Header Border

ঢাকা, শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ৩৭.৯৬°সে

ভ্যাকসিন বিড়ম্বনায় বিশ্ব, ধনী দেশগুলোই করোনার টিকা নিশ্চিত করবে

সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্টঃ  ভারত সরকার সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন রপ্তানিতে  নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে । এর অর্থ হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি বিধি নিষেধের জন্য অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোতে পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে না। এর ফলে বাংলাদেশসহ অনেক দেশের জনগণের কাছে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন পৌঁছতে অন্তত ৪ থেকে ৫ মাস দেরি হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশ অথবা অন্য যেকোনো দেশ অরক্ষিত থাকলে মহামারির প্রভাব অন্য সকল দেশের ওপরই পড়বে। প্রথম ধাক্কাটা সন্দেহাতীতভাবে নিকট প্রতিবেশীর ওপরেই আসবে।
ভারত সরকারের ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত অমানবিক, অনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণে যে অনিশ্চয়তা নেমে আসলো তার দায় দায়িত্ব ভারতের বর্তমান সরকারকেই নিতে হবে এবং সেটা ইতিহাসের পাতাতেও একটি কালো সিদ্ধান্ত হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. জিয়া উদ্দিন হায়দার  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া প্রতিক্রিয়া বলেছেন, ভারতের ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত জনস্বাস্থ্য বিরোধী। ভারত এবং বিশ্বের সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভারত সরকারের জনস্বাস্থ্য বিরোধী এই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
এদিকে বাংলাদেশ যথাসময়েই কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পাবে বলে জানিয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের বাংলাদেশি অংশীদার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল। বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা বলেন, ‘আমরা যা বুঝতে পারছি তা হলো, ওই বিবৃতিটি সর্বজনীন। আমরা বিশ্বাস করি যে, আমরা অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছি এবং যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাব।’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন ভারতে উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের ভারতীয় সংস্করণ ‘কোভিশিল্ড’ চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া পর এটির তিন কোটি ডোজ সংগ্রহের জন্য গত ৫ নভেম্বর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে সরকার।
এদিকে করোনার ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার খবরে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। তারা সত্যিই এধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কি না, দিলে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আসবে কবে- এমন প্রশ্ন ঘুরপাঁক খাচ্ছে সবার মনে। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়া অঞ্চলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের উৎপাদনকারী সিরাম ইনস্টিটিউট যে বক্তব্য দিয়েছে, তাতেও নিশ্চিত নয় বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিনের ভবিষ্যৎ। সোমবার ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি বিবিসি’কে জানিয়েছে, তাদের ওপর ভ্যাকসিন রফতানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
সিরাম ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন বলেছেন, ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর বেরিয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। ভ্যাকসিন রফতানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে তা রফতানির অনুমতিও নেই তাদের কাছে। এ কর্মকর্তার কথায়, সিরাম ইনস্টিটিউট বিদেশে ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যা পেতে কয়েকমাস লেগে যেতে পারে। তাছাড়া, করোনা ভ্যাকসিন রফতানি শুরুর আগেই ভারত সরকারকে ১০ কোটি ডোজ সরবরাহ করার কথা সংস্থাটির। অর্থাৎ, এই মুহূর্তে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও তারা ভ্যাকসিন রফতানি করতে পারবে না।
ভ্যাকসিন পাওয়ার আশায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতেই ভারত থেকে যে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে বলা হচ্ছে, সেটি আসার কথা এই সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই। চুক্তি মোতাবেক প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে আগামী ছয় মাসে মোট তিন কোটি ডোজ পাবে বাংলাদেশ। এর মূল্য হিসেবে রোববার অগ্রিম ৬০০ কোটি টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
