সময় সংবাদ রিপোর্টঃ ভোট বন্ধ করে দেওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের মতো অনিয়মের অভিযোগ পেলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণও বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা।
তিনি বলেছেন, অনিয়ম হলে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের মতো জাতীয় নির্বাচনও বন্ধ করে দেব। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে যা প্রয়োজন হবে, আমরা সব ব্যবস্থা নেব।
বুধবার (২২ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের একটাই মেসেজ (বার্তা); জাতীয় নির্বাচনে ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীকে কোনো রকম বাধা ছাড়াই ভোট দিতে পারবেন। আমরা সেই নিশ্চয়তা দিচ্ছি। গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনে যেমন ভোট বন্ধ করে দিয়েছি, জাতীয় নির্বাচনেও অনিয়ম হলে ভোট বন্ধ করে দেব।’
নির্বাচনে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চলতি বছর পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। জাতীয় নির্বাচনেও সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত আছে। সামনে কী হবে তা এখনই বলতে পারব না; তবে আমাদের ইচ্ছা আছে।’
দাতা সংস্থাগুলোর কোনো সহায়তা জাতীয় নির্বাচনে নেবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি রাশেদা বলেন, ‘সে রকম যদি হয়, আমাদের তো নিতে অসুবিধা নেই। তবে কে কী দেবে বা কীভাবে হবে, সেটা আগে দেখতে হবে।’
সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে কী পদক্ষেপ রয়েছে কমিশনের- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আস্থার বিষয়টি তো মানসিক। কে কীভাবে আস্থা পাবে, তা তো আমরা বলতে পারব না। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর এমন কোনো কাজ করিনি যে কেউ আস্থায় আসবে না। গাইবান্ধার উপনির্বাচনে সে প্রমাণ দিয়েছি।’
গত বছরের ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণে ব্যাপক অনিয়ম দেখে ৫০টি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তাও একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেন। পরে ভোটগ্রহণের যৌক্তিকতা না থাকায় পুরো নির্বাচন বন্ধ করে দেয় ইসি।
এরপর গঠিত তদন্ত কমিটি ৬৮৫ জনের শুনানি নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পায় ওই ৫১ কেন্দ্রে। এ ছাড়া অবশিষ্ট কেন্দ্রগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেও অনিয়মের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। পরে সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গাইবান্ধার একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশের পাঁচজন উপপরিদর্শক (এসআই), নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ১৩৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ বিভিন্ন শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে গত ৪ জানুয়ারি নতুন করে ওই উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।