সময় সংবাদ রিপোর্ট : চলতি বছরের জুনের শেষ সপ্তাহে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সময় পেলে দিনক্ষণ নির্ধারিত হবে। তবে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসাবে পদ্মা সেতুর টোল অপারেটর নিয়োগ চূড়ান্ত। তারা এখন টোল আদায়ের যন্ত্রপাতি আমদানি ও স্থাপনের কাজে ব্যস্ত। গতকাল সেতু কর্তৃপক্ষের বোর্ডসভায় তা অবহিত করা হয়। একইভাবে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান টানেলের অপারেটর নিয়োগের বিষয়টিও বোর্ডসভাকে অবহিত করা হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। উপস্থিত ছিলেন সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন প্রমুখ।সভাসূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু টানেল রক্ষণাবেক্ষণে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডকে (সিসিসিসি) দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এ প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের প্রস্তাব ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হয়েছে প্রস্তাবটি। টানেল নির্মাণের কাজে যুক্ত সিসিসিসিজিটুজি ভিত্তিতে নির্মাণকাজ করছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই টানেল যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি টানেল রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের কাজে আগ্রহ দেখায়। তাদের দাবি, স্ট্রাকচারাল হেলথ মনিটরিং সিস্টেম চালু করবে। এর ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টানেলের বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন করে রক্ষণাবেক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তা ছাড়া টোল আদায়ে ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন (ইটিসি) সিস্টেম চালুর কথা গতকাল বোর্ডসভাকে অবহিত করা হয়েছে। টানেলের রক্ষণাবেক্ষণে অপারেটর সিসিসিসির মাধ্যমে দেশীয় জনবল সমন্বয়ে গঠিত টিমকে টানেল রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। ওই টিম ভবিষ্যতে টানেলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেবে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মোট জনবল রয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৯ জন।
এদিকে পদ্মা সেতুর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন যৌথভাবে পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজ করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) ঢাকাস্থ দূতাবাসের মাধ্যমে সেতু পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের জন্য অপারেটর হিসেবে নিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে। ২০২০ সালের ১২ আগস্ট অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগের নীতিগত অনুমোদন দেয়। সেতু রক্ষণাবেক্ষণের সুবিধার্থে চায়না মেজর ব্রিজ ও কেইসি যৌথভাবে স্বাক্ষর করে গত বছরের ২১ মে কারিগরি প্রস্তাব দিয়েছে। এরপর ১৯ আগস্ট এর প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে কারিগরি কমিটি। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২১ অক্টোবর সংশোধিত প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ রকম নানা ধাপশেষে এ বছরের ১৫ মার্চ নেগোসিয়েশন সম্পন্ন করে। তাদের দাখিলকৃত দর ১২১৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। নেগোসিয়েশন শেষে তা দাঁড়ায় ৬৯২ কোটি টাকা। পরে গত ৭ এপ্রিল প্রস্তাবটি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। এখন মাঠপর্যায়ে তারা কার্যক্রম শুরু করেছে বলে গতকাল বোর্ডসভায় অবহিত করা হয়।