Header Border

ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল) ২৪.৮৯°সে

প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহে মাঠে নেমেছে পুলিশ

সময় সংবাদ রিপোর্টঃ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহে মাঠে নেমেছে পুলিশ। জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। গত সপ্তাহ থেকে সারাদেশে এই সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সেখানে সম্ভাব্য প্রার্থীর অপরাধনামা বা পুলিশ রেকর্ড ও জীবনবৃত্তান্তসহ ১১টি বিষয়ের তথ্য ছক আকারে প্রত্যেক থানা পুলিশকে পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা, প্রার্থীর ধরন চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নেবে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর গতকাল বলেন, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার এবং বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আমাদের ফোর্সের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি।

পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনী নিরাপত্তা কৌশল নির্ধারণে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। এই তথ্য থেকে কোন এলাকায় কতটুকু নিরাপত্তা প্রয়োজন, কোন প্রার্থী বা তার অনুসারীদের কারণে সহিংসতার ঝুঁকি বেশি, তা আগে থেকেই জানা যাবে। তথ্যের ভিত্তিতে প্রার্থীর নিরাপত্তা ও নির্বাচনী এলাকার নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশ পরিকল্পনা তৈরি করবে। উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচনের আগে থেকেই সব ধরনের সহিংসতা, সন্ত্রাস বা অনিয়ম প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রত্যেকটি থানায় পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ থানা এলাকার সম্ভাব্য প্রার্থীদের তথ্যাবলি ‘ছক’ আকারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলো। বিষয়টি অতি জরুরি। এতে প্রার্থীর দলীয় পদ-পদবি, পিসি/পিআর (অতীত অপরাধ ও পুলিশ রেকর্ড), শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ বিস্তারিত পরিচয় থাকতে হবে। চিঠিতে ছক আকারে ১১টি বিষয়ে তথ্য নিয়ে সদর দপ্তরের পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রণ প্রধান শর্ত। একটির সঙ্গে আরেকটির যোগসূত্র আছে। নির্বাচন সহিংসতামুক্ত রাখতে সবার আগে মব ভায়োলেন্স নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্র পুলিশের হেফাজতে নিতে হবে। পুলিশের

মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব রয়েছে। সেই সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে উঠে ফোর্সগুলোকে একটিভ করতে হবে। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে রাজনৈতিক দলগুলোর আলাপ আলোচনা করা দরকার। তিনি আরও বলেন, প্রার্থী এবং তার সহযোগীদের বৈশিষ্ট্যসংক্রান্ত তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংগ্রহে থাকলে সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।

পুলিশের একাধিক থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে প্রতিটি থানায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা অপরাধনামা, অতীতের মামলা, চলমান মামলার অবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রার্থীর রাজনৈতিক ভূমিকা, সামাজিক প্রভাব, শৃঙ্খলা ভঙ্গের রেকর্ড, সহিংসতা উসকে দেওয়ার ইতিহাস, চাঁদাবাজির অভিযোগ, স্থানীয় বিরোধসহ ১১ ধরনের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, একেক দিন একেক বিভাগে নির্বাচন হলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো মাসল পাওয়ার ব্যবহারের সুযোগ পাবে না। নির্বাচনের ক্ষেত্রে অস্ত্রবাজরা টাইট হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রগুলো উদ্ধারের জন্য আরও জোরদার চেষ্টা চালাতে হবে। অস্ত্র উদ্ধারে ব্যর্থ হলে নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়তে পারে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহ একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দফায় দফায় এসব তথ্য সংগ্রহের কাজ করা হয়। সম্ভাব্য প্রার্থীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহযোগী বা দলীয় কর্মীদের অপরাধ কর্মকা-ের তথ্যও তালিকাভুক্ত করা হয়ে থাকে। এসব তথ্য থানা পুলিশ এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। এসব তথ্যের ভিত্তিতেই আসনভিত্তিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়ে থাকে।

সূত্রমতে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই কাজ শুরু করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই নির্বাচনের সময় কোথায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করতে হবে, কোন এলাকায় মোবাইল টিম বা র?্যাব-পুলিশের টহল জোরদার করতে হবে তা নির্ধারণ করা হবে। এ ছাড়া প্রার্থীদের নিরাপত্তায় কোনো ঝুঁকি রয়েছে কিনা, কাকে কতটুকু নিরাপত্তা দিতে হবে, মাঠ পুলিশ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সদর দপ্তর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই ও অন্যান্য সংস্থাও নির্বাচনী এলাকার প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহের শুরু করেছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

জাপার নতুন মহাসচিব শামীম হায়দার
মতিঝিল থেকে ২৮ হাজার ইয়াবাসহ শীর্ষ মাদক কারবারি গ্রেফতার
সরকার পতনের ছক আকছে আওয়ামী লীগ !
সব বিভাগে টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস
৪৪তম বিসিএসে ৪৩০টি পদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও এতে সায় দেয়নি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলের ৩০ হাজার ৮০৯ ভবনের ক্ষতি

আরও খবর