Header Border

ঢাকা, রবিবার, ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল) ২৬.৭২°সে

মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুতে ফেরির পঞ্চম ধাক্কা ॥ নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা?

*সময় সংবাদ লাইভ  রিপোর্টঃ গতকাল শুক্রবার সকালেবাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারমূলক মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর দশ নম্বর পিলারে একটি ফেরি ধাক্কা খেয়েছে। গত দু মাসে এ নিয়ে পঞ্চম বারের মতো সেতুর পিলারে ফেরির আঘাতের ঘটনা ঘটলো।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম সময় সংবাদ লাইভকে বলেছেন, ” ফেরির ধাক্কা সত্ত্বেও সেতুর স্থাপনা নিয়ে উদ্বেগের কোন কারণ নেই। এতে সেতুর ক্ষতির কোন সম্ভাবনাই নেই।”
মিস্টার ইসলাম কয়েকদিন আগে বলেছিলেন সেতু নির্মাণের আগেই এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করা হয়েছে এবং চার হাজার টনের নৌযান এসে ধাক্কা দিলেও সেতুর কোন ক্ষতি হবে না।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি জানিয়েছে, পদ্মা সেতু যান চলাচলের উপযোগী হতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত লেগে যাবে।
অন্য সব আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে আগামী বছরের জুন নাগাদ সেতু খুলে দেয়ার চিন্তা আছে সরকারের।
সেতুর ওপর এখন যান চলাচলের সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে কাকলী নামক ফেরিটি সেতুর দশ নম্বর পিলারে আঘাত করে। মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে ফেরিটি মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাচ্ছিলো।
এ ঘটনার পরপরই সেতু এলাকায় গেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী সময় সংবাদ লাইভকে বলেন, ” সেতু সলিড একটি স্থাপনা। এতে সেতুর কোন ক্ষতি হবে না। তবে এ ধরণের ঘটনা একেবারেই অনাকাক্সিক্ষত। এছাড়া ফেরিগুলোর অনেক ক্ষতি হচ্ছে। জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টিও আছে। আজই (শুক্রবার) এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করতে বৈঠক হবে।”এর আগে গত ৯ই অগাস্ট মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে ছেড়ে আসা একটি ফেরি পদ্মা সেতুর দশ নাম্বার পিলারে আঘাত করেছিলো।
পরদিন সিদ্ধান্ত হয়েছিলো যে পদ্মা নদীতে স্রোতের তীব্রতা না কমে আসা পর্যন্ত মাওয়ায় নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে ভারি যানবাহনবাহী ফেরি চলাচল করতে পারবে না।
এর আগে গত মাসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্য দুটি ফেরি, সেতুর ১৬ ও ১৭ নম্বর পিলারে আঘাত করেছিল। সবগুলো ঘটনায়ই ফেরির সংশ্লিষ্টদের চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের পর আটক করে তদন্ত করছে কর্তৃপক্ষ।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী তখন বলেছিলেন পদ্মা নদীতে এখন তীব্র স্রোত এবং সেতুর পিলার ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজের স্থাপনার জন্য স্রোতের চরিত্রেও পরিবর্তন এসেছে।
” স্রোতের ঘুর্ণি পরিবর্তিত হচ্ছে। পদ্মা এমনিতেই আনপ্রেডিক্টেবল নদী। ফেরিগুলো টার্ন নিয়ে সেতুর পিলারের মাঝখান দিয়ে আসা দুরূহ হয়ে গেছে,” বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, জুলাইয়ে সেতুর পিলারে আঘাতের ঘটনার পর ফেরির রুট পরিবর্তনের প্রস্তাব নাকচ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষ আশা করছে আগামী এক বছরের মধ্যেই সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হবে এবং সে কারণে নতুন ফেরি রুট করলে তাতে অর্থের বিরাট অপচয় ঘটবে বলে মনে করছে তারা।
তবে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বুধবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন পদ্মা সেতুর পিলারে বারবার ফেরির ধাক্কা চালকের অদক্ষতা, নাকি নাশকতা সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
তিনি বলেন, ” ফেরির ধাক্কা বারবার কেন? একবার নয়, দুবার নয়, চার-চারবার। অদক্ষতার জন্য চালককে শাস্তি দিলেন। চাকরিচ্যুত করলেন। চালকের অদক্ষতা, নাকি নাশকতা, তা খতিয়ে দেখতে হবে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই বারবার এ ঘটনা কেন ঘটবে? আমাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। এই প্রকল্প নিয়ে ষড়যন্ত্র ছিল, তা এখনো শেষ হয়নি”।
সংরক্ষিত এলাকা থেকে ১১ ভারতীয় নাগরিক আটক
পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড এলাকা থেকে গত দেড় বছরে বিভিন্ন সময়ে অন্তত এগারজন ভারতীয়কে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে নিয়মিত টহলরত সেনা সদস্যরা।
গত জুনে রূপসা রায় ও বিজয় কুমার রায় নামে দুজন ভারতীয় নাগরিককে সেতুর সংরক্ষিত এলাকা থেকে সেনা সদস্যরা আটক করে।
কিন্তু এসব ভারতীয়রা পদ্মা সেতু এলাকায় কেন এসেছিলো বা কি করছিলো সে সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান।
জাজিরা থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেও তাদের কাছ থেকে কোন তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান সময় সংবাদ লাইভকে বলছেন আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে সর্বশেষ গত ২৫শে জুন জাজিরার নাওডোবা এলাকা থেকে রূপসা রায় নামে এক ব্যক্তিকে আটকের পর জানা যায় তিনি গুজরাটের অধিবাসী। তার দুদিন আগে আটক হওয়া বিজয় কুমার রায়ের বাড়ি ভারতের বিহারে।
তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও সেতু নির্মাণের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা বলছেন ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম একজন ভারতীয় আটক হয়েছিলো। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিহার থেকে আসা টুনা রায়, ওড়িশার বীরু মণ্ডল, বিহারের সোনু সিংসহ মোট এগার জনকে আটক করা হয়েছে।
এদের অনেকেই উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরার সময় সেনা সদস্যরা আটক করেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
তবে সেতুর প্রকল্প পরিচালক বলছেন এসব বিষয়ে নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই কারণ তারা মনে করে সেতু এলাকায় নিরাপত্তার জন্য কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

মতিঝিল থেকে ২৮ হাজার ইয়াবাসহ শীর্ষ মাদক কারবারি গ্রেফতার
সরকার পতনের ছক আকছে আওয়ামী লীগ !
সব বিভাগে টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস
৪৪তম বিসিএসে ৪৩০টি পদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও এতে সায় দেয়নি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলের ৩০ হাজার ৮০৯ ভবনের ক্ষতি
সাবেক ৩ সিইসির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ

আরও খবর