সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট: ইসমাঈল ইমু : দৃশ্যমান উপসর্গ নেই, কিন্তু নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পজিটিভ এসেছে। অথচ চাকরি বাঁচাতে বা অন্য প্রয়োজনে দরকার নেগেটিভ রিপোর্ট। আবার অফিস-আদালতে যোগদান করবেন না, অথবা ভ্রমণে যাবেন কিংবা সরকারি ছুটি ও বিভিন্ন প্রকার সুযোগ-সুবিধার আশা করছেন, এমন ব্যক্তিরা চান করোনা পজিটিভ রিপোর্ট।
এই দুই ধরনের অসাধু মানুষেরই চাহিদা মেটাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জালিয়াত চক্র। যারা টাকার বিনিময়ে করোনার নেগেটিভ বা পজিটিভ রিপোর্ট বা সনদপত্র দেয়ার ফাঁদ পেতে বসেছে। চাহিদা অনুযায়ী যার যেমন দরকার- নেগেটিভ অথবা পজিটিভ রিপোর্ট, মাত্র ৫-৬ হাজার টাকা দিলেই মুগদা জেনারেল হাসপাতালের প্যাডে দেয়া হচ্ছে ভুয়া সনদ।
সোমবার রাজধানীর মুগদা এলাকা থেকে এমন বিপুল পরিমাণ ভুয়া সনদপত্রসহ জালিয়াত চক্রের চারজনকে গ্রেফতারের পর এসব কথা জানিয়েছে র্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফজল হক (৪০), শরিফ হোসেন (৩২), জামশেদ (৩০) এবং লিয়াকত আলী (৪৩)। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় শ’খানেক করোনার ভুয়া সনদপত্র, দুটি কম্পিউটার, দুটি প্রিন্টার এবং দুটি স্ক্যানার উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল রকিবুল হাসান সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সীমিত পরিসরে সকল প্রকার অফিস-আদালত খুলে দেয়া হয়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে করোনার দৃশ্যমান উপসর্গবিহীন ব্যক্তিরা করোনা টেস্টে পজিটিভ হওয়ার পরও ভুয়া নেগেটিভ সনদ নিয়ে বিভিন্ন অফিস-আদালতে যোগদানসহ বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করছেন এবং অনেকেই আবার সরকারি ছুটি ও বিভিন্ন প্রকার সুযোগ সুবিধা পেতে ভুয়া পজিটিভ সনদ নিচ্ছেন।
টাকার বিনিময়ে ওই ভুয়া নেগেটিভ-পজিটিভ সনদ দিচ্ছে এ ধরনের জালিয়াত চক্র। তিনি বলেন, ভুয়া সনদপত্রের রমরমা ব্যবসার ফাঁদ পাতার বিষয়টি র্যাব-৩ গোয়েন্দা সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরে রাজধানীতে নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় মুগদা এলাকা থেকে করোনার ভুয়া সনদ প্রস্তুতকারী এবং বিক্রয়কারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে অংশ নেয়া এক কর্মকর্তা সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, ওই জালিয়াত চক্রটি দেড় শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৫-৬ হাজার করে টাকা নিয়ে করোনার ভুয়া নেগেটিভ ও পজিটিভ সনদ দিয়েছে। আরও শতাধিক লোককে ভুয়া সনদ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরও পাঁচ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়েছে চক্রটি। চক্রের সদস্যরা জানিয়েছে, মুগদা হাসপাতাল থেকে দেয়া করোনা রোগীর রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করে তা স্ক্যান করে সেখানে নাম বসিয়ে বিক্রি করে আসছিল। যাদের নেগেটিভ সনদ দরকার তাদের নেগেটিভ বা যাদের পজিটিভ সনদ দরকার তাদের তাই দিচ্ছিল টাকার বিনিময়ে।