এর মধ্যেই সিরাম ইনস্টিটিউট ভ্যাকসিন রফতানি করতে পারবে না এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশ সরকার ঢাকায় দিল্লির হাইকমিশন এবং দিল্লিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। গতকাল সোমবার দুপুরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ভ্যাকসিনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) চুক্তি থাকায় যথাসময়ে ভ্যকাসিন পেতে কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, এইমাত্র ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আমরা যে চুক্তি করেছি, সেখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে। ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে, আমাদের ব্যাপারে না। হাইকমিশন থেকে এটা পরিষ্কার করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও। ভারতের দিক থেকে সুনিশ্চিত কোনো আশ্বাস পাওয়া গেছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা যেহেতু আন্তর্জাতিক চুক্তি, আমরা আশা করি, সেটাকে সম্মান দেখানো হবে। সেই সঙ্গে সকাল থেকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। সব বিষয়ে আমরা আশাবাদী। তারা কেউ নেগেটিভ কিছু বলেননি।
এর আগে, গত শনিবার একই সঙ্গে দু’টি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয় ভারত। এর একটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড, অপরটি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। অক্সফোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে কোভিশিল্ড উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এটি নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য না হলেও ভারতীয়দের আবিষ্কৃত কোভ্যাক্সিনের অনুমোদন নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। কারণ সেটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালই এখনও শেষ হয়নি, নেই সুরক্ষা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্যও।
বিভিন্ন মহলের দাবি, কোভ্যাক্সিনকে তড়িঘড়ি অনুমোদন দিয়ে একপ্রকারে বিপদ ডেকে আনছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে নানা কথা বলে মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করছেন ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা।
রোববার সর্বভারতীয় মেডিক্যাল সংস্থা এইমসের কর্মকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া বলেছেন, ভারতে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচিতে প্রথমে সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড ব্যবহার করা হবে। বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে কোভ্যাক্সিনকে। কোভিশিল্ড ব্যবহারের মধ্যেই কোভ্যাক্সিনের আরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
এদিকে করোনা মহামারিতে লাখো মানুষের মৃত্যু হলেও টিকা নিয়েও এরই মধ্যে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসাও শুরু হয়ে গেছে। এরই মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলো নিজেদের জনগণের জন্য টিকা কিনে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এখন পর্যন্ত কেবল বায়োনটেক-ফাইজারের টিকাই আন্তর্জাতিক অনুমোদন পেয়েছে। অ্যামেরিকা, ক্যানাডা এবং যুক্তরাজ্যে টিকার অনুমোদন মিলেছে, টিকা দেয়াও শুরু হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও আগামি সপ্তাহেই এই টিকার অনুমোদন দেয়ার কথা রয়েছে।
একইসঙ্গে এত টিকা উৎপাদনে সময় লাগবে। ফলে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে যে, ধনী দেশগুলোই আগে নিজেদের জনগণের জন্য টিকা নিশ্চিত করবে। তারপর হয়তো ধীরে ধীরে দরিদ্র দেশগুলোর দিকে নজর দেয়া হবে। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। করোনার টিকা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। ধনী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা তো বটেই, গ্লোবাল ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স- গ্য়াভি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সেপি বার বার বলে আসছে টাকার জন্য যাতে কোনো দেশ টিকা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে ব্যবস্থা করবে।
এই তিন সংস্থা মিলে কোভ্যাক্স নামের একটি প্রকল্পও গ্রহণ করে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০০ কোটি টিকা দরিদ্র দেশগুলোর জন্য কেনার পরিকল্পনা করা হয়। বাংলাদেশও কোভ্যাক্সের আওতায় টিকা পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। কিন্তু এখন অর্থ সংকটে আছে প্রকল্পটি, এখনো কোনো চুক্তিও করতে পারেনি। ভবিষ্যতে আদৌ অর্থ জোগাড় সম্ভব হবে কিনা, তা-ও নিশ্চিত বলতে পারছেন না কেউ।
