Header Border

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ৩০.৯৬°সে

১০ মাসে সরকার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ ৫৮ হাজার কোটি টাকা

সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট:করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের রাজস্ব আদায় তলানিতে নেমে গেছে। সঞ্চয়পত্র থেকেও কাঙ্ক্ষিত ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে ব্যয় ঠিক রাখতে সরকারের ব্যাংকব্যবস্থার ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যাচ্ছে। সরকার বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুধু গত মাসে (২৭ এপ্রিল পর্যন্ত) ঋণ নিয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। আর দুই সপ্তাহে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। এ সুবাদে আগের ঋণ সমন্বয় করার পর চলতি অর্থবছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ বেড়ে হয়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত মাসের চেয়ে চলতি মে মাসে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে বেশি হারে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শুধু নিট ঋণ নেয়ারই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকা। তবে, রাজস্ব আদায় ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ গ্রহণ না বাড়লে চলতি মাসে এ ঋণগ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা বেড়ে যাবে বলে আভাস দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় এক মাস যাবৎ সাধারণ ছুটি চলছে। ব্যাংকগুলো সীমিত পরিসরে লেনদেন করছে। দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ব্যাংক লেনদেন হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে রাজস্ব আদায় নেই বললেই চলে। আবার বিভিন্ন ইউটিলিটি বিলও কেউ পরিশোধ করছে না। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বিল আদায় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। ৩১ মে পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিলের ওপর জরিমানা মওকুফ করা হয়েছে। এ দিকে রাজস্ব আদায় কমে যাওয়ার পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র থেকেও ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজস্ব আদায় কমে যাওয়া ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ গ্রহণ কমে গেলেও সরকারের রাজস্ব ব্যয় কমেনি। বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের জন্য গত মাসের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে কোনো প্রয়োজনে সরকার ৬ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারে। কিন্তু ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ঋণ নেয়া হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। এ কারণে ২৮ এপ্রিল ৫ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ওই নিলামে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়। ফলে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ঋণ সমন্বয় করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক সরকার নিট ঋণ নিয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। আবার ২১ এপ্রিল ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিনও ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ঋণ তুলে নেয় সরকার।

সব মিলে ৩০ এপ্রিল শেষে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে সরকার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে নিট ঋণ গ্রহণ করেছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত মাসে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণের এ হার আরো বেড়ে যেত। কিন্তু বিভিন্ন করপোরেশনের যে উদ্বৃত্ত তহবিল ছিল তা ব্যয় করতে শুরু করছে সরকার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনসহ (বিপিসি) আরো কয়েকটি করপোরেশনের উদ্বৃত্ত তহবিল সরকার ব্যয় করেছে। এ কারণেই ঋণের মাত্রা ৫৮ হাজার কোটি টাকায় ঠেকেছে। অন্যথায় ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ আরো বেড়ে যেত।

বাংলাদেশশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চলতি মে মাসে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে বেশি হারে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বাভাবিক কর্মসূচি অনুযায়ী চলতি মে মাসে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ৭ হাজার ১৩ কোটি টাকার নিট ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এ ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা আরো বাড়তে পারে। সবকিছু নির্ভর করছে রাজস্ব আদায় ও বিদেশী ঋণ প্রাপ্তির ওপর। রাজস্ব আদায় বাড়লে ও সেই সাথে কাঙ্ক্ষিত হারে বিদেশী ঋণ পাওয়া গেলে মে মাসের ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে না। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে রাজস্ব আদায় বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু সরকারের উন্নয়নব্যয় কিছু কাটছাঁট করা লাগতে পারে। কিন্তু রাজস্ব ব্যয় কোনোভাবেই কমানো সম্ভব হবে না। এ কারণে বাধ্য হয়েই ব্যাংকব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীলতা বেড়ে যাবে। সেই ক্ষেত্রে বেশি হারে সরকারের ঋণের জোগান দিতে হলে করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে তা বিতরণ করা ব্যাংকগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
থাইল্যান্ড গেলেন প্রধানমন্ত্রী
তাপদাহে হিট অ্যালার্টের মেয়াদ আরও বাড়াল আবহাওয়া অফিস
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়াল সরকার
উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা
সব বিরোধী দলের উপজেলা নির্বাচন বর্জন

আরও খবর