Header Border

ঢাকা, বুধবার, ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ২৯.৯৬°সে

মতবিরোধ আছে আওয়ামী লীগে, নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে বিএনপি

সময় সংবাদ রিপোর্টঃ  গাজীপুর-৪ আসনটি কাপাসিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। জাতীয় চার নেতার অন্যতম দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের জন্মস্থান হিসেবে এ উপজেলার বিশেষ পরিচিতি রয়েছে সারাদেশে। এ ছাড়া দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রভাবশালী প্রয়াত নেতা হান্নান শাহর জন্মও এ উপজেলায়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কাপাসিয়ায় সরব আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশায় সক্রিয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। অন্যদিকে এখনো নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে বিএনপি। তবে ভেতরে ভেতরে নির্বাচনী মাঠ গোছাচ্ছেন দলটির নেতারা। এ ছাড়া মাঠে রয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিও।

গাজীপুর-৪ আসনে ১৯৯১ সালে বিএনপির প্রয়াত নেতা হান্নান শাহ আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি পাটমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে এ আসন থেকে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আফসার উদ্দিন আহমদ। ২০০১ সালে তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে তানজিম আহমদ সোহেল তাজ এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালেও তিনি এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

পরে দলের সঙ্গে মতবিরোধে তিনি প্রথমে প্রতিমন্ত্রী, পরে সংসদ সদস্য পথ থেকে পদত্যাগ করলে ২০১২ সালে শূন্য হওয়া আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তারই বড় বোন সিমিন হোসেন রিমি। ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বার ও ২০১৮ সালে তৃতীয়বার তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সিমিন হোসেন রিমিকে ২০২২ সালে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত করা হয়।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিমিন হোসেন রিমি সংসদ সদস্য হওয়ার পর দলের উপজেলা সভাপতি বানানো হয় সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি (শহীদুল্লাহ) দলের বিভিন্ন ইউনিটে তার লোকজনকে পদে আনেন। দলের অনেক ত্যাগী কর্মীরা থাকেন উপেক্ষিত।

এমপি সিমিন হোসেন রিমির নেতৃত্বে শহীদুল্লাহ ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেন আওয়ামী লীগে। এ কারণে এমপি ও শহীদুল্লাহর বলয়ের বাহিরে আরও একটি বলয় তৈরি হয়। এ বলয়টি রাজনীতির মাঠে রিমির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নিলেও তাদের অনুসারীর সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সে বলয়ে আছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি আলম আহমেদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমানত হোসেন খান। তৃণমূলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীকে দীর্ঘদিন ধরে সংগঠিত করে রেখেছেন তারা।

২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোতাহার মোল্লাকে হারতে হয়েছিল বিএনপির প্রার্থীর কাছে। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দলীয় কোন্দলের কারণেই এ হার দেখতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে। অবশ্য ২০২২ সালে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শহীদুল্লাহকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পর থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দিয়ে চলছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমানত হোসেন খান। আলম আহমেদ একাদশ সংসদ নির্বাচনেও এ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

দল মনোনয়ন দিলে প্রার্থী হবেন জানিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের উপদেষ্টা আলম আহমেদ বলেন, আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। আমাদের চাওয়া হচ্ছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যেন ক্ষমতায় থাকে। নৌকা যার, তার হয়েই আমরা কাজ করি সবসময়। বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করে সব অপচেষ্টার জবাব দিতে আমরা কাপাসিয়ার লোকজন প্রস্তুত। এতে কে কী বলল তাতে আমরা বিচলিত নই।

কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমানত হোসেন খান বলেন, গ্রুপিং বা কোন্দল যাই বলুন না কেন জাতীয় নির্বাচনে এসব বিষয় তেমন কাজ করে না। আমরা নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আছি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করব।

সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি বলেন, আমার আসনে তৃণমূল হতে ওপর পর্যন্ত কোথাও কোনো দলীয় কোন্দল নেই। নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হয়। এলাকার উন্নয়নে সপ্তাহের বেশির ভাগ সময় এলাকায় থাকি। একসময়ের অবহেলিত এ উপজেলার সর্বস্তরে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এ উপজেলায় মা ও শিশুমৃত্যুর হার শূন্যের কোটায় এসেছে। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতায় আবারও এ আসন থেকে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী।

একসময়ে এ আসনের বিএনপির ছিলেন সাবেক মন্ত্রী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত হান্নান শাহ। তার মৃত্যুর পর দলের হাল ধরেছেন তার ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান। তিনি গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। শাহ রিয়াজুল হান্নান আমাদের সময়কে বলেন, আমরা তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে একদফার আন্দোলনে আছি। নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দল নির্বাচনে গেলে আর আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি এ আসন থেকে নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছি।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে এ আসনে নির্বাচনের জন্য তৃণমূলে গণসংযোগ করছেন গণতন্ত্রী পার্টির হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ডা. শহিদুল্লাহ শিকদার এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মানবেন্দ্র দেব।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
যেভাবে হজ পালন করবেন
দুবাইয়ে গোপন সম্পদের পাহাড়, তালিকায় ৩৯৪ বাংলাদেশি
সড়কে মৃত্যুর মিছিল:দশ বছরে প্রাণহানি ৭৮ হাজার,দায় নিচ্ছে না কেউ
প্রথম ধাপে উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন যারা
চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত

আরও খবর