দাতা সংস্থা অক্সফাম কদিন আগেই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, ধনী দেশগুলো উৎপাদন হওয়ার আগেই সম্ভাব্য ৬১ শতাংশ ভ্যাকসিন কিনে রেখেছে। অথচ এই ধনী দেশগুলোতে বাস করেন বিশ্বের কেবল ১৩ শতাংশ মানুষ। এমনকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একাধিক ভ্যাকসিনও যদি বাজারে আসে, তাহলেও এ অবস্থার পরিবর্তন হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
আট ডিসেম্বর বায়োনটেক ও ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ নেন ৯০ বছরের মার্গারেট।  যুক্তরাজ্যে প্রথম আট লাখ টিকা পাবেন তার মতো প্রবীণ, সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীসহ বাকি বয়স্ক নাগরিকরা।  ফাইজারের কাছে মোট চার কোটি ডোজ টিকার অর্ডার দিয়েছে দেশটি; যার মাধ্যমে দুই ডোজ করে দুই কোটি মানুষের ভ্যাকসিনের নিশ্চয়তা মিলছে।  পাঁচ কোটি ত্রিশ লাখ নাগরিকের সবাইকে টিকা দিতে যুক্তরাজ্যকে নির্ভর করতে হবে অন্য কোম্পানিগুলোর উপরে।
মার্কিন প্রতিষ্ঠান মডার্নার টিকা এখনো অনুমোদন পায়নি। কিন্তু এর খরচ হবে আরো বেশি, প্রতি ডোজ অন্তত ২৫ ডলার। অর্থাৎ, মাথাপিছু ৫০ ডলার। সে হিসেবে এই টিকার জন্য বাংলাদেশের খরচ হবে প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা।
আপাতত বিভিন্ন দেশে অনুমোদন পাওয়া বায়োনটেকের টিকা প্রতি ডোজ ১৯ ডলার ৫০ সেন্ট, অর্থাৎ প্রায় ১৭শ টাকা। প্রতি জনের জন্য দুই ডোজ হিসেব করলে মাথাপিছু খরচ হবে ৩,৪০০ টাকা। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য এই টিকা দিতে হলে খরচ পড়বে কত? প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা! শুধু টিকার খরচ হিসেব করলেই হবে না। এই টিকা পরিবহন ও সংরক্ষণেও বিশেষ প্রক্রিয়ায় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বজায় রাখতে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাংলাদেশের পক্ষে এই ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তাও খুব বাস্তবসম্মত হবে না।
টিকার গবেষণায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগে বায়োনটেক ও ফাইজারের মুল লক্ষ্যই ছিল এই খরচের কয়েকগুণ বাজার থেকে তুলে আনা। বায়োনটেক জার্মান সরকারের সহায়তা নিলেও ফাইজার মার্কিন সরকারের কাছ থেকেও কোনো সহায়তা নিতে চায়নি। বরং নিজেরাই বিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে করোনার টিকা গবেষণায়, যাতে একবার টিকা চলে এলে এর সব মুনাফা প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারে। সে কাজে তারা বেশ সফলই হয়েছে বলা যায়। এদিকে অক্সফোর্ড ও আস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন শুরুতে বেশ এগিয়ে থাকলেও গবেষণা সংক্রান্ত জটিলতায় এখন পিছিয়ে পড়েছে। এই ভ্যাকসিনটির দিকেই মূলত তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দরিদ্র দেশ।
আস্ট্রাজেনেকা তাদের টিকা সর্বনিম্ন মূল্যে বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিল। প্রতি ডোজ কেবল তিন থেকে চার ডলার, অর্থাৎ মাথাপিছু দুই ডোজের জন্য খরচ পড়তো ছয় থেকে আট ডলার। অর্থাৎ, বাংলাদেশের সবাইকে টিকা দিতে খরচ পড়তো কেবল ১১ হাজার কোটি টাকা।
একই সঙ্গে টিকার ফর্মুলা নিজেদের কাছে না রেখে বিশ্বের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভাগাভাগি করায় উৎপাদন ও সরবরাহ করার ক্ষেত্রেও দ্রুততা আনার চেষ্টাও ছিল তাদের। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এরই মধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন উৎপাদন ও সরবরাহে প্রস্তুতও রয়েছে। তাদের সঙ্গে ভ্যাকসিন কেনার কথা চূড়ান্ত করেছিল বাংলাদেশও। বাংলাদেশের অর্থনীতি তবুও পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে অনেকটাই ভালো। আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর অবস্থা কী হবে! এর আগেও ইবোলার মতো অনেক রোগের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন গবেষণা দ্রুতগতিতে এগোয়নি কেবল সেই গবেষণার খরচ আফ্রিকায় ব্যবসা থেকে তুলে আনা সম্ভব হবে না বলে।
বিশেষজ্ঞ, মাঠ পর্যায়ে কাজ করা কর্মী, চিকিৎসক, ভাইরোলজিস্ট, সবাই একটি বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত ছিলেন ‘পরের মহামারিতে’ ভ্যাকসিন দ্রুতই পৌঁছাবে বিশ্বের নানা প্রান্তে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
থাইল্যান্ড গেলেন প্রধানমন্ত্রী
তাপদাহে হিট অ্যালার্টের মেয়াদ আরও বাড়াল আবহাওয়া অফিস
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়াল সরকার
উপজেলায় এমপি মন্ত্রীর সন্তান-স্বজনরা প্রার্থী হলে ব্যবস্থা
সব বিরোধী দলের উপজেলা নির্বাচন বর্জন

আরও খবর