সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্ট ঃ সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি জানুয়ারির শেষদিকে অর্থাৎ ২১ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যেই দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা আসবে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকা আমদানি করা হচ্ছে। ভ্যাকসিন পেতে নির্ধারিত অ্যাপের মাধ্যমে আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে নিবন্ধন শুরু হবে। আর দেশে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হবে ফেব্রম্নয়ারির প্রথম সপ্তাহেই। গতকাল বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে করোনা ভ্যাকসিন বিষয়ে ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এই তথ্য জানান। এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রিসভার বৈঠকের ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম একই তথ্য জানান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশে আসবে। এর দুই দিন পর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ওয়ার হাউস থেকে তা বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রম্নয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে মাঠ পর্যায়ে টিকা দেওয়া শুরু হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের অগ্রাধিকার তালিকার বাইরের সাধারণ মানুষকে নিবন্ধন করা হবে। এজন্য আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে নিবন্ধন শুরু হবে। নিবন্ধন অনলাইনেও করা যাবে। অনলাইনের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। জেলা-উপজেলায় ভ্যাকসিন সেন্টারেও এ নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর বয়স যাচাই করা হবে। একই সঙ্গে ভাকসিন নেওয়ার পর সনদ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আলাদা টিম গঠন করা হচ্ছে। এর বাইরে কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। সংবাদ সম্মেলনে বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ হ পৃষ্ঠা ২ কলাম ৫ অপারেশনাল প্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক বলেন, ‘আগামী ২৭ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে টিকা পৌঁছবে। পাওয়ার পর কয়েকটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকদের টিকা দেওয়া হবে। এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ ফেব্রম্নয়ারির প্রথম সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ের টিকা দেওয়া শুরু হবে।’ টিকা বিতরণ পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে এবিএম খুরশীদ আলম আরও বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার নতুন তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ডোজ দেওয়ার দুই মাস পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে। সে কারণে প্রথম চালানে পাওয়া টিকা প্রথম মাসেই একসঙ্গে ৫০ লাখ মানুষকে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এর আগে জানানো হয়েছিল, প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। সে হিসাবে প্রথমে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু গতকাল নতুন নিয়ম জানার পর পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রসঙ্গত, অক্সফোর্ডের ৩ কোটি ডোজ টিকা পেতে গত নভেম্বরে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। দেশে সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকার ‘ডিস্ট্রিবিউটর’ হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা সরবরাহ করবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা ও অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
নাঈমুর রহমান,সময় সংবাদ লাইভ।