প্রশ্ন উঠেছে স্বাস্থ্য বিভাগের টাকা ব্যয়ের সামর্থ্য নিয়েই। সমীক্ষা না করেই মন্ত্রণালয়ের তড়িঘড়ি করে বাজেট প্রস্তাব করাকেই এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন খাতে ১১ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১১ মাসে ব্যয় হয়েছে মাত্র দুই হাজার ৫১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ৮০ ভাগ অর্থ খরচই হয়নি।
সাবেক সভাপতি,বিএমএ অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব বলেন,’খরচ না হওয়াটা অদক্ষতা আর সক্ষমতার একটা সংমিশ্রন। মন্ত্রণালয়ের অতো সময় নাই যে, প্রতিটি কম্পোনেস্টসের সাথে বসে তারা এগুলো করতে পারবে। তারা একটা মিটিং করে বাজেট দিয়ে দেয়।’
করোনাকালে অগ্রাধিকারভিত্তিতে স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বেশি ৯৫ শতাংশ অর্থ ছাড় করা হয়েছে। অথচ বড় বরাদ্দ ছাড় করা ১৫ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এডিপি বাস্তবায়নে সবার পেছনে রয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আর মোট ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে ৩৮তম অবস্থানে রয়েছে এই মন্ত্রণালয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন,’একটা বদনাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আছে, সেটা হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বেশি প্রজেক্ট একনেকে যায় না। অন্য মন্ত্রণালয়ের প্রচুর প্রজেক্ট কিন্তু একনেকে যায় এবং সেগুলো পাশ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এই কাজ করতে হবে যাতে, প্রকল্প প্রনয়ণের কাজটা শেষ করে এপ্রুভালটা পেতে পারে।’
স্বাস্থ্যখাতে কেনাকাটায় হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাই সারাদেশে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তারা কেনাকাটার ঝুঁকি নিতে চাননি। বিএমএ সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব বলেন,’উপজেলা লেভেলে ১০০ বেডের হাসপাতাল, ৫০ বেডের হাসপাতাল এভাবে কিন্তু বাজেট তারা দেয়, এটা নিজ বেজ করতে হয়। তবে এটা এখানে নেই।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অর্থ ব্যয় না হওয়ার পেছনে সরকারের পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করে সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। সেই সাথে করোনার বাজেট আলাদা রাখার পরামর্শ তাদের।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা বিভাগের উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আগামী অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ১৭ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এই দুই বিভাগের পরিচালন ব্যয়ও কিছুটা বাড়িয়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যখাত বাজেটে বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে ৩২ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। গত বছর স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।
সময় সংবাদ লাইভ।