন জোনে আগে খোলার পরামর্শ তার।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে কয়েক দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। প্রায় ছয় মাস প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া বন্ধ সব স্তরেরশিক্ষার্থীর। প্রায় ৫ কোটি শিক্ষার্থী এখন ঘরবন্দি।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন জানান, সেপ্টেম্বর মাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলার মতো পরিবেশ এখনো হয়নি। তিনি বলেন, এখনো ২০-২২ শতাংশ শনাক্ত হচ্ছে (নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার)। স্কুল খুললে অভিভাবকরা স্কুলে চলে আসবেন। তাদের আমরা ঝুঁঁকির মধ্যে ফেলব কেন? সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। আমরা মনে করছি, আসলে তো এখনো পরিবেশ তৈরি হয়নি।
সচিব বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কিছু কিছু দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর আবার সেগুলো বন্ধ করে দিতে হয়েছে। সেজন্য আমরা মনে করছি আমাদের বাচ্চাদের ঝুঁঁকির মধ্যে না ফেলাটাই সমীচীন হবে। সেজন্য আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দুই মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেব স্কুল কখন খোলা যায়।
জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার পর কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করা হবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সেই গাইডলাইন তৈরির কাজ শুরু করছে। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুসরণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে দেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তের আগে সরকারকে মহামারী সংক্রমণ অনুযায়ী রেড-গ্রিন জোন ম্যাপিং করতে হবে। সারাদেশে একযোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খুলে গ্রিন জোনে আগে খোলা যেতে পারে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহাবুব বলেন, করোনা সংক্রমণ হ্রাস না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আগের মতো ক্লাসে নেওয়া যাবে না। এখন টেলিভিশনে পাঠদান করা হচ্ছে, আমরা বাড়িতে পড়ালেখার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার আগে কিছু নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার একটি গাইডলাইন করে দেওয়া হয়েছে। সরকারিগুলো নিজ নিজ কৌশল অবলম্বন করবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক স্তরের সাময়িক পরীক্ষা, একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষ চূড়ান্ত পরীক্ষা, এইচএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনার্স, মাস্টার্সের বিভিন্ন সেমিস্টার এবং ফাইনাল পরীক্ষাও যথাসময়ে নেওয়া যায়নি। তবে সব স্তরে অনলাইন পাঠদান চলছে। স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হয়েছে রেডিও ও টেলিভিশনে পাঠদান, অনলাইন ক্লাস।