সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট: বাংলাদেশকে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থা বিভিন্ন সময়ে উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়নের জন্য যে অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার ৪ হাজার ৯৫৪ কোটি ডলার বা ৪ লাখ ২১ হাজার ৯০ কোটি টাকা পাইপলাইনে আটকে আছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। দাতাদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী অনেক ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুত এই অর্থের সার্ভিস চার্জও পরিশোধ করতে হচ্ছে।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। আর গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে দাতাদের কাছ থেকে পাইপলাইনে পড়ে থাকা অর্থ বাংলাদেশের এক বছরের বাজেটের প্রায় কাছাকাছি। গত পাঁচ বছর ধরে দাতাদের সঙ্গে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার কোটি ডলার করে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। অথচ ছাড় করতে পেরেছে মাত্র ৫ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে বেশি পরিমাণে চুক্তি স্বাক্ষর করার ফলে প্রতিবছর নতুন করে পাইপলাইনে যুক্ত হচ্ছে প্রায় ৩ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার। এসব মিলে এই আকার প্রতিবছরই বড় হচ্ছে।
ইআরডির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ জুন বা গত ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত দাতা দেশ ও সংস্থার সঙ্গে চুক্তির অর্থ থেকে ৪ হাজার ৯৫৪ কোটি ডলার পাইপলাইনে আটকে আছে। গেল অর্থবছর সরকার দাতাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে ৯৫৫ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের। সেখানে ছাড় হয়েছে ৭২৭ কোটি ১৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছরে যত প্রতিশ্রুতি আদায় করা গেছে তার চেয়ে ২২৮ কোটি ২৫ লাখ ডলার কম ছাড় হয়েছে। ফলে ওই অর্থ দাতাদের কাছে পুঞ্জীভূত পাওনার খাতায় যুক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে ইআরডির ফরেন এইড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস (ফাবা) অণুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব পিয়ার মোহাম্মদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থ ছাড় করতে ইআরডি কাজ করছে। এ ছাড়া বাস্তবায়নকারী সংস্থা, ইআরডি এবং দাতা সংস্থা মিলে প্রতি তিন মাস পরপর ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করে থাকে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এই পাইপলাইনের অর্থ ব্যয়ে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে আমাদের কাছে তথ্য চেয়েছে। এ বিষয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট লোকবল করোনায় আক্রান্ত হলে দাতারা আপত্তি করতে পারেন। বৈদেশিক সহায়তা বেশি, এমন প্রকল্প বাছাই করে বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে সরকারকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও পরামর্শ দেন তিনি।