Header Border

ঢাকা, শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ৩৬.৯৬°সে

তিন সংস্থা সক্রিয়, তবু জলাবদ্ধতার আশঙ্কা

সময় সংবাদ রিপোর্টঃ এবারও জলাবদ্ধতায় বুক পানিতে ডুববে চট্টগ্রাম চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর এমন মন্তব্যের পর ঢাকঢোল পিটিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নেতারা বলেছেন, এবারের বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা হবে না। কিন্তু বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতায় নগারবাসীর শঙ্কা কাটছেই না। অথচ জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারি তিন সংস্থা সিডিএ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আলাদাভাবে কাজ করছে।

চসিক কয়েক বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর খালগুলো পরিষ্কারের কাজ করত। কিন্তু ২০১৭ সালে সরকার চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর চসিকের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এই কাজে চসিক ব্যয় করত বছরে ১০ থেকে ১৬ কোটি টাকা। তিন বছর মেয়াদে হাতে নেওয়া প্রকল্পটির কাজ ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সিডিএ সে প্রকল্প পুরোদমে শুরু করে ২০১৯ সালে। যুক্ত করে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডকে।

গত ১ মে চসিক মেয়র বলেন, এবারও শঙ্কা আছে জলাবদ্ধতার। বুক পানিতে ডুববে নগরীর নিচু এলাকাগুলো। তবে সিডিএর চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেছেন, এবার আর জলাবদ্ধতা হবে না। সিডিএ যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে তার কাজ ৭৬ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে। সব০ খালের মুখের বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। নগরীর অনেক খাল খনন ও সীমানা দেওয়াল নির্মাণ করা হলেও প্রধান খাল চাক্তাই খালের খনন কাজ শেষ করতে পারেনি সিডিএ।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএর পাশাপাশি চসিক এবং পাউবো আলাদা দুটি প্রকল্প গ্রহণ করে। চসিক বারইয়াপাড়া খাল খননের যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেটি ১৩৬২ কোটি টাকার। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৬২০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে সিডিএর প্রকল্পটির কাজ ৭৬ শতাংশ শেষ হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্র জানায়, ভূমি অধিগ্রহণের টাকা না পেয়ে স্থানীয়রা খাল খননে বাধা দিয়েই চলেছে। ফলে চসিকের খাল খনন প্রকল্প এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম নগর পানিতে

তলিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ভারি বর্ষণের সময় খাল দিয়ে পানি বের হতে না পারা। ওই সময় কর্ণফুলীতে জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে যায়। উল্টো কর্ণফুলী থেকে পানি নগরীতে প্রবেশ করে। এভাবেই নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এই সমস্যা নিরসনে কর্ণফুলীর সঙ্গে যুক্ত খালগুলোর মুখে ৪০টি স্লুইসগেট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় সিডিএ ও পাউবোর প্রকল্পে। এর মধ্যে সিডিএ নির্মাণ করছে ১৭টি, আর পাউবো ২৩টি। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সিডিএ বেশির ভাগ স্লুইসগেটের নির্মাণ কাজ শেষ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনোটিই শেষ হয়নি।

দেখা যায়, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হলেও বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের পানি কর্ণফুলী নদী হয়ে বিভিন্ন খালে পড়ে। অনেক সময় খাল উপচে তা আশপাশের এলাকা প্লাবিত করে। নগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা ও হালিশহরে বৃষ্টি না হওয়া সত্ত্বেও কেবল জোয়ারের পানিতে এতদিন তলিয়ে যেত। তবে এ বছর মহেশখালের মুখে স্লুইসগেট চালু করায় এখন পর্যন্ত ওই এলাকায় সাগরের জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারেনি। ৩৪ ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদুর রহমান বলেন, কর্নফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত অন্য খালগুলো দিয়েও এবার আর প্রবেশ করবে না।

সিডিএর চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, সিটি করপোরেশনের কাজ হলো ছোটখাটো নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা। সেটা তারা না করার কারণে অনেক এলাকার পানি এসব নালা দিয়ে খালে পড়তে পারছে না।

চসিকের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করছি। তারপরও অনেকেই খালে আবর্জনা ফেলছে। এতে খননকৃত খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ময়লা ফেলা বন্ধ না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের পরিচালক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ব্রিগেড কমান্ডের লে. কর্নেল মোহাম্মদ শাহা আলী বলেন, খালে বড় বড় গাছ, কম্বলের মতো জিনিস ফেলার কারণে সরবরাহ লাইনে সেগুলো আটকে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার আরেকটি কারণ হলো অপরিকল্পিত নগরায়ণ। নগরীর ১৮ শতাংশ নিচু জায়গা আছে যেগুলো জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়। খালগুলো অবৈধ দখলদার মুক্ত ও খনন করার পর ১৭৬ কিলোমিটার রিটেইনিং দেওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। ১৮টি ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে শহরকে জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে হলে এক হাজার ৩০০ কিলোমিটার ড্রেনও সমানে পরিষ্কার রাখতে হবে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
থাইল্যান্ড গেলেন প্রধানমন্ত্রী
তাপদাহে হিট অ্যালার্টের মেয়াদ আরও বাড়াল আবহাওয়া অফিস
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়াল সরকার
উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা
সব বিরোধী দলের উপজেলা নির্বাচন বর্জন

আরও খবর