সময় সংবাদ রিপোর্ট:জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের প্রস্তাব দিয়েছেন জোটে থাকা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বুধবার সিলেটে নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠের জনসভায় তিনি এই প্রস্তাব দেন।
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমরা চার নভেম্বর জাতীয় চার নেতার মাজার জিয়ারত করব। এরপর জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যাব। এরপরে ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানাব, এটা আমার প্রস্তাব।’
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘দেশ যখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, তখন উন্নয়নের নৌকা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। উন্নয়নের দুর্নীতিতে তাদের চোখে ছানি পড়েছে। এই ছানি কেটে কীভাবে দেশ এগিয়ে নেবে, এ জন্য এই বয়সে ড. কামাল হোসেন দাঁড়িয়েছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম দাঁড়িয়েছেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন দাঁড়িয়েছেন, রব দাঁড়িয়েছেন, আরও অনেকে দাঁড়িয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শান্তির বাংলাদেশ চাই। আমরা ৭৫ এর মতো ২১ আগস্টের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না।’
ঐক্যফ্রন্ট কেন জরুরি ছিল, তারা কী করবেন, সে বিষয়েও কথা বলেন ডা.জাফরুল্লাহ।
তিনি বলেন, এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে তিন মাসের মধ্যে ওষুধের মূল্য অর্ধেক হবে। মানুষ সুলভ মূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবে। শ্রমিক চিকিৎসা সেবা পাবে, কৃষক চিকিৎসা সেবা পাবে, কৃষক পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবে।’
সিলেটের এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন। আর প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরো পড়ুন :
এবার ওয়াক ওভার নিয়ে কাউকে ক্ষমতায় থাকতে দেব না : মান্না
নয়া দিগন্ত অনলাইন
২৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:৪০
এবার ওয়াক ওভার নিয়ে কাউকে ক্ষমতায় থাকতে দেব না : মান্না – নয়া দিগন্ত
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘আজ আমাদের শপথ নেওয়ার সময়। তাই বলতে চাই এবার কেউ ওয়াক ওভার নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাইলে, সেটি কখনো পূরণ হবে না। ওয়াক ওভার নিয়ে কাউকে ক্ষমতায় থাকতে দেব না। তাই আমাদের সবাইকে লড়াই করতে হবে।’
বুধবার সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রি মাঠে আয়োজিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে এসব কথা বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের আজকের জনসভায় আসতে গিয়ে জনগণকে পথে পথে আটকে দিয়েছে। এর আগে ২৩ তারিখ আমাদের জনসভা করতে অনুমতি দেয়নি। মনে করেছিল গায়ের জোরে আমাদের জনসভা আটকে দেবে। কিন্তু পারেনি আজ আমরা জনসভা করছি।’
সারা দেশে ভোট ডাকাতি করলেও সরকার সিলেটে ভোট ডাকাতি করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেছেন মান্না। তিনি বলেন, ‘বতমান সরকার চোরের মতো ডাকাতের মতো ভোট চুরি করে নিয়ে গেছে। কিন্তু সিলেটে পারেনি। সিলেটের জনগণ তাদের ভোট দিয়ে জনগণের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছে।’
সরকারকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘এখনো সময় আছে আমাদের সাথে কথা বলেন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। না হলে কীভাবে ক্ষমতা থেকে নামাতে হয় তা আমরা জানি। আমরা একদিনের ভোটের অধিকার বা গণতন্ত্র চাই না। প্রতিদিন গণতন্ত্র চাই। এ মঞ্চে সব দলের লোক আসবে, এক স্বাধীনতাবিরোধীরা ছাড়া।’
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তাঁকে একটা সাজানো মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। আমাদের আগামী দিনের জন্য শপথ নিতে হবে কীভাবে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা যায়। খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলার ব্যবস্থা করেছে সরকার ৷ তিনি এখন হাঁটতে চলতেও পারেন না।’
গত সোমবার সিলেট মহানগর পুলিশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে এই সমাবেশের অনুমতি দেয়। এর পরই চলে সভার প্রস্তুতি। ২৩ তারিখের পরিবর্তে একদিন পিছিয়ে আজ ২৪ অক্টোবর এই সমাবেশ করছে ঐক্যফ্রন্ট।
নির্বাচনের আগে সারা দেশে সভা-সমাবেশ করে দাবি আদায়ের আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা ও নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার অংশ হিসেবে এই সমাবেশ করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সে জন্য সিলেট বিভাগের জেলাগুলো থেকে কর্মসূচি শুরু হলো।
আরো পড়ুন : পথে বাঁধা সত্ত্বেও লোকে লোকারণ্য সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:২৯
সংসদ ভেঙে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভা শুরু হয়েছে। নগরীর রেজিস্ট্রি মাঠে বুধবার বেলা ২টার দিকে কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে এ সভার কর্যক্রম শুরু হয়।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন ড. কামাল হোসেন। আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ জনসভার প্রধান বক্তা।
বিএনপিকে সাথে নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেন কামাল হোসেন। এই জোটে বিএনপি ও গণফোরামের সাথে আছে জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য। সাত দফা দাবিতে জনমত গঠনে এটাই তাদের প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ জনসভার প্রথম বক্তা ছিলেন জেলা সভাপতি আবু কাহের চৌধুরী শামীম।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, মনিরুল হক চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির আসম আবদুর রব, আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোঃ মনসুর ও মোস্তফা মহসিন মন্টু উপস্থিত রয়েছেন এ জনসভায়।
যে মাঠে এই জনসভা হচ্ছে, সেখানে খুব বেশি মানুষের জড়ো হওয়ার জায়গা নেই। ১৭টি শর্তে ফ্রন্টকে এখানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। মাঠে জায়গা না পেয়ে নেতাকর্মীদের ভিড় পৌঁছেছে রাস্তায়। তাতে আশপাশের এলাকায় তৈরি হয়েছে যানজট।
জনসভা মঞ্চের ব্যানারে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন; খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৭ দফা দাবির কথা লেখা আছে।
মঞ্চের পশ্চিম দিকে রেজিস্ট্রি ভবনে টানানো হয়েছে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের রায় বাতিলের দাবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানারক চোখে পড়েছে।
এছাড়া শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, সিলেটের নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর ছবি সম্বলিত ব্যানারও দেখা গেছে। এ সমাবেশ ঘিরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সড়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নতুন এই জোটের নেতা কামাল হোসেন বলেছেন, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া কিংবা রাষ্ট্রীয় কোনো পদ পাওয়ার ইচ্ছা তার নেই। ‘গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুমাত্রিক সমাজ’ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাওয়াই তার লক্ষ্য। বিএনপির সাথে জোট করলেও জামায়াতে ইসলামী ও তারেক রহমানের সাথে ঐক্যফ্রন্টের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন কামাল।