আসনটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবগঞ্জ পৌরসভা ছাড়াও কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হলেও তাঁদের অনেকে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে পারেননি। তবে শিবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক পরপর দুবার আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়ে পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এ কারণে তিনি এবার প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে পুরো আসনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
সাবেক এমপি মোজাফফর হোসেনের ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মোবাশ্বের হোসেন স্বরাজ বাবার ইমেজ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাইব। এ কারণে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ এ ছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় এক যুগ ধরে প্রচার চালাচ্ছেন আকরাম হোসেন নামের একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক কারণে তিনি ঢাকায় অবস্থান করলেও এলাকার লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘শরিক দল জাতীয় পার্টিকে মনোনয়ন দিলে আমরা এবার আপত্তি জানাব। কারণ, জিন্নাহ আমাদের ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়ে আমাদের মূল্যায়ন ও সম্মান করেন না। এবার আমাদের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মানিক। তিনি এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হলে ৫০ বছর আগে হারানো আসন ফিরে পাওয়া যাবে।’
তবে এমপি জিন্নাহ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আমি প্রার্থী হব। বিজয়ী হলে আমার অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করব।’ আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জিন্নাহ বলেন, ‘আমার চেয়ে তাঁরাই বেশি দলীয়করণ করেছেন। তিনি যা বলেছেন, সেটা ব্যক্তিগত মন্তব্য। নির্বাচন জোটগতভাবে হলে আওয়ামী লীগের সহযোগিতার বিষয়টি তখন দেখা যাবে। জোটগত নির্বাচন না হলে তাঁদের সহযোগিতা পাব, এমন আশা করি না।’
বিএনপির পক্ষ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট এ কে এম হাফিজুর রহমান এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলমের নাম শোনা গেলেও তাঁরা এখনো মাঠে নামেননি। শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর শাহে আলম বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। এ কারণে আমরা মাঠে নাই। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জামানত হারাবে।’
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা শাহাদাতুজ্জামান মাঠে নেমেছেন অনেক আগেই। সাংগঠনিকভাবে প্রচার করতে গিয়ে পুলিশি ঝামেলার কারণে তিনি ছাড়াও তাঁর দলের কর্মীরা নানা কৌশলে প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছি। সেই সময় এই এলাকার অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে আমার হাতে। কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি আমাকে স্পর্শ করেনি। দল ইতিমধ্যে আমাকে মনোনয়নের সবুজ সংকেত দিয়েছে। নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলে, আশা করি আগামী নির্বাচনে জনগণ আমার পক্ষে রায় দেবে।’