Header Border

ঢাকা, সোমবার, ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল) ২৫.৩৭°সে

সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউনে কলকারখানা খোলার প্রতিবাদ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের

আলমগীর পারভেজ : আজ ১ আগস্ট রোববার সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউনের মধ্যে থেকে রফতানিমুখী সকল শিল্প-কলকারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণার প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ। গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়।
সংগঠনটির সভাপতি হাবিবুল্লাহ বাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বিবৃতিতে বলেন, করোনার উচ্চ সংক্রমণের কারণে পরীক্ষা বিবেচনায় প্রতি তিন জনে একজন শনাক্ত হচ্ছেন এবং প্রতিদিন দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটছে; আর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বিবেচনায় নিলে তা দ্বিগুণের বেশি। এমতাবস্থায় চলমান লকডাউন আরও ১০ দিন বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রস্তাবের পরও সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী সকল শিল্প-কলকারখানা খুলে দেয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তারা আরও বলেন, তিন দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে জানানো হয়, ৫ আগস্টের আগে শিল্প-কলকারখানা চালু হবে না। এরপরই মালিকরা সরকারের বিধিনিষেধ ও আইনকে তোয়াক্কা না করে জানিয়ে দেন ১ আগস্টের মধ্যে কারখানা খুলে দেয়া না হলে ‘লে-অফ’ ঘোষণা করা হবে। মালিকদের এমন ঘোষণায় আইন অমান্য করার কারণে সরকারকে যেখানে কঠোর হওয়ার কথা, সেখানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ছাঁটাই, লে-অফ না করার অনুরোধ জানান। অথচ নিতান্ত পেটের দায়ে জীবিকার খোঁজে রাস্তায় নামা শ্রমিকদের জরিমানা ও শাস্তি দিতে সরকার পিছপা হয়নি।
তারা বলেন, শ্রেণিবিভক্ত এই রাষ্ট্রে আবারও এ ঘটনায় প্রমাণ হয়- সরকারের কাছে মানুষের জীবনের চেয়ে মালিকদের স্বার্থরক্ষাই বড়! গার্মেন্টস মালিকরা ঈদের আগে শ্রমিকদের সর্বোচ্চ খাটিয়ে ছুটি দেন ঈদের আগের দিন। সেই সময়ই অনেক মালিক ২৭/৩১ তারিখের মধ্যে কারখানায় কাজে যোগ দেয়ার কথা শ্রমিকদের জানিয়ে দেন। এমনকি অনেক মালিক শ্রমিকদের ঈদ বোনাসও পরিশোধ করেননি।
বিবৃতিতে বলা হয়, মালিকরা শ্রমিকদের মজুরি বোনাস পরিশোধে বারবার সরকারের কাছে প্রণোদনা নিচ্ছেন। ঈদের ছুটি বাদ দিলে মাত্র এক সপ্তাহের কারখানা বন্ধের কথা বললে মালিকরা রফতানি আদেশ তথা বিদেশের বাজার হাতছাড়া হওয়া এবং লোকসানের কথা সামনে আনেন। যদি এত রফতানি অর্ডার থেকে থাকে তাহলে শ্রমিকদের মজুরি বোনাস পরিশোধের সময় কেন বারবার লোকসানের অজুহাত তুলে ধরা হয়।
গত ২৩ জুলাই থেকে সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশ পথে যাত্রী পরিবহণ বন্ধ। জীবিকা রক্ষায় ২২ জুলাই হতেই অনেক নর-নারী স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই দ্বিগুণ/তিনগুণ ভাড়া দিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ সহ্য করে কর্মস্থলে ফিরতে থাকে। আর ১ আগস্ট থেকে গার্মেন্টসহ শিল্প কারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণায় গত রাত থেকেই শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে, রিকশা-ভ্যানে, ট্রাকে, প্রাইভেট গাড়িতে করে রাজধানীমুখী শ্রমিকদের বানের জলের মতো জনস্রোত শুরু হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের হাসেম ফুডের কারখানায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা আর কারখানা খোলার নামে শ্রমিকের জীবিকা নিয়ে রাষ্ট্র ও মালিকদের এই প্রহসন কোনো অংশেই কম নয়। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই বিশেষ করে গার্মেন্টস-শিল্পের মালিকরা শ্রমিকদের জীবিকাকে পুঁজি করে শ্রমিকদের জীবন নিয়ে তামাশা করেছে।
একই সঙ্গে সরকার ও মালিকদের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তে কারণে শ্রমিকদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ গণপরিবহন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত না করে ১ আগস্ট থেকে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান। পাশাপাশি সরকার ও মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও নির্মম শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সকল শ্রমিক ও সংগঠনগুলোকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

মতিঝিল থেকে ২৮ হাজার ইয়াবাসহ শীর্ষ মাদক কারবারি গ্রেফতার
সরকার পতনের ছক আকছে আওয়ামী লীগ !
সব বিভাগে টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস
৪৪তম বিসিএসে ৪৩০টি পদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলেও এতে সায় দেয়নি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলের ৩০ হাজার ৮০৯ ভবনের ক্ষতি
সাবেক ৩ সিইসির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ

আরও খবর